মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তে হতাহতের ঘটনায় রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাডেমিক ভবনে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ঘটে যায় এক ভয়াবহ দুর্ঘটনা। সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর ১টা ৬ মিনিটে বিমানটি উড্ডয়ন করলেও সঙ্গে সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাইলস্টোন স্কুলের ভবনে আছড়ে পড়ে। বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আগুন লেগে যায় এবং এতে অন্তত ১৯ জন নিহত ও অর্ধশতাধিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। আহতদের মধ্যে বেশির ভাগই স্কুলের শিক্ষার্থী।
দুর্ঘটনার পর উদ্ধারকাজে নিয়োজিত হন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ৯টি ইউনিট এবং ৬টি অ্যাম্বুলেন্স। পাশাপাশি বিজিবির দুই প্লাটুন ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও উদ্ধারকাজে সহায়তা করে। আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট, উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। বার্ন ইউনিটে নেওয়া অনেক আহতের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার কারণে রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দেশের সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। একইভাবে সব সরকারি ও বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনেও জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই দিন দেশের সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে নিহত ও আহতদের জন্য বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, “বিমানসেনা ও মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক-কর্মচারীসহ যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তা অপূরণীয়। জাতির জন্য এটি গভীর বেদনার ক্ষণ। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলার নির্দেশ প্রদান করছি।”
মাইলস্টোন স্কুলের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহ বুলবুল জানান, বিমানটি কলেজের একাডেমিক ভবনের গেটের কাছে আছড়ে পড়েছে। ওই ভবনে তখন ক্লাস চলছিল। একের পর এক আহতদের উদ্ধার করে নেয়া হচ্ছিল। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় রক্তদানে সাধারণ মানুষের সহায়তা চাওয়া হয়।