সংকট-দখলদারিত্ব-অনিয়মে জর্জরিত ময়মনসিংহ নগরী

ময়মনসিংহ শহরে যানজট যেন নিত্যদিনের অভিশাপ। অফিস সময়ে প্রধান সড়কগুলোতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হয় সাধারণ মানুষকে। শিক্ষার্থীদের দেরি করে পৌঁছাতে হয় বিদ্যালয়ে, কর্মজীবীরা হারান মূল্যবান সময়, ব্যবসায়ীদেরও ক্ষতি গুনতে হয়। শহরের বাতিরকল মোড়, গাঙ্গিনারপাড়, শম্ভুগঞ্জ ব্রিজ এলাকা থেকে শুরু করে নগরীর প্রবেশ ও বের হওয়ার প্রায় প্রতিটি পয়েন্টেই যানজট এখন নিত্যদিনের দৃশ্য।
এই দুরবস্থার মাঝেই আশার আলো হয়ে মাঠে নেমেছেন জেলা ট্রাফিক বিভাগের টিআই (প্রশাসন) আবু নাছের মোহাম্মদ জহির। প্রতিদিন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে তিনি শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে অবস্থান করে যানজট নিরসনে কাজ করছেন। কোথাও নিজ হাতে গাড়ি থামাচ্ছেন, কোথাও পথচারীদের নিরাপদ পারাপারে সহায়তা করছেন। তার উপস্থিতি ও তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে অনেক সময় বড় ধরনের যানজট দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসে। স্থানীয়রা বলছেন, টিআই জহির একজন সৎ, দক্ষ ও চৌকস পুলিশ অফিসার। ব্যক্তি জীবনেও তিনি একজন নিরহঙ্কারী মানুষ, যিনি দায়িত্বকে বোঝা নয়, বরং সেবার সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছেন। তার এই প্রচেষ্টায় ইতিমধ্যে শহরবাসীর মধ্যে আস্থা তৈরি হয়েছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, একজন কর্মকর্তার একক উদ্যোগ দিয়ে নগরীর যানজট পুরোপুরি সমাধান সম্ভব নয়। শহরের সড়ক অবকাঠামো অপর্যাপ্ত, ফুটপাতে দখলদারিত্ব রয়েছে, হাট-বাজার ও গণপরিবহনের অনিয়মতাও মারাত্মক। ট্রাফিক পুলিশের প্রতিটি সদস্যকে সমানভাবে দায়িত্বশীল হতে হবে। পাশাপাশি নগর কর্তৃপক্ষ, পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠন ও প্রশাসনের সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। শহরবাসীর অভিমত, ট্রাফিক বিভাগের পাশাপাশি সরকারি পর্যায় থেকে যদি অবকাঠামো উন্নয়ন, ফুটপাত দখলমুক্তকরণ এবং গণপরিবহনের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তবে ময়মনসিংহ শহরের দীর্ঘদিনের যানজট সমস্যা অনেকাংশে লাঘব হবে।
ময়মনসিংহবাসীর প্রত্যাশা—সরকার দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ নেবে এবং ট্রাফিক টিআই জহিরের মতো নিবেদিতপ্রাণ কর্মকর্তাদের প্রচেষ্টা সঠিক সমর্থন পেলে নগরীর চিত্র পাল্টে যাবে।