১২:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাতিসংঘে The Sheikh Hasina Initiative হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন অনুষ্ঠান  

print news -

জাতিসংঘে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা উদ্ভাবিত ও প্রবর্তিত কমিউনিটি ক্লিনিক ধারণাটি “কমিউনিটি ভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাঃ সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা অর্জনের জন্য একটি অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পন্থা” শিরোনামে এবং “The Sheikh Hasina Initiative” হিসেবে জাতিসংঘে প্রস্তাবাকারে গৃহীত ও স্বীকৃত হওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলতর করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন অনুষ্ঠান।

প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় কমিউনিটি ক্লিনিকের যুগান্তকারী ভূমিকা উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, প্রান্তিক জনগোষ্টির মাঝে স্বাস্থ্য সেবা পৌছে দেওয়ার মাধ্যমে কমিনিটি ক্লিনিক আজ বিশ্ব ব্যাংকের স্বীকৃতি পেয়েছে। তার জন্য  বছরে প্রায় ১৮ লাখ মানুষ কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে সেবা পেয়ে থাকেন।

গত সোমবার (৫ জুন) দুপুরে রাজধানীর শাহবাগের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে কমিউনিটি ক্লিনিকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে ১৪ হাজারের বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। এসব ক্লিনিকে ৩২ ধরনের ওষুধ বিনামূল্যে দেয়া হয়। প্রতিটি ক্লিনিকে প্রতিদিন প্রায় ৪০ জন মানুষ সেবা নেয়। সেই হিসেবে সারাদেশে দিনে ৫ থেকে ৬ লাখ, মাসে দেড় কোটি এবং বছরে ১৮ কোটি মানুষ কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা পাচ্ছে। যা দেশের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখছে।

দেশের তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ কমিউনিটি ক্লিনিক জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার কমিউনিটি ক্লিনিকের উদ্যোগ দেশ ছাড়িয়ে বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। পেয়েছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। ৭৫টি দেশ প্রধানমন্ত্রীর এ উদ্যোগকে সরাসরি সমর্থন দিয়েছে। যা দেশের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি।

ঘরে ঘরে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে এ কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, করোনাকালে ভ্যাকসিন ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কমিউনিটি ক্লিনিকের বিরাট ভূমিকা ছিল। শুধু তাই নয়, দেশে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কমিউনিটি ক্লিনিক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।

শুরুতে কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার ফলে বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে রক্ষা পাওয়া যায় মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, ছোট ছোট সমস্যায় যখন কমিউনিটি ক্লিনিক চিকিৎসা সেবা দেয় তাতে রোগীকে উপজেলা, জেলা বা বড় হাসপাতালে আর যেতে হয় না৷ এতে শুরুতেই রোগীরা প্রাথমিক পর্যায়ের সেবা পেয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান।

কমিউনিটি ক্লিনিকের সফলতা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক চিকিৎসা নিশ্চিতের ফলে মানুষের স্বাস্থ্যগত উন্নতি হয়েছে। বড় ধরনের রোগ থেকে মানুষ সতর্ক হতে পারছে। এতে দেশের মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। আমরা এমডিজি অর্জন করেছি। এটি বাস্তবায়নে কমিউনিটি ক্লিনিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। করোনা ও ইপিআইয়ের ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রমও ভূমিকা রেখেছে কমিউনিটি ক্লিনিক। এটি শুধু একটি একক উদ্যোগ নয়, এটি একাধিক মহৎ উদ্যোগের সম্মিলিত রূপ। বর্তমান সরকারের প্রাপ্ত আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিগুলোর মধ্যে সবথেকে বেশি এসেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হাত ধরে। কমিউনিটি ক্লিনিকও সেসব খাতের অন্যতম।

৪৫ হাজার কোটি টাকার ভ্যাকসিন ফ্রি দেয়া হয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘২০ হাজার কোটি টাকার ভ্যাকসিন আমরা ফ্রি পেয়েছি। আর ২৫ হাজার কোটি টাকার ভ্যাকসিন সরকার বিভিন্নভাবে ব্যবস্থা করেছে। এই ৪৫ হাজার কোটি টাকার ভ্যাকসিন আমরা মানুষকে ফ্রি দিয়েছি। যা করোনার মতো মহামারি থেকে আমাদের রক্ষা করেছে।’

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বাজেট এবার ৮ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা বেড়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরে বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩৮ হাজার ৫২ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৫ শতাংশ। আগের অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ ছিল মোট বাজেটের ৫ দশমিক ৪ শতাংশ বা ৩৬ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা।

স্বাস্থ্যসেবার পরিধি বেড়েছে, তাই স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ আরও কিছুটা বাড়ানো প্রয়োজন ছিল বলে মনে করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ‘চলতি অর্থবছরের তুলনায় আগামী অর্থবছরের বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বেড়েছে। তবে মানুষের স্বাস্থ্যসেবার পরিধি বাড়ায় বাজেট আরেকটু বেশি হলে ভালো হতো। আমি আশা করি আরেকটু বেশি বাজেট বাড়লে স্বাস্থ্য সেবাকে আরও বেশি ত্বরান্বিত করা যাবে।

জাতিসংঘের স্বীকৃতি: কমিউনিটি ক্লিনিকের ইতিহাস জানিয়েছেন শেখ হাসিনা

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ও মানিকগঞ্জ-৩ আসনের সফল সংসদ সদস্য জনাব জাহিদ মালেক এমপি।

প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন চিকিৎসক সমাজের অবিসংবাদিত নেতা,বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম এর অন্যতম সদস্য ও বিএমএ এর সম্মানিত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন।

কমিউনিটি ক্লিনিক জাতিসংঘের স্বীকৃতি পাওয়ায় বাংলাদেশ সিএইচসিপি এসোসিয়েশন চট্টগ্রাম বিভাগের উদ্যোগে আনন্দ র‌্যালী ও আলোচনা সভা

বিশেষ অতিথি হিসেবে অভিমত ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন অধ্যাপক  ডা. আ ফ ম রুহুল হক এমপি,চেয়ারম্যান,বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ও সাবেক সফল স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী, অধ্যাপক ডা.সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী,চেয়ারম্যান,কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট ,ড.আব্দুস সোবহান গোলাপ এমপি,প্রচার সম্পাদক,বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী,অধ্যাপক ডা.মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ,মাননীয় উপাচার্য,বিএসএমএমইউ,অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম,মহাপরিচালক স্বাস্থ্য অধিদপ্তর,ডা.কাজী শফিকুর রহমান,সাবেক মহাসচিব,বিএমএ ও অধ্যাপক ডা. এহসানুল কবির জগলুল,ব্যবস্থাপনা পরিচালক,ইডিসিএল।

সভাপতিত্ব করেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ এর সংগ্রামী সভাপতি ডা মোঃ জামাল উদ্দিন চৌধুরী। মডারেশন করেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ এর বিপ্লবী মহাসচিব অধ্যাপক ডা মোঃ কামরুল হাসান মিলন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ডা.মোঃ জাবেদ ও ডা. মোস্তাফিজুর রহমান রিজভী।

অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতাস্বরুপ সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক গ্রহন করেন ড.আব্দুস সোবহান গোলাপ এমপি,প্রচার সম্পাদক,বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী।

গত ১৬ মে জাতিসংঘে প্রথমবারের মতো কমিউনিটি ভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবাবিষয়ক একটি রেজুলেশন সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়৷ যেখানে সরকার নিরবচ্ছিন্ন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সারা দেশে ১৪ হাজারেরও বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করায় জাতিসংঘের স্বীকৃতি পেয়েছে।

কমিউনিটিভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা: সার্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা অর্জনের লক্ষ্যে একটি অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতি’ শিরোনামের ঐতিহাসিক রেজুলেশনটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে বাংলাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিক ভিত্তিক মডেল প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসামান্য উদ্ভাবনী নেতৃত্বকে জাতিসংঘে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিয়েছে।

বাংলাদেশ প্রস্তাবিত রেজুলেশনটিতে জাতিসংঘে সদস্য রাষ্ট্রগুলো কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল উদ্ভাবনী উদ্যোগের স্বীকৃতি দিয়ে এই উদ্যোগকে ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশে এই অনন্য কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা চালু করেছিলেন, যা সারা দেশের তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের দোরগোড়ায় সরকারের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার সুফল সরবরাহে বিপ্লব ঘটিয়েছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

মুক্তিযুদ্ধা সংগঠক আব্দুর রাজ্জাকের ইন্তেকাল।। বিশিষ্টজনের শোক প্রকাশ

জাতিসংঘে The Sheikh Hasina Initiative হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন অনুষ্ঠান  

প্রকাশিত হয়েছেঃ ১২:৩২:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৫ জুন ২০২৩
print news -

জাতিসংঘে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা উদ্ভাবিত ও প্রবর্তিত কমিউনিটি ক্লিনিক ধারণাটি “কমিউনিটি ভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাঃ সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা অর্জনের জন্য একটি অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পন্থা” শিরোনামে এবং “The Sheikh Hasina Initiative” হিসেবে জাতিসংঘে প্রস্তাবাকারে গৃহীত ও স্বীকৃত হওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলতর করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন অনুষ্ঠান।

প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় কমিউনিটি ক্লিনিকের যুগান্তকারী ভূমিকা উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, প্রান্তিক জনগোষ্টির মাঝে স্বাস্থ্য সেবা পৌছে দেওয়ার মাধ্যমে কমিনিটি ক্লিনিক আজ বিশ্ব ব্যাংকের স্বীকৃতি পেয়েছে। তার জন্য  বছরে প্রায় ১৮ লাখ মানুষ কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে সেবা পেয়ে থাকেন।

গত সোমবার (৫ জুন) দুপুরে রাজধানীর শাহবাগের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে কমিউনিটি ক্লিনিকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে ১৪ হাজারের বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। এসব ক্লিনিকে ৩২ ধরনের ওষুধ বিনামূল্যে দেয়া হয়। প্রতিটি ক্লিনিকে প্রতিদিন প্রায় ৪০ জন মানুষ সেবা নেয়। সেই হিসেবে সারাদেশে দিনে ৫ থেকে ৬ লাখ, মাসে দেড় কোটি এবং বছরে ১৮ কোটি মানুষ কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা পাচ্ছে। যা দেশের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখছে।

দেশের তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ কমিউনিটি ক্লিনিক জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার কমিউনিটি ক্লিনিকের উদ্যোগ দেশ ছাড়িয়ে বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। পেয়েছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। ৭৫টি দেশ প্রধানমন্ত্রীর এ উদ্যোগকে সরাসরি সমর্থন দিয়েছে। যা দেশের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি।

ঘরে ঘরে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে এ কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, করোনাকালে ভ্যাকসিন ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কমিউনিটি ক্লিনিকের বিরাট ভূমিকা ছিল। শুধু তাই নয়, দেশে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কমিউনিটি ক্লিনিক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।

শুরুতে কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার ফলে বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে রক্ষা পাওয়া যায় মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, ছোট ছোট সমস্যায় যখন কমিউনিটি ক্লিনিক চিকিৎসা সেবা দেয় তাতে রোগীকে উপজেলা, জেলা বা বড় হাসপাতালে আর যেতে হয় না৷ এতে শুরুতেই রোগীরা প্রাথমিক পর্যায়ের সেবা পেয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান।

কমিউনিটি ক্লিনিকের সফলতা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক চিকিৎসা নিশ্চিতের ফলে মানুষের স্বাস্থ্যগত উন্নতি হয়েছে। বড় ধরনের রোগ থেকে মানুষ সতর্ক হতে পারছে। এতে দেশের মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। আমরা এমডিজি অর্জন করেছি। এটি বাস্তবায়নে কমিউনিটি ক্লিনিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। করোনা ও ইপিআইয়ের ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রমও ভূমিকা রেখেছে কমিউনিটি ক্লিনিক। এটি শুধু একটি একক উদ্যোগ নয়, এটি একাধিক মহৎ উদ্যোগের সম্মিলিত রূপ। বর্তমান সরকারের প্রাপ্ত আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিগুলোর মধ্যে সবথেকে বেশি এসেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হাত ধরে। কমিউনিটি ক্লিনিকও সেসব খাতের অন্যতম।

৪৫ হাজার কোটি টাকার ভ্যাকসিন ফ্রি দেয়া হয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘২০ হাজার কোটি টাকার ভ্যাকসিন আমরা ফ্রি পেয়েছি। আর ২৫ হাজার কোটি টাকার ভ্যাকসিন সরকার বিভিন্নভাবে ব্যবস্থা করেছে। এই ৪৫ হাজার কোটি টাকার ভ্যাকসিন আমরা মানুষকে ফ্রি দিয়েছি। যা করোনার মতো মহামারি থেকে আমাদের রক্ষা করেছে।’

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বাজেট এবার ৮ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা বেড়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরে বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩৮ হাজার ৫২ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৫ শতাংশ। আগের অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ ছিল মোট বাজেটের ৫ দশমিক ৪ শতাংশ বা ৩৬ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা।

স্বাস্থ্যসেবার পরিধি বেড়েছে, তাই স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ আরও কিছুটা বাড়ানো প্রয়োজন ছিল বলে মনে করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ‘চলতি অর্থবছরের তুলনায় আগামী অর্থবছরের বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বেড়েছে। তবে মানুষের স্বাস্থ্যসেবার পরিধি বাড়ায় বাজেট আরেকটু বেশি হলে ভালো হতো। আমি আশা করি আরেকটু বেশি বাজেট বাড়লে স্বাস্থ্য সেবাকে আরও বেশি ত্বরান্বিত করা যাবে।

জাতিসংঘের স্বীকৃতি: কমিউনিটি ক্লিনিকের ইতিহাস জানিয়েছেন শেখ হাসিনা

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ও মানিকগঞ্জ-৩ আসনের সফল সংসদ সদস্য জনাব জাহিদ মালেক এমপি।

প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন চিকিৎসক সমাজের অবিসংবাদিত নেতা,বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম এর অন্যতম সদস্য ও বিএমএ এর সম্মানিত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন।

কমিউনিটি ক্লিনিক জাতিসংঘের স্বীকৃতি পাওয়ায় বাংলাদেশ সিএইচসিপি এসোসিয়েশন চট্টগ্রাম বিভাগের উদ্যোগে আনন্দ র‌্যালী ও আলোচনা সভা

বিশেষ অতিথি হিসেবে অভিমত ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন অধ্যাপক  ডা. আ ফ ম রুহুল হক এমপি,চেয়ারম্যান,বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ও সাবেক সফল স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী, অধ্যাপক ডা.সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী,চেয়ারম্যান,কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট ,ড.আব্দুস সোবহান গোলাপ এমপি,প্রচার সম্পাদক,বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী,অধ্যাপক ডা.মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ,মাননীয় উপাচার্য,বিএসএমএমইউ,অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম,মহাপরিচালক স্বাস্থ্য অধিদপ্তর,ডা.কাজী শফিকুর রহমান,সাবেক মহাসচিব,বিএমএ ও অধ্যাপক ডা. এহসানুল কবির জগলুল,ব্যবস্থাপনা পরিচালক,ইডিসিএল।

সভাপতিত্ব করেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ এর সংগ্রামী সভাপতি ডা মোঃ জামাল উদ্দিন চৌধুরী। মডারেশন করেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ এর বিপ্লবী মহাসচিব অধ্যাপক ডা মোঃ কামরুল হাসান মিলন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ডা.মোঃ জাবেদ ও ডা. মোস্তাফিজুর রহমান রিজভী।

অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতাস্বরুপ সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক গ্রহন করেন ড.আব্দুস সোবহান গোলাপ এমপি,প্রচার সম্পাদক,বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী।

গত ১৬ মে জাতিসংঘে প্রথমবারের মতো কমিউনিটি ভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবাবিষয়ক একটি রেজুলেশন সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়৷ যেখানে সরকার নিরবচ্ছিন্ন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সারা দেশে ১৪ হাজারেরও বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করায় জাতিসংঘের স্বীকৃতি পেয়েছে।

কমিউনিটিভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা: সার্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা অর্জনের লক্ষ্যে একটি অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতি’ শিরোনামের ঐতিহাসিক রেজুলেশনটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে বাংলাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিক ভিত্তিক মডেল প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসামান্য উদ্ভাবনী নেতৃত্বকে জাতিসংঘে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিয়েছে।

বাংলাদেশ প্রস্তাবিত রেজুলেশনটিতে জাতিসংঘে সদস্য রাষ্ট্রগুলো কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল উদ্ভাবনী উদ্যোগের স্বীকৃতি দিয়ে এই উদ্যোগকে ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশে এই অনন্য কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা চালু করেছিলেন, যা সারা দেশের তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের দোরগোড়ায় সরকারের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার সুফল সরবরাহে বিপ্লব ঘটিয়েছে।