ঢাকায় বিমান বিধ্বস্তে নিহত ১৯, আহত বহু শিক্ষার্থী

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ঘটে গেল এক হৃদয়বিদারক দুর্ঘটনা। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান কলেজ ভবনের ওপর ভেঙে পড়লে ঘটনাস্থলে ছড়িয়ে পড়ে আগুন ও আতঙ্ক। এই মর্মান্তিক ঘটনায় এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ১৯ জন এবং আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক মানুষ। আহতদের মধ্যে অনেকেই শিশু ও স্কুল শিক্ষার্থী।
ঘটনার ভয়াবহতা বিবেচনায় এটিকে সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম বড় দুর্ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ জাহেদ কামাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নিশ্চিত করেছেন মৃত্যুর এই সংখ্যা। তিনি জানান, দুর্ঘটনার পরপরই ৯টি ইউনিট ও ৬টি অ্যাম্বুলেন্স উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নেয়।
বিধ্বস্ত হওয়ার এই ঘটনা ঘটে সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর সোয়া ১টার দিকে। আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, বিমানটি উড্ডয়ন করে বেলা ১টা ৬ মিনিটে। কিছু সময় পরই এটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে আছড়ে পড়ে। এতে সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায় বিমান এবং ভবনটিতে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্ঘটনার পর কলেজ প্রাঙ্গণে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক ও বিভ্রান্তি। প্রথম আলোর প্রতিবেদক মাহমুদুল হাসান বিকেল ৪টার দিকে জানান, দুর্ঘটনাস্থলে উৎসুক জনতার ভিড়ের পাশাপাশি অ্যাম্বুলেন্সের অবিরাম যাতায়াত চলছিল। কলেজ ভবন থেকে হতাহতদের বের করে দ্রুত বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছিল। সেই সময় থেকেই আহতদের জন্য রক্ত সংগ্রহের অনুরোধ জানানো হয়।
ঘটনায় আহতদের অনেকেই বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছেন জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে। তাদের অনেকেই দগ্ধ, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি।
এই দুর্ঘটনার পেছনে কী কারণ রয়েছে তা এখনও নিশ্চিত করে বলা না গেলেও তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে ঘটনাস্থলে তদন্ত টিম কাজ শুরু করেছে। বিমান বিধ্বস্তের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপস্থিত অসংখ্য শিক্ষার্থীর জীবন মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছে—এমন ঘটনাকে কেন্দ্র করে জাতীয় পর্যায়ে শোক ও ক্ষোভ উভয়ই ছড়িয়ে পড়েছে।