নিষেধাজ্ঞা দিলে পরমাণু চুক্তি বাতিল, কঠোর হুঁশিয়ারি ইরানের

পরমাণু প্রকল্পকে ঘিরে জাতিসংঘ যদি ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে, তাহলে জাতিসংঘের সঙ্গে স্বাক্ষরিত পরমাণু অস্ত্র নিরোধ বিষয়ক চুক্তি নন-প্রলিফারেশন ট্রিটি (এনপিটি) বাতিলের কঠোর বার্তা দিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাগচি।
শুক্রবার বার্তা সংস্থা রয়াটার্স এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত জুন মাসে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংঘাতের পর জাতিসংঘের পরমাণু প্রকল্প পর্যবেক্ষণ সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি (আইএইএ) ইরানের পরমাণু প্রকল্প নিয়ে তেহরানের সঙ্গে বৈঠকের আগ্রহ প্রকাশ করে। ইরানের ইসলামপন্থি সরকারের পক্ষ থেকে আইএইএকে শর্ত দেওয়া হয় যে জাতিসংঘের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক হবে, কিন্তু প্রতিনিধিদের পরমাণু প্রকল্প সরেজমিনে প্রদর্শনের অনুমতি দেবে না তেহরান। এই অবস্থায় আইএইএ এবং তেহরানের মধ্যে মধ্যস্থতার জন্য এগিয়ে আসে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং জার্মানি; তবে এই মধ্যস্থতার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। উপরন্তু ইরানের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত জ্যাকোপা চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ তোলে।
আইএইএ-এর সঙ্গে দ্বন্দ্ব এবং যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানির অভিযোগকে আমলে নিয়ে ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারির সিদ্ধান্ত নেয় জাতিসংঘ। আগামী কাল শনিবার নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় রাত ১২ টা থেকে কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে এই নিষেধাজ্ঞা।
এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে জাতিসংঘের উদ্দেশে পোস্ট করা এক বার্তায় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাগচি বলেন, “জাতিসংঘ যদি কোনো প্রকার নিষ্ঠুর পদক্ষেপ নেয়, তাহলে (পরমাণু প্রকল্প নিয়ে) জাতিসংঘের সঙ্গে (ইরানের) যে কার্যকর প্রতিশ্রুতি রয়েছে, তা থেকে সরে আসার ব্যাপারটি বিবেচনা করবে ইরান।”
গত ৬ জুন আইএইএ এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল- ইরান যে মাত্রার বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুত করেছে, তা দিয়ে অনায়াসেই পরমাণু বোমা বানানো সম্ভব। আইএইএ এই বিবৃতি দেওয়ার এক সপ্তাহের মাথায় ১৩ জুন দিবাগত রাতে ইরানে বিমান অভিযান ‘দ্য রাইজিং লায়ন’ শুরু করে ইসরায়েল। অভিযান শুরুর কিছুক্ষণ পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এক ভিডিওবার্তায় বলেছিলেন, জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থার বিবৃতিতে আমলে নিয়ে এ অভিযান শুরু হয়েছে। ১০ দিন সংঘাত চলার পর ইসরায়েলের সঙ্গে যোগ দেয় যুক্তরাষ্ট্রও।
১২ দিন সংঘাত চলার পর ২৬ জুন যুদ্ধ বিরতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান। তবে তার পর থেকেই জাতিসংঘের সঙ্গে জটিলতা শুরু হয় দেশটির।