০৮:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডেল্টার চেয়েও মারাত্মক ওমিক্রন, ব্যর্থ হতে পারে করোনা ভ্যাকসিন

print news -

গোটা বিশ্বে এই পর্যন্ত মানুষের দেখা করোনাভাইরাসের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর রূপ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। এর ভয়াবহতার শিকার হয়েছিল ভারতসহ পৃথিবীর বহুদেশ। বাংলাদেশেও তার আঘাতে বিধ্বস্ত হয়েছিল। সেসব এখন অতীত। বর্তমান হলো সাউথ আফ্রিকায় পাওয়া নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন। এই ধরনটির তীব্র মিউটেশন, যা সংক্রমণযোগ্যতা ও রোগ প্রতিরোধে প্রভাবিত করে। আর এ কারণেই ভাইরাস বিশেষজ্ঞদের আগাম দাবি, ডেল্টার চেয়েও মারাত্মক আকার নিতে পারে ওমিক্রন। এমনকি ব্যর্থ হতে পারে করোনা প্রতিরোধে তৈরি হওয়া ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা।
করোনার আগের যে কোনো ধরনের তুলনায় অধিক সংক্রমণশীল বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এমনকি যেখানে ডেল্টা ধরনের ক্ষেত্রে টিকার কার্যকারিতা ছিল ৪০ শতাংশ, সেখানে নতুন ধরনের ক্ষেত্রে তা মাত্র ২৫ শতাংশ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে আগাম ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে সামগ্রিক বিষয় পর্যবেক্ষণ করার পাশাপাশি  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন ফলো করা হচ্ছে।
নতুন এই ভ্যারিয়েন্টে দেশের স্বাস্থ্যখাত সতর্ক রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। করোনা শনাক্ত হলেই জিনম সিকুয়েন্স
সাম্প্রতিক সময়ে মানবদেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হলেই জিনম সিকুয়েন্স করার তাগিদ দিয়েছেন বিশিষ্ট রোগতত্ত্ববিদ এবং সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ডা. মোশতাক হোসেন।
ডা. মোশতাক হোসেন বলেন, সম্প্রতি যাদের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে, তাদের জিনম সিকুয়েন্স করতে হবে। তা হলে বোঝা যাবে এই ভ্যারিয়েন্ট ইতোমধ্যে আমাদের দেশে এসেছে কিনা। যদি নতুন ভ্যারিয়েন্টের অস্তিত্ব পাওয়া যায়, তা হলে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
নতুন ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে আগাম ব্যবস্থা নেওয়া উচিত জানিয়ে ডা. মোশতাক বলেন: সাউথ আফ্রিকা থেকে যারাই আসবেন সরকারি ব্যবস্থাপনায় তাদের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিন করতে হবে। যারা বাংলাদেশি নন, তাদের আসতে নিরুৎসাহিত করতে হবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সব ধরনের ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করতে হবে।
সীমান্তবর্তী জেলায় সর্বোচ্চ সতর্কতা নিতে হবে
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. আহমদ পারভেজ জাবীন বলেন, সাউথ আফ্রিকার নতুন ভ্যারিয়েন্টটি ইতোমধ্যেই বিশ্বের তিনটি দেশে সাউথ আফ্রিকা, হংকং, ইটালিতে শনাক্ত হয়েছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে বিশেষ সতর্কতা জারি এবং বিশেষ পর্যবেক্ষণ করছে।
ডা. আহমদ পারভেজ জাবীন আরোও বলেন, আমাদের দেশে করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রবেশদ্বার ছিল বিমানবন্দর ও স্থলবন্দর।সেখান থেকে করোনার নতুন ধরনের রোগীরা যেন দেশে প্রবেশ করতে না পারে সে ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের লক্ষ্য রাখতে হবে।
এছাড়াও ভারতে নতুন ধরনটি শনাক্ত হলো কিনা সেটাও খেয়ালে রাখতে হবে। ভারতে শনাক্ত হলে আমাদের সীমান্তবর্তী যেসব জেলা রয়েছে তাদের সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি রাখতে হবে।
ডা. জাবীন বলেন, পাশাপাশি শীতের মধ্যে যদি যুক্তরাজ্যের মতো আমাদের দেশে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যায় তাহলে কোভিড ডেডিকেশন যে হাসপাতালগুলো রয়েছে সেখানে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়াও আমাদের সকলকেই স্বাস্থ্যবিধি মানাসহ শারিরীক দূরত্ব মেনে চলতে হবে। এরসঙ্গে ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম চলমান রাখতে হবে।
সতর্ক রয়েছে দেশের স্বাস্থ্যখাত: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
ওমিক্রন ধরন নিয়ে অধিক আতংকিত না হয়ে দেশবাসিকে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, আফ্রিকান নতুন ভ্যারিয়েন্ট বিষয়ে আমরা অবহিত হয়েছি এবং এই ভাইরাসটি খুবই এগ্রেসিভ। সে কারণে আফ্রিকার সাথে আমাদের যোগাযোগ এখন স্থগিত করা হচ্ছে।সকল এয়ারপোর্ট, ল্যান্ডপোর্টে বা দেশের সকল প্রবেশপথে স্ক্রীনিং আরো জোড়দার করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
একই সাথে সারা দেশেই স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলতে ও মুখে মাস্ক পরতে উদ্বুদ্ধ করতে সকল জেলা শহরের প্রশাসনকে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন বিশ্বের আক্রান্ত অন্যান্য জায়গা থেকেও যারা আসবে তাদের বিষয়েও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কোনভাবেই স্ক্রীনিং ছাড়া যেনো আক্রান্ত দেশের কোন ব্যক্তি দেশে প্রবেশ করতে না পারে সেব্যাপারে সংশ্লিষ্ট শাখাগুলিকেও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বিকল্প নেই বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল আলম জানান, আমরা সামগ্রিক বিষয় পর্যবেক্ষণ করছি। একই সঙ্গে ডব্লিউএইচওর গাইডলাইন ফলো করছি। পাশাপাশি কারিগরি কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ওমিক্রনের ৩২ বার স্পাইক প্রোটিন বদল
দক্ষিণ আফ্রিকার জেনোমিক সার্ভেলেন্স নেটোয়ার্কের সদস্য তুলিও ডে অলিভেরা সাংবাদিকদের বলেছেন, খুব বেশি সংখ্যার মিউটেশন সহ এই নতুন করোনাভাইরাসের ভ্যারিয়েন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে নষ্ট করে দিতে পারে এবং সংক্রমণযুক্ত।
তিনি বলেন, ভ্যারিয়েন্টটির মিউটেশনের অস্বাভাবিক গতিবিধি দেখা যাচ্ছে। ভ্যারিয়েন্টটি আমাদের অবাক করেছে। এর বিবর্তনের উচ্চ প্রবণতা দেখা গিয়েছে, আরও বহুবার এটি ধরন বদল করবে। অন্তত ৩২ বার স্পাইক প্রোটিন বদলে করোনা ভাইরাসের এই ধরন তৈরি হয়েছে।
করোনা ভ্যাকসিন ব্যর্থ হতে পারে
লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের ভাইরোলজিস্ট ড. টম পিকক এক টুইট বার্তায় জানিয়েছেন, এই কোভিড-১৯ ভাইরাসের এই রূপটিতে অবিশ্বাস্যরকম উচ্চ পরিমাণে স্পাইক অভিযোজন ঘটেছে। যা নতুন করে উদ্বেগের কারণ তৈরি করেছে।
কারণ অধিকাংশ পরিচিত মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডিগুলিই এই স্পাইক প্রোটিনকে নিষ্ক্রিয় করার কাজই করে থাকে। সেটা করতে না পারলে ব্যর্থ হবে সব করোনা ভ্যাকসিন।
সাউথ আফ্রিকায় দ্রুত বাড়ছে সংক্রমণ
গত সপ্তাহ থেকে করোনার সংক্রমণ বাড়তে দেখা গিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকাতে। প্রতিদিন প্রায় ২০০টি করে কেস শনাক্ত করার পর বুধবার সেখানে এক হাজার ২০০ জন শনাক্ত হয়। বৃহস্পতিবার এক লাফে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় দুই হাজার ৪৬৫-তে। গতকাল শুক্রবার সেটা আরও বেড়ে হয় দুই হাজার ৮২৮ জনে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই ভ্যারিয়েন্টকে গুরুত্ব দেওয়ার সময় চলে এসেছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি দেশের নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে যত দ্রুত সম্ভব ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে হবে।

ট্যাগঃ
জনপ্রিয় সংবাদ

মুক্তিযুদ্ধা সংগঠক আব্দুর রাজ্জাকের ইন্তেকাল।। বিশিষ্টজনের শোক প্রকাশ

ডেল্টার চেয়েও মারাত্মক ওমিক্রন, ব্যর্থ হতে পারে করোনা ভ্যাকসিন

প্রকাশিত হয়েছেঃ ১২:৫৭:৫৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২১
print news -

গোটা বিশ্বে এই পর্যন্ত মানুষের দেখা করোনাভাইরাসের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর রূপ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। এর ভয়াবহতার শিকার হয়েছিল ভারতসহ পৃথিবীর বহুদেশ। বাংলাদেশেও তার আঘাতে বিধ্বস্ত হয়েছিল। সেসব এখন অতীত। বর্তমান হলো সাউথ আফ্রিকায় পাওয়া নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন। এই ধরনটির তীব্র মিউটেশন, যা সংক্রমণযোগ্যতা ও রোগ প্রতিরোধে প্রভাবিত করে। আর এ কারণেই ভাইরাস বিশেষজ্ঞদের আগাম দাবি, ডেল্টার চেয়েও মারাত্মক আকার নিতে পারে ওমিক্রন। এমনকি ব্যর্থ হতে পারে করোনা প্রতিরোধে তৈরি হওয়া ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা।
করোনার আগের যে কোনো ধরনের তুলনায় অধিক সংক্রমণশীল বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এমনকি যেখানে ডেল্টা ধরনের ক্ষেত্রে টিকার কার্যকারিতা ছিল ৪০ শতাংশ, সেখানে নতুন ধরনের ক্ষেত্রে তা মাত্র ২৫ শতাংশ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে আগাম ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে সামগ্রিক বিষয় পর্যবেক্ষণ করার পাশাপাশি  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন ফলো করা হচ্ছে।
নতুন এই ভ্যারিয়েন্টে দেশের স্বাস্থ্যখাত সতর্ক রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। করোনা শনাক্ত হলেই জিনম সিকুয়েন্স
সাম্প্রতিক সময়ে মানবদেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হলেই জিনম সিকুয়েন্স করার তাগিদ দিয়েছেন বিশিষ্ট রোগতত্ত্ববিদ এবং সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ডা. মোশতাক হোসেন।
ডা. মোশতাক হোসেন বলেন, সম্প্রতি যাদের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে, তাদের জিনম সিকুয়েন্স করতে হবে। তা হলে বোঝা যাবে এই ভ্যারিয়েন্ট ইতোমধ্যে আমাদের দেশে এসেছে কিনা। যদি নতুন ভ্যারিয়েন্টের অস্তিত্ব পাওয়া যায়, তা হলে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
নতুন ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে আগাম ব্যবস্থা নেওয়া উচিত জানিয়ে ডা. মোশতাক বলেন: সাউথ আফ্রিকা থেকে যারাই আসবেন সরকারি ব্যবস্থাপনায় তাদের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিন করতে হবে। যারা বাংলাদেশি নন, তাদের আসতে নিরুৎসাহিত করতে হবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সব ধরনের ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করতে হবে।
সীমান্তবর্তী জেলায় সর্বোচ্চ সতর্কতা নিতে হবে
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. আহমদ পারভেজ জাবীন বলেন, সাউথ আফ্রিকার নতুন ভ্যারিয়েন্টটি ইতোমধ্যেই বিশ্বের তিনটি দেশে সাউথ আফ্রিকা, হংকং, ইটালিতে শনাক্ত হয়েছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে বিশেষ সতর্কতা জারি এবং বিশেষ পর্যবেক্ষণ করছে।
ডা. আহমদ পারভেজ জাবীন আরোও বলেন, আমাদের দেশে করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রবেশদ্বার ছিল বিমানবন্দর ও স্থলবন্দর।সেখান থেকে করোনার নতুন ধরনের রোগীরা যেন দেশে প্রবেশ করতে না পারে সে ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের লক্ষ্য রাখতে হবে।
এছাড়াও ভারতে নতুন ধরনটি শনাক্ত হলো কিনা সেটাও খেয়ালে রাখতে হবে। ভারতে শনাক্ত হলে আমাদের সীমান্তবর্তী যেসব জেলা রয়েছে তাদের সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি রাখতে হবে।
ডা. জাবীন বলেন, পাশাপাশি শীতের মধ্যে যদি যুক্তরাজ্যের মতো আমাদের দেশে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যায় তাহলে কোভিড ডেডিকেশন যে হাসপাতালগুলো রয়েছে সেখানে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়াও আমাদের সকলকেই স্বাস্থ্যবিধি মানাসহ শারিরীক দূরত্ব মেনে চলতে হবে। এরসঙ্গে ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম চলমান রাখতে হবে।
সতর্ক রয়েছে দেশের স্বাস্থ্যখাত: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
ওমিক্রন ধরন নিয়ে অধিক আতংকিত না হয়ে দেশবাসিকে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, আফ্রিকান নতুন ভ্যারিয়েন্ট বিষয়ে আমরা অবহিত হয়েছি এবং এই ভাইরাসটি খুবই এগ্রেসিভ। সে কারণে আফ্রিকার সাথে আমাদের যোগাযোগ এখন স্থগিত করা হচ্ছে।সকল এয়ারপোর্ট, ল্যান্ডপোর্টে বা দেশের সকল প্রবেশপথে স্ক্রীনিং আরো জোড়দার করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
একই সাথে সারা দেশেই স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলতে ও মুখে মাস্ক পরতে উদ্বুদ্ধ করতে সকল জেলা শহরের প্রশাসনকে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন বিশ্বের আক্রান্ত অন্যান্য জায়গা থেকেও যারা আসবে তাদের বিষয়েও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কোনভাবেই স্ক্রীনিং ছাড়া যেনো আক্রান্ত দেশের কোন ব্যক্তি দেশে প্রবেশ করতে না পারে সেব্যাপারে সংশ্লিষ্ট শাখাগুলিকেও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বিকল্প নেই বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল আলম জানান, আমরা সামগ্রিক বিষয় পর্যবেক্ষণ করছি। একই সঙ্গে ডব্লিউএইচওর গাইডলাইন ফলো করছি। পাশাপাশি কারিগরি কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ওমিক্রনের ৩২ বার স্পাইক প্রোটিন বদল
দক্ষিণ আফ্রিকার জেনোমিক সার্ভেলেন্স নেটোয়ার্কের সদস্য তুলিও ডে অলিভেরা সাংবাদিকদের বলেছেন, খুব বেশি সংখ্যার মিউটেশন সহ এই নতুন করোনাভাইরাসের ভ্যারিয়েন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে নষ্ট করে দিতে পারে এবং সংক্রমণযুক্ত।
তিনি বলেন, ভ্যারিয়েন্টটির মিউটেশনের অস্বাভাবিক গতিবিধি দেখা যাচ্ছে। ভ্যারিয়েন্টটি আমাদের অবাক করেছে। এর বিবর্তনের উচ্চ প্রবণতা দেখা গিয়েছে, আরও বহুবার এটি ধরন বদল করবে। অন্তত ৩২ বার স্পাইক প্রোটিন বদলে করোনা ভাইরাসের এই ধরন তৈরি হয়েছে।
করোনা ভ্যাকসিন ব্যর্থ হতে পারে
লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের ভাইরোলজিস্ট ড. টম পিকক এক টুইট বার্তায় জানিয়েছেন, এই কোভিড-১৯ ভাইরাসের এই রূপটিতে অবিশ্বাস্যরকম উচ্চ পরিমাণে স্পাইক অভিযোজন ঘটেছে। যা নতুন করে উদ্বেগের কারণ তৈরি করেছে।
কারণ অধিকাংশ পরিচিত মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডিগুলিই এই স্পাইক প্রোটিনকে নিষ্ক্রিয় করার কাজই করে থাকে। সেটা করতে না পারলে ব্যর্থ হবে সব করোনা ভ্যাকসিন।
সাউথ আফ্রিকায় দ্রুত বাড়ছে সংক্রমণ
গত সপ্তাহ থেকে করোনার সংক্রমণ বাড়তে দেখা গিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকাতে। প্রতিদিন প্রায় ২০০টি করে কেস শনাক্ত করার পর বুধবার সেখানে এক হাজার ২০০ জন শনাক্ত হয়। বৃহস্পতিবার এক লাফে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় দুই হাজার ৪৬৫-তে। গতকাল শুক্রবার সেটা আরও বেড়ে হয় দুই হাজার ৮২৮ জনে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই ভ্যারিয়েন্টকে গুরুত্ব দেওয়ার সময় চলে এসেছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি দেশের নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে যত দ্রুত সম্ভব ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে হবে।