মধ্যপ্রাচ্যে সংকটে ট্রাম্পের গোপন পদক্ষেপ: কী সেই ‘বড় কিছু’?

মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই কানাডায় অনুষ্ঠিত জি-৭ সম্মেলন অসমাপ্ত রেখে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে গেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যখন নানা জল্পনা চলছে, তখন ট্রাম্প নিজেই জানিয়েছেন—এই সফর সংক্ষিপ্ত করার পেছনে যুদ্ধবিরতির কোনো বিষয় নেই, বরং এর পেছনে রয়েছে “আরও বড় কিছু”।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এর আগে মন্তব্য করেছিলেন যে, ইসরায়েল-ইরানের মধ্যে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনার জন্য ট্রাম্প ওয়াশিংটনে ফিরে গেছেন। তবে ট্রাম্প এই মন্তব্য নাকচ করে বলেন, “ম্যাক্রোঁ জানেনই না আমি কেন ফিরে যাচ্ছি। তবে এটা নিশ্চিত যে যুদ্ধবিরতির জন্য নয়, বরং তার থেকেও বড় কিছুর জন্য।”
মঙ্গলবার (১৭ জুন) যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় রাত সোয়া ১টায় এয়ার ফোর্স ওয়ানে উঠার কিছুক্ষণ পর নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ ট্রাম্প লেখেন, “ইচ্ছাকৃতভাবে হোক কিংবা ভুলবশত, ম্যাক্রোঁ সবসময় ভুল ব্যাখ্যা করে থাকেন। অপেক্ষা করুন!” — এই মন্তব্যে ভবিষ্যতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ আসছে বলে ধারণা জোরদার হয়।
এই বক্তব্যের পরই হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মধ্যপ্রাচ্যের সংকটময় পরিস্থিতির কারণে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জি-৭ সম্মেলন ত্যাগ করেছেন। প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেন, “প্রেসিডেন্ট অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় দেখভালের জন্য ওয়াশিংটনে ফিরে যাচ্ছেন।”
এদিকে তেহরানের সাধারণ জনগণকে শহর ছেড়ে চলে যেতে বলার বিষয়ে ট্রাম্প জানান, “ইরানের পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকার পাওয়া উচিত ছিল না। আমি বারবার বলেছি, এটা মানবজীবনের জন্য ভয়ানক হুমকি। এখন জরুরি ভিত্তিতে তেহরান খালি করা প্রয়োজন।”
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে। তার ভাষায়, “যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে বড় আকারের আলোচনার পথ খোলা সম্ভব। তবে এখন দেখতে হবে, সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো সেই প্রস্তাবে সাড়া দেয় কি না।”
তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, “ইরানের ধর্মীয় শাসনব্যবস্থা উৎখাতের উদ্দেশ্যে ইসরায়েল যদি হামলা চালায়, তাহলে সেটা হবে কৌশলগত ভুল। বাইরে থেকে চাপ দিয়ে কোনো দেশকে নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে চালানো যায়—এই ধারণা সবসময়ই ভুল প্রমাণিত হয়েছে।”
ইরান-ইসরায়েল পাল্টাপাল্টি হামলার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ে এমন গোপন তৎপরতা আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ ও আগ্রহ দুটোই বাড়িয়ে দিয়েছে। যদিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এখনো তার “আরও বড় কিছু”-এর ব্যাখ্যা প্রকাশ করেননি, তবে তার মন্তব্য এবং মধ্যপ্রাচ্যকে কেন্দ্র করে নেওয়া পদক্ষেপ ইঙ্গিত দিচ্ছে, ভবিষ্যৎ দিনে এই অঞ্চলে বড় ধরনের কূটনৈতিক বা সামরিক পদক্ষেপের সম্ভাবনা রয়েছে।