
রমজানে ডায়াবেটিস রোগীরা অবশ্যই রোজা রাখতে পারবেন, তবে কিছু বিষয়ে সচেতন থাকা জরুরি। কারণ অনেক সময় রোজা রাখতে গিয়ে রক্তে চিনির মাত্রা একেবারেই কমে যায়। এতে অচেতন বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে পারে, যাকে হাইপো বা হাইপোগ্লাইসিমিয়া বলা হয়। আবার রক্তে চিনির মাত্রা খুব বেশি হয়ে গেলে হাইপারগ্লাইসিমিয়া হতে পারে। তখন অবসান, মাথা ঘোরা, মাথা ব্যথা, ঝাপসা দৃষ্টি ইত্যাদি সমস্যার তৈরি হতে পারে। জেনে নিন গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরামর্শ।
- সেন্টার ফর ক্লিনিকাল এক্সিলে অ্যান্ড রিসার্চের ফ্যামিলি মেডিসিন চিকিৎসক ডা. মো. রাশীদ মুজাহিদ জানান, রোজার সময় ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে ওষুধের ডোজ সমন্বয় করে নিতে হবে। কারণ অন্য সময়ের তুলনায় এ সময় মুখে খাওয়ার ওষুধ বা ইনসুলিনের ডোজ কিছুটা কমিয়ে আনতে হয়। সকালের ওষুধ ইফতারে আর রাতের ওষুধ সাহরিতে খেতে বলা হয়, ইনসুলিনের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম। কিছু ইনসুলিন আছে যেগুলো দীর্ঘমেয়াদে কাজ করে। রক্তে সুগারের পরিমাণ কমে যাওয়ার ভয় কম থাকে এমন ইনসুলিন ডাক্তারের পরামর্শে নেওয়া যেতে পারে।
- ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট রাশেদা আফরিন মেরিনা জানান, ডায়াবেটিস রোগীদের ইফতারে আঁশযুক্ত খাবার যেমন খেজুর, বিভিন্ন রকম সালাদ এবং ফল অবশ্যই রাখতে হবে। এগুলো রক্তে সুগারের পরিমাণ খুব বেশি বাড়ায় না।
- ডায়াবেটিস রোগীরা ইফতারে অতিভোজন বা সাহরিতে কম খাবেন না। অনেকে একগ্লাস পানি খেয়েও রোজা রাখেন। ডায়াবেটিস রোগীরা এ কাজ করলে ইফতারের আগেই হাইপোগ্লাইসেমিয়ায় আক্রান্ত হতে পারেন।
- সেন্টার ফর সাইকোট্রমাটোলজি অ্যান্ড রিসার্চের পরিচালক এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও মনোসামাজিক স্বাস্থ্য গবেষক ডা. রিফাত আল মাজিদ জানান, রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য এবং সুস্থ থাকার জন্য খাদ্য গ্রহণে সচেতনতার কোনও বিকল্প নেই। রোজার আগে এবং পরে একজন ডায়াবেটিস রোগীর মোট ক্যালোরি গ্রহণ প্রায় একই থাকবে।
- ডায়াবেটিস রোগীরা যত দ্রুত সম্ভব ইফতার করবেন এবং সেহরি যত দেরিতে সম্ভব খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। ইফতার থেকে সেহরির মধ্যে প্রচুর পানি পান করতে হবে।
- ফলের শরবত খাওয়া যাবে তবে সেখানে কোন চিনি যোগ করা যাবে না। সাহরিতে ভাত কম খাবেন। শাকসবজি এবং আঁশযুক্ত খাবার বেশি খাবেন। ডাবের পানি পান করতে পারেন নিয়মিত। চা, কফি এড়িয়ে চলুন।
- যাদের ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত, তারা রোজা রাখলে হাতের কাছে সবসময় গ্লুকোজ মেশানো পানি রেখে দিন। রক্তে সুপারের মাত্রা অতিরিক্ত কমে এলে এবং শরীর মাত্রাতিরিক্ত দুর্বল লাগলে তাৎক্ষণিক রোজা ভেঙে ফেলুন।