বুধবার, ১ অক্টোবর ২০২৫, ১৭ আশ্বিন ১৪৩২
বুধবার, ১ অক্টোবর ২০২৫, ১৭ আশ্বিন ১৪৩২

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ৭০ শতাংশের বেশি মানুষ কমিউনিটি ক্লিনিকের ওপর নির্ভরশীল

অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: বুধবার, ২০ আগস্ট, ২০২৫, ৬:১৬ পিএম
দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ৭০ শতাংশের বেশি মানুষ কমিউনিটি ক্লিনিকের ওপর নির্ভরশীল

কমিউনিটি ক্লিনিককে আরও বেশি কার্যকর করতে নতুন বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। ইতিমধ্যেই ক্লিনিকে কর্মরত কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার বা সিএইচসিপিদের চাকরি রাজস্ব খাতে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বাকি উদ্যোগগুলো কার্যকর হলে এসব ক্লিনিক থেকেই রোগী রেফারেল সিস্টেম চালু হবে। প্রান্তিক মানুষ চিকিৎসার শুরুতেই তার রোগ শনাক্ত করতে পারবেন। সপ্তাহে দুই দিন দুই জন করে চিকিৎসক বসবেন কমিউনিটি ক্লিনিকে। তারা অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত রেফারেল রোগী দেখবেন।

এমনকি শুধু রোগের চিকিৎসায় নয়, রোগ প্রতিরোধ ও স্বাস্থ্যের উন্নয়ন নিয়ে বেশি কাজ করার পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট প্রবিধানমালা তৈরি ও নতুন করে কমিউনিটি ক্লিনিক সহায়তা ট্রাস্ট পুনর্গঠনের কাজ চলছে। প্রবিধান হলে ক্লিনিকে কর্মরত কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার বা সিএইচসিপিদের উপজেলা ও জেলা পর্যায় পর্যন্ত পদায়ন করা যাবে। আর ট্রাস্টের নতুন বোর্ড ক্লিনিকে কর্মরতদের বেতন ও অন্যান্য সুবিধাদি নিশ্চিতে কাজ করতে পারবে।

কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত সিএইচসিপি, সহায়তা ট্রাস্টের কর্মকর্তা এবং ক্লিনিক পুনর্গঠনের সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসক কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে দেশের কমিউনিটি ক্লিনিকের এই চিত্র পাওয়া গেছে।

অবশ্য এসব লোকজন কমিউনিটি ক্লিনিকের বেশ কিছু সংকটের কথা বলেছেন। তারা জানান, প্রশাসনিক জটিলতার কারণে গত ১৪ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না ৬৭১ জন সিএইচসিপি। সাড়ে পাঁচ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে ১৩ হাজার ৮৬১ জন সিএইচসিপির। প্রবিধান না থাকায় তাদের চাকরির সুরক্ষা নেই। এসব নিয়ে তারা ভীষণ হতাশ।

এমন অবস্থায় কমিউনিটি ক্লিনিককে আরও কার্যকর ও শক্তিশালী করতে আগামীকাল বুধবার রাজধানীতে এক সেমিনারের আয়োজন করেছে কমিউনিটি ক্লিনিক সহায়তা ট্রাস্ট। সেখানে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে নানা বিষয় আলোচনা হবে।

এ বিষয়ে কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আখতারুজ্জামান দেশ রূপান্তরকে বলেন, দেশে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় গত ৫৩  বছরে স্বাস্থ্য খাতে বড় সংস্কার এই কমিউনিটি ক্লিনিক। কারণ এটা শুধু ইউনিয়ন নয়, একেবারে ওয়ার্ড লেভেলেও স্বাস্থ্যসেবা। বাংলাদেশের ৭০ শতাংশ মানুষকে এখান থেকে প্রাথমিক বা প্রান্তিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হয়। জ্বর, সর্দি, কাশি, পেটের অসুখ, চুলকানিÑ এ ধরনের রোগের চিকিৎসা পান।

এই কর্মকর্তা আরও বলেন, আমরা রুট লেভেলে যদি স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারি, তা হলে স্বাস্থ্যসেবায় একটা বড় পরিবর্তন আসবে। কারণ আমরা ক্লিনিক বা হাসপাতালে যেতে চাই না, আমরা সুস্থ থাকতে চাই। এটাই আমাদের লক্ষ্য।

বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের শিশু সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. এস এম খালিদ মাহমুদ শাকিল দেশ রূপান্তরকে বলেন, প্রান্তিক মানুষের দ্বারে দ্বারে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে চাইলে ক্লিনিকের সেবাটা নিশ্চিত ও আরও শক্তিশালী করতে হবে। এটা পুনর্গঠন করতে হবে। কারণ কমিউনিটি ক্লিনিক শক্তিশালী হলে আমাদের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, অর্থাৎ একদম অজপাড়া গাঁয়ের মানুষকে চিকিৎসার জন্য অন্য কোথাও যেতে হবে না। এটা শক্তিশালী হলে গোটা দেশের মানুষের রোগের প্রাথমিক স্ক্রিনিং এখান থেকেই শুরু করা সম্ভব। সেটা করা গেলে ভবিষ্যৎ জটিলতা থেকে মুক্তি পেতে পারে। কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা না হলে রোগীকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে পাঠানো হবে। সেখানেও না হলে পাঠানো হবে জেলাপর্যায়ে হাসপাতালে। অর্থাৎ কমিউনিটি ক্লিনিককে শক্তিশালী করা গেলে এখান থেকেই চিকিৎসাসেবার বিভিন্ন তার খুলে যাবে।

সেবা পাচ্ছে ১৬ কোটি মানুষ : কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, এখানে আরেকটি বড় ঘটনা হলো এই ক্লিনিক থেকে প্রেসার বা ডায়াবেটিস শনাক্ত করে দেয়। ফলে গ্রামের মানুষ এসব রোগের চিকিৎসার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এসব ক্লিনিকে ২২ ধরনের ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে এখানকার রেফারেল সিস্টেম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ কোনো রোগীর যদি রোগ শনাক্ত করা যায়, তা হলে এই ক্লিনিক থেকেই সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এই কর্মকর্তা বলেন, আমাদের টার্গেট গ্রুপ গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের দরিদ্র মানুষ। এই লোকগুলোকে বিনাপয়সায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এই সংখ্যা ১৬ কোটি। প্রত্যন্ত অঞ্চলের  এই ১৬ কোটি মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এই কর্মকর্তা আরও বলেন, সরকার ২০১৮ সালে যে ট্রাস্ট গঠন করেছে, এটা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে ছিল। অধিদপ্তর তাদের অধীনস্থ ৩৭ হাজার চিকিৎসক নিয়ে নিজেরাই অচল অবস্থার মধ্যে আছে। উপজেলায় চিকিৎসক নেই, ইউনিয়নে তো নেই-ই, জেলাতেও নেই। চিকিৎসকরা শুধু ঢাকায় থাকতে চান। সেটাই অধিদপ্তর ম্যানেজ করতে পারছে না। তার ওপর তারা প্রাইমারি স্বাস্থ্যসেবাকে ম্যানেজ করতে চায়। সেটা কি করে সম্ভব? এখানে চিকিৎসক দরকার নেই। এখানে স্বাস্থ্যসেবায় প্রশিক্ষিত একজন দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মী দরকার। যে মানুষকে গাইড দেবেন স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কে। তারা নরমাল ডেলিভারিকে উৎসাহিত করবে।

বেতন নেই ১৪ মাস : হবিগঞ্জ সদর উপজেলা কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি এবং হবিগঞ্জ জেলা বাংলাদেশ সিএইচসিপি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও একই অ্যাসোসিয়েশনের সিলেট বিভাগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুর রশীদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ৫ আগস্ট- এর পর থেকে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো ভালই চলছে। বিগত সরকার আমাদের নিয়োগ দেওয়ার পর চাকরি স্থায়ীকরণ বা গ্রেড যুক্ত করা ও ইনক্রিমেন্ট দেওয়া এগুলো এই সরকার করছে। গত নভেম্বরে চাকরি স্থায়ীকরণের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে ট্রাস্টের অনুকূলে রাজস্ব খাতে নেওয়ার জন্য। সারা দেশে মোট কমিউনিটি ক্লিনিক ১৪ হাজার ও ১৩ হাজার ৯৬১ জন সিএইচসিপি। কিন্তু ২০২২ সালে নিয়োগ পাওয়া ৬৭১ জন সিএইচসিপির বেতন ১৪ মাস ধরে বন্ধ প্রশাসনিক জটিলতার কারণে। আর আমরা যারা পুরনো ১৩ হাজার ৮৬১ জন সিএইচসিপির বকেয়া বেতন রয়েছে পাঁচ মাসের। তারা এখন বেতন পাচ্ছেন ১৬ হাজার টাকার মতো। ফলে বেতন না পাওয়ায় সিএইচসিপিদের মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে।

ট্রাস্ট চাইলে বেতন দিতে পারে : কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের সভাপতি ও স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. আবু মুহাম্মদ জাকির হোসেন দেশ রূপান্তরকে বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ হবে না। বরং এটাকে পুনর্গঠন করা হচ্ছে।

এই কর্মকর্তা বলেন, যে সব সিএইচসিপির বেতন আটকে আছে, ট্রাস্টের পক্ষ থেকে আমরা বেতন দেওয়ার জন্য চিঠি দিয়েছি। অর্থ মন্ত্রণালয় কিন্তু সবার জন্য বেতন ছেড়ে দিয়েছে। এখন যেহেতু বোর্ড নেই, তাই বেতনের বিষয়টি সমাধান করা যাচ্ছে না। এখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বেতন দিতে গড়িমসি করছে। ট্রাস্ট চাইলে এখন বেতন দিতে পারে। ট্রাস্টের সব কাজই চলছে শুধু বকেয়া বেতন দিচ্ছে না। অথচ বেতনের সব প্রক্রিয়া শেষ, অর্থ মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যেই টাকা ছাড় করে দিয়েছে সবার জন্য। এখন ট্রাস্ট চাইলে বেতন দিতে পারে।

এই কর্মকর্তা আরও বলেন, আমি বলি ট্রাস্ট ভেঙে দিতে। ট্রাস্ট থাকার কোনো প্রয়োজন নেই। কমিউনিটি ক্লিনিকে যারা কাজ করেন তারা প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যার কর্মচারী। সেখানে স্বাস্থ্য সহকারী, পরিবার কল্যাণ সহকারী ও সিএইচসিপি আছেন। এই তিন জন মিলে একত্রে কাজ করার কথা। কিন্তু ট্রাস্ট করে এদের ভেঙে আলাদা করে দেওয়া হয়েছে। ফলে তাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই।

চাপ বেড়েছে মানুষের : আব্দুর রশীদ জানান, ১৯৯৮ সালে যখন কমিউনিটি ক্লিনিক তৈরি হয় তখন প্রতি ৬ হাজার জনসংখ্যার জন্য একটি ক্লিনিক ছিল। সে অনুযায়ী প্রতি ইউনিয়নে তিনটি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপিত হওয়ার কথা। কিন্তু এখন প্রতি ১০ হাজারের বেশি মানুষের জন্য একটি ক্লিনিক হয়েছে। অর্থাৎ চাপ বেড়েছে। চাপ সামাল দিতে সরকার আরও চার হাজার ক্লিনিক নির্মাণ করার পরিকল্পনা করেছে।

এই সিএইচসিপি বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। বছরে ১৫ কোটির বেশি মানুষ ১৫ কোটি বার সেবা নেয়, যা মোট জনগোষ্ঠীর ৭০ শতাংশ। এখন ২২ ধরনের ওষুধ দিচ্ছে। আগে এন্টিবায়োটিক দিত। এখন এন্টিবায়োটিক বন্ধ করে হাই প্রেসার ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য ওষুধ দিচ্ছে। নতুন সরকার আসার পর কারও চাকরি যায়নি নতুন কোনো নিয়োগও হয়নি।

এই কমিউনিটি ক্লিনিক নেতা বলেন, আমাদের দাবি হচ্ছে বকেয়া বেতনগুলো ছাড় দিতে হবে। এখন পর্যন্ত কোনো অর্গানোগ্রাম হয়নি। ট্রাস্ট চলমান করার জন্য যে প্রবিধান দরকার, এই প্রবিধান দ্বারা আমাদের চাকরি সুরক্ষা ও নিয়ন্ত্রিত হবে। সেই প্রবিধান দীর্ঘদিন ধরে হচ্ছে না। এ কারণে আমরা হতাশায় আছি।

সেবা পাচ্ছেন ৬ দিন : সিএইচসিপিরা জানান, সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত সপ্তাহে ৬ দিন (শনিবার হতে বৃহস্পতিবার) সকাল ৯ টা হতে বিকেল ৩ টা পর্যন্ত কমিউনিটি ক্লিনিক খোলা থাকে। কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) প্রতি কর্মদিবসে কমিউনিটি ক্লিনিকে উপস্থিত থেকে সেবাপ্রদান করেন এবং সিএইচসিপির পাশাপাশি স্বাস্থ্য সহকারী ও পরিবারকল্যাণ সহকারী প্রত্যেক সপ্তাহে ন্যূনতম ৩ দিন করে (পূর্ব পরিকল্পনা অনুসারে) কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবা প্রদান করেন।

কানাইঘাটে লাবণ্য সিতি ফাউন্ডেশনের শারদীয় উপহার সামগ্রী বিতরণ

কানাইঘাট প্রতিনিধি প্রকাশিত: বুধবার, ১ অক্টোবর, ২০২৫, ১২:৪০ এম
কানাইঘাটে লাবণ্য সিতি ফাউন্ডেশনের শারদীয় উপহার সামগ্রী বিতরণ

প্রতি বছরের ন্যায় এবারও কানাইঘাটের স্বনামধন্য সামাজিক কল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান লাবণ্য সিতি ফাউন্ডেশন-এর উদ্যোগে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় কানাইঘাট পৌরসভার নিজ চাউরা দক্ষিণ পূজা মণ্ডপ প্রাঙ্গণে এ মহতী আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট হোমিও চিকিৎসক ও ঐতিহ্যবাহী বামজঙ্গা কালী মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি ডা. মানিক লাল দাস। সঞ্চালনায় ছিলেন কানাইঘাট পৌর পূজা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাস্টার মিলন কান্তি দাস।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাবেক সভাপতি শ্রী দূর্গা কুমার দাস এবং প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঐক্য পরিষদের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাস্টার সলিল চন্দ্র দাস।

এছাড়া বক্তব্য রাখেন লাবন্য সিতি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি চিত্রশিল্পী ভানু লাল দাস, কানাইঘাট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রশিদ, পূজা পরিষদের সহ-সভাপতি বিশ্বজিৎ রায়, বিকাশ চন্দ্র দাস, প্রতাপ চন্দ্র দাস, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিধান চৌধুরী ও সুকান্ত চক্রবর্তী। স্বাগত বক্তব্য দেন নিজ চাউরা পূজা মণ্ডপ কমিটির সভাপতি মাস্টার দয়াময় দাস। অনুষ্ঠানে গীতা পাঠ করেন সনজিত চন্দ্র দাস।

বক্তারা তাদের বক্তব্যে চিত্রশিল্পী ভানু লাল দাসের মানবকল্যাণমূলক কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেন। সঞ্চালক মিলন কান্তি দাসও ফাউন্ডেশনের পূর্ববর্তী সমাজসেবামূলক কার্যক্রমের নানা দিক তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে চিত্রশিল্পী ভানু লাল দাস বলেন—
“মানুষের কল্যাণে আমি আমৃত্যু কাজ করে যেতে চাই। অবহেলিত ও বঞ্চিত কানাইঘাটবাসীর সেবা আমার দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমি সকলের সহযোগিতা কামনা করি।”

অনুষ্ঠানের শেষপর্যায়ে উপস্থিত পূণ্যার্থীদের মাঝে শারদীয় উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়।

“হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে বিএনপি ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে” — এম এ মতীন

মাহবুবুজ্জামান সেতু, নওগাঁ প্রতিনিধি : প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৬:২১ পিএম
“হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে বিএনপি ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে” — এম এ মতীন

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে গঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সবসময় দেশের সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের অধিকার ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পক্ষে কাজ করে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও মান্দা উপজেলা বিএনপির সভাপতি এম এ মতীন।

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে নওগাঁর মান্দা উপজেলার বিভিন্ন পূঁজামণ্ডপ পরিদর্শনের সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, “প্রেসিডেন্ট শহীদ জিয়াউর রহমানের আমল থেকেই বিএনপির রাজনীতি হলো বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ, যার মূল লক্ষ্য হলো এ দেশের সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা। বিএনপির কাছে বিদেশি নীতির কোনও স্থান নেই। এই দেশে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই মিলে সাম্য, সহাবস্থান ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বসবাস করবে—এটাই বিএনপির রাজনৈতিক দর্শন।”

শারদীয় দুর্গাপূঁজা উপলক্ষে এম এ মতীন উপজেলার বিষ্ণুপুর, কসব,কাঁশোপাড়া,মৈনম ইউনিয়নের বিভিন্ন পূঁজামন্ডপ পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি ব্যক্তিগত তহবিল থেকে প্রতিটি মণ্ডপে নগদ অর্থ অনুদান প্রদান করেন এবং আয়োজক ও স্থানীয় ভক্তদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

সফরসঙ্গী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেন খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুল ইসলাম বাদল, হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি বিশ্বজিৎ কুমারসহ বিএনপি এবং অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

বিএনপি নেতা এম এ মতীন বলেন, “বিগত ১৭ বছরে যেসব ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতায় ছিল, তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর বিভিন্নভাবে দমন-পীড়ন চালিয়েছে, জমি দখল করেছে, নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করেছে। কিন্তু বিএনপি সবসময় সজাগ থেকেছে। দলের পক্ষ থেকে নেতাকর্মীরা পাহারার দায়িত্ব পালন করেছে এবং যে কোনও হামলা-নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের দলের অনেক নেতাকর্মী হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে হয়রানির শিকার হয়েছেন, নির্যাতিত হয়েছেন। কিন্তু তারপরও আমরা মাঠ ছাড়িনি, কারণ এটা নৈতিক দায়িত্ব ও মানবিক কর্তব্য।”

বর্তমান সময়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে মতীন বলেন, “আমাদের সবার দায়িত্ব হলো—যাতে এই দেশে কোনও ধর্মীয় সংখ্যালঘু নিজ ধর্ম পালন করতে গিয়ে আতঙ্কে না থাকে। সবাই যেন উৎসব উদযাপন করতে পারে নিরাপদে, আনন্দে, সম্মানের সঙ্গে।”

তিনি বলেন, “বিএনপির চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পরামর্শে এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে দল সব ধর্মের মানুষের পাশে রয়েছে এবং থাকবে।”

বিএনপি নেতাদের এই শুভেচ্ছা সফরকে স্বাগত জানায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ ভক্তরা। তারা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পূজা উদযাপনে প্রশাসনের পাশাপাশি রাজনৈতিক নেতাদের সহযোগিতাকেও ধন্যবাদ জানান।

স্থানীয় পূঁজা উদযাপন পরিষদের একজন সদস্য বলেন, “বিএনপি নেতারা প্রতিবছর পূঁজায় আমাদের পাশে থাকেন। এবারও তারা এসে আমাদের খোঁজ নিয়েছেন, অনুদান দিয়েছেন—আমরা খুবই কৃতজ্ঞ।”

রাজশাহীতে নানা আয়োজনে বিশ্ব হার্ট দিবস পালিত

মশিউর রহমান রাজশাহী ব্যুরো: প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৬:১৯ পিএম
রাজশাহীতে নানা আয়োজনে বিশ্ব হার্ট দিবস পালিত

“Don’t Miss a Beat — প্রতিটি হৃদস্পন্দনই জীবন” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারাদেশের ন্যায় রাজশাহীতেও বিশ্ব হার্ট দিবস-২০২৫ পালিত হয়েছে।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, রাজশাহীর উদ্যোগে সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপিত হয়।

সকাল ৯টায় বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে বর্ণাঢ্য র‌্যালির উদ্বোধনের মাধ্যমে কর্মসূচির সূচনা করা হয়।

পরে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ও ফ্রি-চিকিৎসা সেবায় ৩০০-এর অধিক হৃদরোগীকে বিনামূল্যে সেবা প্রদান করা হয়।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন রাজশাহীর সভাপতি মোঃ আব্দুল মান্নান।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, দেশবরেণ্য কার্ডিওলজিস্ট প্রফেসর ডাঃ মোঃ আতাহার আলী।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মিজানুর রহমান খোকন।

মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট, রাজশাহীর পরিচালক ও চিফ কনসালট্যান্ট প্রফেসর ডাঃ মোঃ রইছ উদ্দিন।

এছাড়া আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ এ. এস. এম. সায়েম।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন কার্যনির্বাহী পরিষদের সহ-সভাপতি খন্দকার এনায়েত হোসেন বাবু ও মোঃ হাসেন আলী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) প্রফেসর মোঃ হবিবুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক মোঃ লিয়াকত আলী, কোষাধ্যক্ষ মোঃ মনোয়ার হোসেন (সেলিম), সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আব্দুল গফুর, প্রচার ও জনসংযোগ সম্পাদক ইমতিয়াজ আহমদ শামসুল হুদা, দপ্তর সম্পাদক এ. কে. মাসুদসহ নির্বাহী ও আজীবন সদস্যবৃন্দ।

সঞ্চালনায় ছিলেন নির্বাহী সদস্য মোঃ এনামুল হক এবং মেডিকেল অফিসার ডাঃ নাফিসা লুবাবা নদী

error: এই ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট কপি করা যাবে না।