প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে জার্মানির পশ্চিমাঞ্চল ও বেলজিয়ামে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ১৫৭ জনে। এর মধ্যে জার্মানিতে মারা গেছেন ১৩৩ জন এবং বেলজিয়ামে মারা গেছেন ২৪ জন।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জার্মানিতে গত ৫০ বছরে এর চেয়ে ভয়াবহ বন্যা দেখা যায়নি। পশ্চিম জার্মানির অনেক শহরে বন্যার পানি এখনও বিপদসীমার অনেক উপর দিয়ে বইছে ও ঘরবাড়ি ভেঙে পড়া অব্যাহত আছে।
শনিবার পুলিশের করা এক হিসাব অনুযায়ী, দেশটির কোলন শহরের দক্ষিণে আরউইলার জেলায় প্রায় ৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
প্রবল বর্ষণ ও শুক্রবার কোলোনের নিকটবর্তী শহর ওয়াসেনবার্গের একটি বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ফলে জার্মানিতে দেখা দিয়েছে এই ভয়াবহ বন্যা। শহরটি থেকে ইতোমধ্যে ৭০০ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে ওয়াসেনবার্গের মেয়র মার্সের মাউরার রয়টার্সকে বলেন, ‘গতরাত থেকে পানির স্তর আর বাড়েনি। সুতরাং আমরা বলতে পারি, পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল আছে। এটা সত্যি যে, এখনও আশাবাদী হওয়ার সময় আসেনি, কিন্তু তারপরও আমরা আশা করছি পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে।’
এদিকে, পশ্চিম জার্মানির স্টেইনবাস্টাল বাঁধটিও ভেঙে পড়ার ঝুঁকিতে আছে। শহরটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বাঁধের চারপাশের প্রায় সাড়ে ৪ হাজার বাসিন্দাকে ইতোমধ্যে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
বন্যায় রিনেল্যান্ড পালাটিনাটে এবং নথস রিনে-ভেসপালিয়া রাজ্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত বেশ কয়েকদিন ধরে পুরো অঞ্চলের জনবসতিগুলো বিদ্যুৎবিহীন ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে।
বন্যায় প্রতিবেশী বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডের কিছু অংশও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেলজিয়ামে ২৪ জনের জ
নের মৃত্যু হয়েছে, নিখোঁজ আছেন অন্তত ২০ জন। নেদারল্যান্ডে এখনও হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
জার্মানির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক-ভল্টার স্টাইনমায়ার ও নথস রিনে-ভেসপালিয়া রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আর্মিন লাশেতের শনিবার অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত শহর এফস্ট্যাড পরিদর্শনের কথা।
বন্যায় নিহতদের প্রতি শোক জানিয়ে জার্মানির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক-ভল্টার স্টাইনমায়ার বলেছেন, ‘এই ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের পরিবারের সদস্যদের মতো আমরাও বেদনার্ত। তাদের এই মর্মান্তিক নিয়তি আমাদের হৃদয়কে দুমড়ে-মুচড়ে দিয়েছে।
বিজ্ঞানীরা অনেকদিন ধরে বলে আসছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অস্বাভাবিক ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। কিন্তু জার্মানির এই টানা প্রবল বর্ষণের ক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তনের ভূমিকা নির্ধারণ করতে গবেষণায় অন্তত কয়েক সপ্তাহ লেগে যেতে পারে বলে শুক্রবার বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন।
সূত্র : রয়টার্স
মন্তব্য করুন