১০:১৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মিয়ানমারের ৩৩০ নাগরিককে ফেরত

মিয়ানমারের ৩৩০ নাগরিককে ফেরত পাঠানো হলো

print news -

নিউজ ডেস্ক:  মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের কারণে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ৩৩০ জন বিজিপি সদস্যসহ নাগরিকদের জাহাজে করে স্বদেশে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

দুই দফায় তাদের বাংলাদেশের একটি জাহাজ ঘাট থেকে গভীর সাগরে অবস্থানরত মিয়ানমারের একটি জাহাজে স্থানান্তরিত করা হয়।
সকালে ১৬৫ জন এবং বিকেলে বাকি ১৬৫ জনকে ঘাট থেকে মিয়ানমারের জাহাজে স্থানান্তর করা হয়।

বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড ফোর্স (বিজিবি) জানিয়েছে, বিজিবির কক্সবাজার অঞ্চলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) কাছে ৩৩০ জন মিয়ানমারের নাগরিককে হস্তান্তর করা হয়েছে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে আশ্রয়প্রার্থীদের মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাদের মধ্যে মিয়ানমারের বিজিপি, সেনাবাহিনী, অভিবাসন এবং পুলিশের সদস্যরা রয়েছেন।

এর আগে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলা উচ্চ বিদ্যালয় এবং বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১২টি বাসে করে মিয়ানমারের এসব নাগরিককে কক্সবাজারের বঙ্গোপসাগরের উপকূলে নিয়ে যাওয়া হয়।বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের এসব সদস্যকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে জেটি ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়।

প্রথমে তাদের জেটি ঘাটের কাছে একটি অস্থায়ী শেডে রাখা হয়। সেখান থেকে একে একে জাহাজে তোলা হয়।

এ ছাড়া দেশের আহত নাগরিকদের চারটি অ্যাম্বুলেন্সে করে বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়।সাম্প্রতিক অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব পরিস্থিতিতে মিয়ানমারের এসব নাগরিক বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। উভয় দেশ তাদের প্রত্যর্পণের প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনার ভিত্তিতে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে।
সেই পরিপ্রেক্ষিতে মিয়ানমার নৌবাহিনীর একটি জাহাজ সিটওয়ে বন্দর হয়ে বাংলাদেশের সীমান্তের কাছে আসে। এটি গভীর সমুদ্রে নোঙর করা হয়েছিল।

সকাল ১১টার দিকে আশ্রয়প্রার্থীদের বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের একটি জাহাজে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রথমে ১৬৫ জন নিয়ে একটি জাহাজ গভীর সাগরে মিয়ানমারের জাহাজের উদ্দেশে রওনা হয়। বিকেলে বাকি ১৬৫ জনকে নিয়ে বাংলাদেশের জাহাজ ছেড়ে যায়।
মিয়ানমার থেকে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সকালে পৌঁছায়। তারা নির্ভরশীলদের তালিকা দেখে তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়।

পরবর্তীতে প্রত্যেক মিয়ানমারের নাগরিককে বিজিবি সদস্যের হাত ধরে জেটিতে ভিড় করা বাংলাদেশি জাহাজের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়।
বিজিবি জানায়, ৩৩০ আশ্রয়প্রার্থীর মধ্যে ৩০২ জন বিজিপি সদস্য, চারজন বিজিপি পরিবারের সদস্য, দুজন সেনা সদস্য, ১৮ জন অভিবাসন কর্মী এবং চারজন বেসামরিক নাগরিক রয়েছে।

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে রাষ্ট্রীয় জান্তা বাহিনী এবং বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলির মধ্যে চলমান সংঘাতের কারণে জীবন বাঁচাতে 4 ফেব্রুয়ারি থেকে পরবর্তী কয়েক দিনের জন্য সীমান্তরক্ষী ও সেনাসদস্যসহ 330 জন বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।
তাদের মধ্যে দুই নারী ও দুই শিশু রয়েছে। আশ্রয়ের জন্য আসা 330 জনের মধ্যে 155 জনকে ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ে এবং 166 জনকে হ্নীলা উচ্চ বিদ্যালয়ে রাখা হয়েছিল।

এ ছাড়া আহতদের মধ্যে পাঁচ জনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে এবং চার জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।সম্প্রতি বান্দরবান ও কক্সবাজার সীমান্তে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে।

একপর্যায়ে এসব বিজিপি সদস্যরা নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে টেকনাফের হোয়াইকং পর্যন্ত মিয়ানমারের অভ্যন্তরে প্রায় ডজনখানেক সীমান্ত চৌকি থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

বিজিবি জানায়, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু, ঘুমধুম ও বৈশফান্দ্রী সীমান্তে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড ফোর্সের তুমব্রু ডান ও বাম ক্যাম্পে হামলা চালায় দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী দল।

একই সময়ে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার বালুখালী, পালংখালী ও টেকনাফ উপজেলার সীমান্তবর্তী কাইচিংড়ং, মাইদু, গুদুছড়া ও মংডু এলাকায়ও গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

ফলে মিয়ানমারের বিজিপি, সেনাবাহিনী, পুলিশ, অভিবাসন ও বেসামরিক সদস্যরা প্রাণের ভয়ে পালিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে অস্ত্রসহ বিজিবির কাছে আত্মসমর্পণ করে বলে বিজিবি জানিয়েছে।

এদিকে কয়েকদিন ধরে সীমান্ত থেকে গোলাবর্ষণ ও মর্টার বর্ষণে আতঙ্কিত বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকার সাধারণ মানুষ।
গত 5 ফেব্রুয়ারি নাইক্ষ্যংছড় বালুখালী, পালংখালী ও টেকনাফ উপজেলার সীমান্তবর্তী কাইচিংড়ং, মাইদু, গুদুছড়া ও মংডু এলাকায়ও গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

ফলে মিয়ানমারের বিজিপি, সেনাবাহিনী, পুলিশ, অভিবাসন ও বেসামরিক সদস্যরা প্রাণের ভয়ে পালিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে অস্ত্রসহ বিজিবির কাছে আত্মসমর্পণ করে বলে বিজিবি জানিয়েছে।

এদিকে কয়েকদিন ধরে সীমান্ত থেকে গোলাবর্ষণ ও মর্টার বর্ষণে আতঙ্কিত বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকার সাধারণ মানুষ।

সুত্র: বিবিসি

https://youtube.com/shorts/aA6wVSc_P9I?feature=share

জনপ্রিয় সংবাদ

মুক্তিযুদ্ধা সংগঠক আব্দুর রাজ্জাকের ইন্তেকাল।। বিশিষ্টজনের শোক প্রকাশ

মিয়ানমারের ৩৩০ নাগরিককে ফেরত

প্রকাশিত হয়েছেঃ ১১:২৬:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
print news -

নিউজ ডেস্ক:  মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের কারণে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ৩৩০ জন বিজিপি সদস্যসহ নাগরিকদের জাহাজে করে স্বদেশে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

দুই দফায় তাদের বাংলাদেশের একটি জাহাজ ঘাট থেকে গভীর সাগরে অবস্থানরত মিয়ানমারের একটি জাহাজে স্থানান্তরিত করা হয়।
সকালে ১৬৫ জন এবং বিকেলে বাকি ১৬৫ জনকে ঘাট থেকে মিয়ানমারের জাহাজে স্থানান্তর করা হয়।

বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড ফোর্স (বিজিবি) জানিয়েছে, বিজিবির কক্সবাজার অঞ্চলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) কাছে ৩৩০ জন মিয়ানমারের নাগরিককে হস্তান্তর করা হয়েছে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে আশ্রয়প্রার্থীদের মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাদের মধ্যে মিয়ানমারের বিজিপি, সেনাবাহিনী, অভিবাসন এবং পুলিশের সদস্যরা রয়েছেন।

এর আগে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলা উচ্চ বিদ্যালয় এবং বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১২টি বাসে করে মিয়ানমারের এসব নাগরিককে কক্সবাজারের বঙ্গোপসাগরের উপকূলে নিয়ে যাওয়া হয়।বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের এসব সদস্যকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে জেটি ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়।

প্রথমে তাদের জেটি ঘাটের কাছে একটি অস্থায়ী শেডে রাখা হয়। সেখান থেকে একে একে জাহাজে তোলা হয়।

এ ছাড়া দেশের আহত নাগরিকদের চারটি অ্যাম্বুলেন্সে করে বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়।সাম্প্রতিক অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব পরিস্থিতিতে মিয়ানমারের এসব নাগরিক বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। উভয় দেশ তাদের প্রত্যর্পণের প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনার ভিত্তিতে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে।
সেই পরিপ্রেক্ষিতে মিয়ানমার নৌবাহিনীর একটি জাহাজ সিটওয়ে বন্দর হয়ে বাংলাদেশের সীমান্তের কাছে আসে। এটি গভীর সমুদ্রে নোঙর করা হয়েছিল।

সকাল ১১টার দিকে আশ্রয়প্রার্থীদের বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের একটি জাহাজে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রথমে ১৬৫ জন নিয়ে একটি জাহাজ গভীর সাগরে মিয়ানমারের জাহাজের উদ্দেশে রওনা হয়। বিকেলে বাকি ১৬৫ জনকে নিয়ে বাংলাদেশের জাহাজ ছেড়ে যায়।
মিয়ানমার থেকে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সকালে পৌঁছায়। তারা নির্ভরশীলদের তালিকা দেখে তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়।

পরবর্তীতে প্রত্যেক মিয়ানমারের নাগরিককে বিজিবি সদস্যের হাত ধরে জেটিতে ভিড় করা বাংলাদেশি জাহাজের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়।
বিজিবি জানায়, ৩৩০ আশ্রয়প্রার্থীর মধ্যে ৩০২ জন বিজিপি সদস্য, চারজন বিজিপি পরিবারের সদস্য, দুজন সেনা সদস্য, ১৮ জন অভিবাসন কর্মী এবং চারজন বেসামরিক নাগরিক রয়েছে।

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে রাষ্ট্রীয় জান্তা বাহিনী এবং বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলির মধ্যে চলমান সংঘাতের কারণে জীবন বাঁচাতে 4 ফেব্রুয়ারি থেকে পরবর্তী কয়েক দিনের জন্য সীমান্তরক্ষী ও সেনাসদস্যসহ 330 জন বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।
তাদের মধ্যে দুই নারী ও দুই শিশু রয়েছে। আশ্রয়ের জন্য আসা 330 জনের মধ্যে 155 জনকে ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ে এবং 166 জনকে হ্নীলা উচ্চ বিদ্যালয়ে রাখা হয়েছিল।

এ ছাড়া আহতদের মধ্যে পাঁচ জনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে এবং চার জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।সম্প্রতি বান্দরবান ও কক্সবাজার সীমান্তে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে।

একপর্যায়ে এসব বিজিপি সদস্যরা নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে টেকনাফের হোয়াইকং পর্যন্ত মিয়ানমারের অভ্যন্তরে প্রায় ডজনখানেক সীমান্ত চৌকি থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

বিজিবি জানায়, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু, ঘুমধুম ও বৈশফান্দ্রী সীমান্তে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড ফোর্সের তুমব্রু ডান ও বাম ক্যাম্পে হামলা চালায় দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী দল।

একই সময়ে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার বালুখালী, পালংখালী ও টেকনাফ উপজেলার সীমান্তবর্তী কাইচিংড়ং, মাইদু, গুদুছড়া ও মংডু এলাকায়ও গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

ফলে মিয়ানমারের বিজিপি, সেনাবাহিনী, পুলিশ, অভিবাসন ও বেসামরিক সদস্যরা প্রাণের ভয়ে পালিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে অস্ত্রসহ বিজিবির কাছে আত্মসমর্পণ করে বলে বিজিবি জানিয়েছে।

এদিকে কয়েকদিন ধরে সীমান্ত থেকে গোলাবর্ষণ ও মর্টার বর্ষণে আতঙ্কিত বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকার সাধারণ মানুষ।
গত 5 ফেব্রুয়ারি নাইক্ষ্যংছড় বালুখালী, পালংখালী ও টেকনাফ উপজেলার সীমান্তবর্তী কাইচিংড়ং, মাইদু, গুদুছড়া ও মংডু এলাকায়ও গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

ফলে মিয়ানমারের বিজিপি, সেনাবাহিনী, পুলিশ, অভিবাসন ও বেসামরিক সদস্যরা প্রাণের ভয়ে পালিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে অস্ত্রসহ বিজিবির কাছে আত্মসমর্পণ করে বলে বিজিবি জানিয়েছে।

এদিকে কয়েকদিন ধরে সীমান্ত থেকে গোলাবর্ষণ ও মর্টার বর্ষণে আতঙ্কিত বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকার সাধারণ মানুষ।

সুত্র: বিবিসি

https://youtube.com/shorts/aA6wVSc_P9I?feature=share