থালাপতি বিজয়ের সমাবেশে পদদলিত হয়ে ৩৯ জনের মৃত্যু

ভারতের তামিলনাড়ুতে অভিনেতা থেকে রাজনীতিতে আসা থালাপতি বিজয়ের রাজনৈতিক সমাবেশে পদদলিত হয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় অন্তত ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৪৬ জন। এনডিটিভি জানিয়েছে, এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) কারুর জেলায়।
স্থানীয় পুলিশ জানায়, বিজয়ের রাজনৈতিক সমাবেশে ৩০ হাজারের বেশি মানুষ ভিড় করেছিলেন। দুপুরের দিকে সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তিনি প্রায় সাত ঘণ্টা দেরিতে সেখানে পৌঁছান। দীর্ঘ অপেক্ষা, প্রচণ্ড গরম ও পানীয় জল-খাবারের সংকটে ভিড়ের মধ্যে অসহায় পরিস্থিতি তৈরি হয়। সন্ধ্যার পর মঞ্চমুখী ব্যারিকেডের দিকে একসঙ্গে হাজারো মানুষ ধাক্কা দিলে অনেকে পড়ে যান এবং পদদলিত হয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
ঘটনার বেশ কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা যায়, মানুষ হুড়োহুড়ি করে সামনে যাওয়ার সময় অনেকে পড়ে যান, কেউ কেউ শ্বাসকষ্টে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। সে সময় বিজয় বক্তৃতা বন্ধ করে দেন এবং ভিড়ের দিকে পানির বোতল ছুড়ে দেন। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার আগেই প্রাণহানি ঘটে।
তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিন গভীর শোক প্রকাশ করে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অরুণা জগদেশনের নেতৃত্বে একটি কমিশন গঠন করে তদন্ত শুরু হয়েছে। নিহতদের পরিবারকে ১০ লাখ রুপি এবং আহতদের প্রত্যেককে ১ লাখ রুপি আর্থিক সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে রাজ্য সরকার।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক শোকবার্তায় ঘটনাটিকে বেদনাদায়ক বলে অভিহিত করেছেন। এদিকে সমাবেশ শেষ হওয়ার পর বিজয় সরাসরি ট্রিছি বিমানবন্দরে চলে যান এবং চেন্নাই পৌঁছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোকবার্তায় লিখেছেন—“আমার হৃদয় ভেঙে গেছে। আমি ভাষায় বর্ণনা করা যায় না এমন যন্ত্রণায় আছি। নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করি।”
পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সমাবেশের জন্য শুরুতে যে স্থানের অনুমতি নেওয়া হয়েছিল, সেটি সংকীর্ণ হওয়ায় অনুমতি দেওয়া হয়নি। পরে ভিন্ন স্থানে অনুমতি দেওয়া হয়। অনুমান ছিল, সমাবেশে সর্বোচ্চ ১০ হাজার মানুষ আসবেন, কিন্তু সেখানে উপস্থিত হন ২৭ হাজারের বেশি মানুষ। এই নিয়ন্ত্রণহীন ভিড়ই শেষ পর্যন্ত দুর্ঘটনায় রূপ নেয়।