০৬:৩৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বোধন করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী

print news -

নিউজ ডেস্ক: অযোধ্যায় হিন্দুদের জনপ্রিয় দেবতা রামের নামে তৈরি করা বিশাল মন্দিরের উদ্বোধন করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

সোমবার মন্দিরের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আয়োজিত ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে অংশ নেন মোদী। এ সময় রামমন্দিরের প্রধান কক্ষে রামের মূর্তির চোখের বাঁধন খুলে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম। এর মাধ্যমে বিগ্রহের ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’ সম্পন্ন হয়। মোদী এতে নেতৃত্ব দেন।

এ সময় মোদীর সঙ্গে ছিলেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, উত্তর প্রদেশের রাজ্যপাল আবন্দীবেন প্যাটেল, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএএস) প্রধান মোহন ভাগবত। মোদী হাতে পদ্মফুল নিয়ে পুজা করেন বলে আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে।

এনডিটিভি বলেছে, আরএসএস ভারতের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) আদর্শিক পরামর্শদাতা। অনুষ্ঠানে মোদী ও ভাগবত পরস্পর পাশাপাশি বসে থাকার মধ্যেম (যা গণমাধ্যমে সরাসরি প্রদর্শিত হয়েছে) রাম মন্দির বিজেপি-আরএসএসের যৌথ প্রকল্প বলে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।

এদিন স্থানীয় সময় সকাল ১০টার পর মোদী অযোধ্যায় পৌঁছান। এ সময় তাকে বহনকারী হেলিকপ্টার থেকে নেওয়া অযোধ্যার একটি ভিডিও শেয়ার করেন মোদী।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মূল পর্ব শেষে রামমন্দির থেকে বের হয়ে মন্দির চত্বরে ১১ দিনের উপোষ ভাঙেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী। এখানে হাত জোড় করে উপস্থিত অতিথিদের স্বাগত জানান তিনি।

এক সময় এই স্থানটিতে একটি মসজিদ ছিল। ১৬ শতকে নির্মিত মসজিদটির নাম ছিল বাবরি মসজিদ। ১৯৯২ সালে কট্টরপন্থি হিন্দু জনতা মসজিদটি গুড়িয়ে দেওয়ার পর সৃষ্ট দাঙ্গায় প্রায় ২০০০ মানুষ নিহত হয়েছিল। রাম যেখানে জন্মেছিলেন ঠিক সেই জায়গায় এই হিন্দু দেবতার একটি মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের ওপরে মুসলিম ‘আক্রমণকারীরা’ মসজিদটি নির্মাণ করেছিল বলে দাবি তাদের।

এই মন্দির নির্মাণ মোদীর হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) একটি কেন্দ্রীয় প্রতিশ্রুতি। ৩৫ বছরের পুরনো এই বিতর্কিত রাজনৈতিক ইস্যুতে ভর করেই বিজেপি প্রাধান্য বিস্তার করেছে ও ক্ষমতায় এসেছে, জানিয়েছে রয়টার্স।

মন্দির উদ্বোধনের এই বিশাল আয়োজন থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রেখেছেন ভারতের কিছু হিন্দু ধর্মগুরু ও অধিকাংশ বিরোধীদল। রাজনৈতিক লাভের জন্য মোদী এই মন্দির নির্মাণ ও এর উদ্বোধনকে ব্যবহার করছেন বলে মত তাদের।

বিবিসি জানিয়েছে, ৭০ একরের একটি কমপ্লেক্সের ৭ দশমিক ২ একর জায়গাজুড়ে তিন তলা মন্দিরটি বানানো হয়েছে। নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে গোলাপি চুনাপাথর ও কালো গ্রানাইট পাথর। আর এতে ব্যয় হয়েছে ২১ কোটি ৭০ লাখ রুপি।

মোদী শুধু মন্দিরের নিচ তলাটি উদ্বোধন করেছেন। মন্দিরের বাকি অংশেরর নির্মাণ কাজ চলতি বছরের শেষ নাগাদ সম্পন্ন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সোমবার রামমন্দিরের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে অযোধ্যায় ব্যাপক আয়োজন করা হয়েছে। ভারতের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা প্রায় ৮০০০ আমন্ত্রিত অতিথি উদ্বোধনের সময় উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে চলচ্চিত্র তারকা, শিল্পপতি ও ক্রিকেট তারকারাও রয়েছেন।

সোমবার উদ্বোধন হলেও এদিন শুধু আমন্ত্রিত অতিথিরা মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন। সাধারণ দর্শনার্থীরা মঙ্গলবার থেকে সকাল ও বিকালে নির্ধারিত সময়ে মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

মুক্তিযুদ্ধা সংগঠক আব্দুর রাজ্জাকের ইন্তেকাল।। বিশিষ্টজনের শোক প্রকাশ

অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বোধন করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত হয়েছেঃ ১০:৪০:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৪
print news -

নিউজ ডেস্ক: অযোধ্যায় হিন্দুদের জনপ্রিয় দেবতা রামের নামে তৈরি করা বিশাল মন্দিরের উদ্বোধন করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

সোমবার মন্দিরের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আয়োজিত ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে অংশ নেন মোদী। এ সময় রামমন্দিরের প্রধান কক্ষে রামের মূর্তির চোখের বাঁধন খুলে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম। এর মাধ্যমে বিগ্রহের ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’ সম্পন্ন হয়। মোদী এতে নেতৃত্ব দেন।

এ সময় মোদীর সঙ্গে ছিলেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, উত্তর প্রদেশের রাজ্যপাল আবন্দীবেন প্যাটেল, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএএস) প্রধান মোহন ভাগবত। মোদী হাতে পদ্মফুল নিয়ে পুজা করেন বলে আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে।

এনডিটিভি বলেছে, আরএসএস ভারতের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) আদর্শিক পরামর্শদাতা। অনুষ্ঠানে মোদী ও ভাগবত পরস্পর পাশাপাশি বসে থাকার মধ্যেম (যা গণমাধ্যমে সরাসরি প্রদর্শিত হয়েছে) রাম মন্দির বিজেপি-আরএসএসের যৌথ প্রকল্প বলে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।

এদিন স্থানীয় সময় সকাল ১০টার পর মোদী অযোধ্যায় পৌঁছান। এ সময় তাকে বহনকারী হেলিকপ্টার থেকে নেওয়া অযোধ্যার একটি ভিডিও শেয়ার করেন মোদী।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মূল পর্ব শেষে রামমন্দির থেকে বের হয়ে মন্দির চত্বরে ১১ দিনের উপোষ ভাঙেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী। এখানে হাত জোড় করে উপস্থিত অতিথিদের স্বাগত জানান তিনি।

এক সময় এই স্থানটিতে একটি মসজিদ ছিল। ১৬ শতকে নির্মিত মসজিদটির নাম ছিল বাবরি মসজিদ। ১৯৯২ সালে কট্টরপন্থি হিন্দু জনতা মসজিদটি গুড়িয়ে দেওয়ার পর সৃষ্ট দাঙ্গায় প্রায় ২০০০ মানুষ নিহত হয়েছিল। রাম যেখানে জন্মেছিলেন ঠিক সেই জায়গায় এই হিন্দু দেবতার একটি মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের ওপরে মুসলিম ‘আক্রমণকারীরা’ মসজিদটি নির্মাণ করেছিল বলে দাবি তাদের।

এই মন্দির নির্মাণ মোদীর হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) একটি কেন্দ্রীয় প্রতিশ্রুতি। ৩৫ বছরের পুরনো এই বিতর্কিত রাজনৈতিক ইস্যুতে ভর করেই বিজেপি প্রাধান্য বিস্তার করেছে ও ক্ষমতায় এসেছে, জানিয়েছে রয়টার্স।

মন্দির উদ্বোধনের এই বিশাল আয়োজন থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রেখেছেন ভারতের কিছু হিন্দু ধর্মগুরু ও অধিকাংশ বিরোধীদল। রাজনৈতিক লাভের জন্য মোদী এই মন্দির নির্মাণ ও এর উদ্বোধনকে ব্যবহার করছেন বলে মত তাদের।

বিবিসি জানিয়েছে, ৭০ একরের একটি কমপ্লেক্সের ৭ দশমিক ২ একর জায়গাজুড়ে তিন তলা মন্দিরটি বানানো হয়েছে। নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে গোলাপি চুনাপাথর ও কালো গ্রানাইট পাথর। আর এতে ব্যয় হয়েছে ২১ কোটি ৭০ লাখ রুপি।

মোদী শুধু মন্দিরের নিচ তলাটি উদ্বোধন করেছেন। মন্দিরের বাকি অংশেরর নির্মাণ কাজ চলতি বছরের শেষ নাগাদ সম্পন্ন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সোমবার রামমন্দিরের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে অযোধ্যায় ব্যাপক আয়োজন করা হয়েছে। ভারতের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা প্রায় ৮০০০ আমন্ত্রিত অতিথি উদ্বোধনের সময় উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে চলচ্চিত্র তারকা, শিল্পপতি ও ক্রিকেট তারকারাও রয়েছেন।

সোমবার উদ্বোধন হলেও এদিন শুধু আমন্ত্রিত অতিথিরা মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন। সাধারণ দর্শনার্থীরা মঙ্গলবার থেকে সকাল ও বিকালে নির্ধারিত সময়ে মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন।