০২:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

একুশে পদক পেলেন সিলেটের প্রয়াত কিংবদন্তি লোকসংগীত শিল্পী বিদিত লাল দাস

print news -

একুশে পদক পেলেন সিলেটের প্রয়াত কিংবদন্তি লোকসংগীত শিল্পী বিদিত লাল দাস (মরণোত্তর) চলতি বছর (২০২৪) একুশে পদক পাচ্ছেন। মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একুশে পদকের জন্য মনোনীতদের নাম ঘোষণা করা হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলার গুণী লোকবকবিদের সব লোকগান সংগ্রহ ও সুর সংযোজনের মাধ্যমে এক ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন শ্রী বিদিত লাল দাস।
তিনি হাছন রাজা, রাধারমণ দত্ত ও গিয়াস উদ্দিনসহ অনেক লোকসংগীত শিল্পীদের গানের সুর করেছেন।  বিদিত লাল ১৯৩৬ সালের ১৫ জুন সিলেটের শেখঘাটে সম্ভ্রান্ত জমিদার লালব্রাদার্স হাউজ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬০ এর দশকের একজন অন্যতম বেতার গায়ক।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে লোকসংগীতের প্রচার ও প্রসারের লক্ষ্যে গঠন করা বিদিতলাল দাস ‘বিদিতলাল দাস ও সঙ্গীরা’ নামের সংগীত দলটি সেই সময় বাংলাদেশ ও ভারতে বিভিন্ন সময় সংগীত পরিবেশন করে সংগীত পিপাসুদের অকুণ্ঠ প্রশংসা কুড়াতে সক্ষম হয়। তাঁর দলের অংশগ্রহন করা উল্লেখযোগ্য অনুষ্ঠানগুলো হচ্ছে-প্রথম সার্ক সম্মেলনে সঙ্গীত পরিবেশন, কলকাতার লোকভারতী আয়োজিত অনুষ্ঠান (১৯৮৮), কাছাড়ে অনুষ্ঠিত নিখিল বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলনে সংগীত পরিবেশন (১৯৮৯) প্রভৃতি। তার সেই দলে ছিলেন সুবীর নন্দী, রাসবিহারী চক্রবর্তী, রামকানাই দাশ, আকরামুল ইসলাম, হিমাংশু গোস্বামী, দুলাল ভৌমিক, রাখাল চক্রবর্তী, একে আনাম, জামালউদ্দিন হাসান বান্না, হিমাংশু বিশ্বাস, সুবল দত্ত প্রমুখ অনেকেই। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার দলকে বঙ্গভবনে সেখানে তার দলের গান শুনে তিনি অভিভূত হয়ে পড়েন। তখন বিদিত লাল দাস “আমি কেমন করে পত্র লিখি রে” এই গানটি যখন গাইছিলেন, তখন মঞ্চে উঠে দর্শকের সারিতে বসে থাকা পল্লীকবি জসিম উদ্দিন, তিনি বিদিত লাল দাসের গানের কন্ঠে শাশ্বত সুন্দর রূপ খুঁজে পান এবং নিজের গলার ফুলের মালা খুলে তাঁর গলায় পরিয়ে দিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরেন।
তার সুরকৃত গানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল “কারে দেখাবো মনের দুঃখ গো”, “সিলেট প্রথম আজান ধ্বনি”, “প্রাণ কান্দে মোর”, “মরিলে কান্দিসনে আমার দায়”, “সাধের লাউ বানাইলো মোরে বৈরাগী”, ও “আমি কেমন করে পত্র লিখি”। তিনি সিরাজউদ্দৌলা, দ্বীপান্তর, তপসী, প্রদীপশিখা, বিসর্জন, ও সুরমার বাঁকে বাঁকে নাটকের সংগীত পরিচালনা করেছেন। তার সফল্যের মধ্যে  বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি গুণীজন পুরস্কার,
কলকাতায় ভারতীয় লোক সংবর্ধনা, সিলেট লোকসঙ্গীত পরিষদ পুরস্কার, নজরুল একাডেমি পুরস্কার, রাগীব রাবেয়া ফাউন্ডেশন একুশে পদক, বাংলাদেশ শিল্পকলাএকাডেমি গুনীজন সংবর্ধনা, জাতীয় রাধারমণ দত্ত পদক (মরনোত্তর) হাসন রাজা পদক (মরনোত্তর) উল্লেখযোগ্য। ২০১২ সালের ৮ অক্টোবর তিনি ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। বিদিত লাল দাস ১৯৬৮ সালে কনক রানী দাসের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পত্তির একমাত্র সন্তান বিশ্বদীপ লাল দাস। বিজ্ঞপ্তি

ট্যাগঃ
জনপ্রিয় সংবাদ

মুক্তিযুদ্ধা সংগঠক আব্দুর রাজ্জাকের ইন্তেকাল।। বিশিষ্টজনের শোক প্রকাশ

একুশে পদক পেলেন সিলেটের প্রয়াত কিংবদন্তি লোকসংগীত শিল্পী বিদিত লাল দাস

প্রকাশিত হয়েছেঃ ০২:৪৬:০৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
print news -

একুশে পদক পেলেন সিলেটের প্রয়াত কিংবদন্তি লোকসংগীত শিল্পী বিদিত লাল দাস (মরণোত্তর) চলতি বছর (২০২৪) একুশে পদক পাচ্ছেন। মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একুশে পদকের জন্য মনোনীতদের নাম ঘোষণা করা হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলার গুণী লোকবকবিদের সব লোকগান সংগ্রহ ও সুর সংযোজনের মাধ্যমে এক ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন শ্রী বিদিত লাল দাস।
তিনি হাছন রাজা, রাধারমণ দত্ত ও গিয়াস উদ্দিনসহ অনেক লোকসংগীত শিল্পীদের গানের সুর করেছেন।  বিদিত লাল ১৯৩৬ সালের ১৫ জুন সিলেটের শেখঘাটে সম্ভ্রান্ত জমিদার লালব্রাদার্স হাউজ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬০ এর দশকের একজন অন্যতম বেতার গায়ক।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে লোকসংগীতের প্রচার ও প্রসারের লক্ষ্যে গঠন করা বিদিতলাল দাস ‘বিদিতলাল দাস ও সঙ্গীরা’ নামের সংগীত দলটি সেই সময় বাংলাদেশ ও ভারতে বিভিন্ন সময় সংগীত পরিবেশন করে সংগীত পিপাসুদের অকুণ্ঠ প্রশংসা কুড়াতে সক্ষম হয়। তাঁর দলের অংশগ্রহন করা উল্লেখযোগ্য অনুষ্ঠানগুলো হচ্ছে-প্রথম সার্ক সম্মেলনে সঙ্গীত পরিবেশন, কলকাতার লোকভারতী আয়োজিত অনুষ্ঠান (১৯৮৮), কাছাড়ে অনুষ্ঠিত নিখিল বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলনে সংগীত পরিবেশন (১৯৮৯) প্রভৃতি। তার সেই দলে ছিলেন সুবীর নন্দী, রাসবিহারী চক্রবর্তী, রামকানাই দাশ, আকরামুল ইসলাম, হিমাংশু গোস্বামী, দুলাল ভৌমিক, রাখাল চক্রবর্তী, একে আনাম, জামালউদ্দিন হাসান বান্না, হিমাংশু বিশ্বাস, সুবল দত্ত প্রমুখ অনেকেই। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার দলকে বঙ্গভবনে সেখানে তার দলের গান শুনে তিনি অভিভূত হয়ে পড়েন। তখন বিদিত লাল দাস “আমি কেমন করে পত্র লিখি রে” এই গানটি যখন গাইছিলেন, তখন মঞ্চে উঠে দর্শকের সারিতে বসে থাকা পল্লীকবি জসিম উদ্দিন, তিনি বিদিত লাল দাসের গানের কন্ঠে শাশ্বত সুন্দর রূপ খুঁজে পান এবং নিজের গলার ফুলের মালা খুলে তাঁর গলায় পরিয়ে দিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরেন।
তার সুরকৃত গানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল “কারে দেখাবো মনের দুঃখ গো”, “সিলেট প্রথম আজান ধ্বনি”, “প্রাণ কান্দে মোর”, “মরিলে কান্দিসনে আমার দায়”, “সাধের লাউ বানাইলো মোরে বৈরাগী”, ও “আমি কেমন করে পত্র লিখি”। তিনি সিরাজউদ্দৌলা, দ্বীপান্তর, তপসী, প্রদীপশিখা, বিসর্জন, ও সুরমার বাঁকে বাঁকে নাটকের সংগীত পরিচালনা করেছেন। তার সফল্যের মধ্যে  বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি গুণীজন পুরস্কার,
কলকাতায় ভারতীয় লোক সংবর্ধনা, সিলেট লোকসঙ্গীত পরিষদ পুরস্কার, নজরুল একাডেমি পুরস্কার, রাগীব রাবেয়া ফাউন্ডেশন একুশে পদক, বাংলাদেশ শিল্পকলাএকাডেমি গুনীজন সংবর্ধনা, জাতীয় রাধারমণ দত্ত পদক (মরনোত্তর) হাসন রাজা পদক (মরনোত্তর) উল্লেখযোগ্য। ২০১২ সালের ৮ অক্টোবর তিনি ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। বিদিত লাল দাস ১৯৬৮ সালে কনক রানী দাসের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পত্তির একমাত্র সন্তান বিশ্বদীপ লাল দাস। বিজ্ঞপ্তি