গোপালগঞ্জে সংঘর্ষের ঘটনায় ৪৭৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংস সংঘর্ষের ঘটনায় পাঁচজন নিহত ও শতাধিক আহত হওয়ার পর পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি পোড়ানো ও ভাঙচুরের অভিযোগে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করেছে পুলিশ। মামলায় ৭৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। শুক্রবার (১৮ জুলাই) সকালে সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক আহম্মদ আলী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির মো. সাজেদুর রহমান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। একইসঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ড. রুহুল আমিন সরকার জানান, ইতোমধ্যে অর্ধশতাধিক সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বাকি আসামিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
এর আগে বুধবার (১৬ জুলাই) ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’র অংশ হিসেবে গোপালগঞ্জে সমাবেশের আয়োজন করে এনসিপি। শহরের পৌর পার্ক এলাকায় সমাবেশ শুরুর আগে থেকেই এলাকাজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। কেন্দ্রীয় নেতারা সমাবেশস্থলে পৌঁছানোর আগেই আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সেখানে হামলা চালায় বলে অভিযোগ করে এনসিপি। সমাবেশ শেষ হওয়ার পর ফেরার পথে তাদের গাড়িবহরেও হামলা হয়।
এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে হামলাকারীরা। সংঘর্ষে পুড়িয়ে দেওয়া হয় পুলিশের গাড়ি, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয় বিভিন্ন স্থানে। প্রাণ হারান পাঁচজন, আহত হন পুলিশ সদস্য, সাংবাদিকসহ শতাধিক মানুষ।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রথমে ১৪৪ ধারা জারি করা হলেও সহিংসতা অব্যাহত থাকায় বুধবার রাত আটটা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত গোপালগঞ্জে কারফিউ জারি করে সরকার। পরবর্তীতে কারফিউয়ের সময়সীমা বাড়ানো হয়।
পুলিশের মামলায় ছাত্রলীগের গোপালগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান পিয়ালের নামও উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ঘটনার তদন্তে একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে।
এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা অভিযোগ করেছেন, গোপালগঞ্জে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে তা ভণ্ডুল করা হয়েছে। ঘটনার পরপরই তারা সেনা-পুলিশের নিরাপত্তায় গোপালগঞ্জ ছেড়ে খুলনার দিকে রওনা হন।
সাম্প্রতিক এই সংঘর্ষ এবং পুলিশি পদক্ষেপ এনসিপির জুলাই কর্মসূচিকে ঘিরে দেশের রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।