১০:২৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিয়ানীবাজারে ঈদের আমেজ নেই বানভাসিদের মাঝে থাকতে হবে আশ্রয় কেন্দ্রে

print news -

বিয়ানীবাজার প্রতিনিধিঃ

সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের পানিবন্দি মানুষ দফায় দফায় ত্রিমুখী ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। যার কারণে আসন্ন ঈদুল আজহার আমেজ নেই বানভাসি মানুষের মধ্যে ঈদ উদযাপন করতে হচ্ছে আশ্রয় কেন্দ্রে।
সরেজমিনে গিয়ে বন্যায় পানিবন্দি মানুষের সঙ্গে আলাপচারিতায় বেরিয়ে আসে তাদের জীবন-যুদ্ধের করুণ কাহিনী। বেঁচে থাকার তাগিদে যে যা পারছে তাই করে কোনোরকম জীবিকা নির্বাহ করছে। আবার কেউ কেউ অনাহারে-অর্ধাহারে মানবেতর জীবন-যাপন করছে।

বন্যা কবলিতরা বলেন, ঈদের আনন্দ করবো কি দিয়ে। দুইবেলা দু’মুঠো পেটের ভাতই জোগাড় করতে পারি না, সেখানে ঈদের আনন্দ করার চিন্তা আনবো কি করে। ঈদকে সামনে রেখে মানুষ যখন আনন্দ নিয়ে ব্যস্ত তখন আমরা ঘরবাড়ি রক্ষা করা নিয়ে ব্যস্ত। সামনের দিনগুলা কেমনে চলবো সেই চিন্তায় রাতে ঘুম আসে না। এইবার বন্যায় আমাদের সর্বস্বাস্ত করল। কোরবানি দেয়া তো দূরের কথা ঈদের দিন পরিবারকে একটু সেমাই খাওয়াতে পারব কিনা জানি না।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ৫০-৬০ শতাংশ ঘরে এখনো পানি দেখা গেছে। অনেকেই আশ্রয় কেন্দ্রে, আবার কেউ কেউ ঘরে পানির মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। কিছু পরিবার এলাকায় আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। যাতায়াতের প্রতিটি রাস্তা এখনো পানির নিচে। স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, ঈদগাহ তলিয়ে গেছে। প্রতিটি হাটবাজার এখনো পানির নিচে। মানুষের চলাচলের কোনো জায়গা নেই। এছাড়াও বানভাসি মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত ডায়রিয়ায়, চর্ম, জ্বর, চোখের ভাইরাসসহ বিভিন্ন রোগ। এমন পরিস্থিতিতে তাদের ঈদ আনন্দ যেন দুঃস্বপ্ন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভাবের কারণে এবারের ঈদে মধ্যবিত্ত পরিবারের অনেকেই কুরবানি দিতে পারছেন না। অন্যদিকে পানিবন্দি এলাকায় কাজ না থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন দিনমজুররা। সব মিলিয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন উপজেলার ভানভাসি মানুষ। বৈরাগী বাজার সিনিয়র মাদ্রাসার আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা বাবুল আহমেদ বলেন, বন্যায় ঈদ আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে। নতুন কাপড় কেনা তো দূরের কথা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস জোগানো সম্ভব হচ্ছে না।
বিয়ানীবাজার উপজেলার কুড়ার বাজার ইউনিয়ন এর কয়েকটি আশ্রয় কেন্দ্র পরিদর্শনকালে দেখা যায় একটি পরিবারও বাড়িতে ঈদ করতে পারবেনা কারণ প্রত্যেকটা বাড়ি এখনো পানিবন্দি ঈদ কাটবে আশ্রয় কেন্দ্রে। বন্যা কবলিতরা বলেন, বন্যার শুরু থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক সংগঠন আমাদের ত্রাণ সামগ্রী দিয়ে সহযোগিতা করেছে আমরা সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। এসব সংগঠন এগিয়ে না আসলে আমরা না খেয়ে থাকতে হতো।

ট্যাগঃ
জনপ্রিয় সংবাদ

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন : ২০৪ নেতাকে বহিষ্কার করল বি.এন.পি

বিয়ানীবাজারে ঈদের আমেজ নেই বানভাসিদের মাঝে থাকতে হবে আশ্রয় কেন্দ্রে

প্রকাশিত হয়েছেঃ ১০:৩৩:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ জুলাই ২০২২
print news -

বিয়ানীবাজার প্রতিনিধিঃ

সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের পানিবন্দি মানুষ দফায় দফায় ত্রিমুখী ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। যার কারণে আসন্ন ঈদুল আজহার আমেজ নেই বানভাসি মানুষের মধ্যে ঈদ উদযাপন করতে হচ্ছে আশ্রয় কেন্দ্রে।
সরেজমিনে গিয়ে বন্যায় পানিবন্দি মানুষের সঙ্গে আলাপচারিতায় বেরিয়ে আসে তাদের জীবন-যুদ্ধের করুণ কাহিনী। বেঁচে থাকার তাগিদে যে যা পারছে তাই করে কোনোরকম জীবিকা নির্বাহ করছে। আবার কেউ কেউ অনাহারে-অর্ধাহারে মানবেতর জীবন-যাপন করছে।

বন্যা কবলিতরা বলেন, ঈদের আনন্দ করবো কি দিয়ে। দুইবেলা দু’মুঠো পেটের ভাতই জোগাড় করতে পারি না, সেখানে ঈদের আনন্দ করার চিন্তা আনবো কি করে। ঈদকে সামনে রেখে মানুষ যখন আনন্দ নিয়ে ব্যস্ত তখন আমরা ঘরবাড়ি রক্ষা করা নিয়ে ব্যস্ত। সামনের দিনগুলা কেমনে চলবো সেই চিন্তায় রাতে ঘুম আসে না। এইবার বন্যায় আমাদের সর্বস্বাস্ত করল। কোরবানি দেয়া তো দূরের কথা ঈদের দিন পরিবারকে একটু সেমাই খাওয়াতে পারব কিনা জানি না।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ৫০-৬০ শতাংশ ঘরে এখনো পানি দেখা গেছে। অনেকেই আশ্রয় কেন্দ্রে, আবার কেউ কেউ ঘরে পানির মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। কিছু পরিবার এলাকায় আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। যাতায়াতের প্রতিটি রাস্তা এখনো পানির নিচে। স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, ঈদগাহ তলিয়ে গেছে। প্রতিটি হাটবাজার এখনো পানির নিচে। মানুষের চলাচলের কোনো জায়গা নেই। এছাড়াও বানভাসি মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত ডায়রিয়ায়, চর্ম, জ্বর, চোখের ভাইরাসসহ বিভিন্ন রোগ। এমন পরিস্থিতিতে তাদের ঈদ আনন্দ যেন দুঃস্বপ্ন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভাবের কারণে এবারের ঈদে মধ্যবিত্ত পরিবারের অনেকেই কুরবানি দিতে পারছেন না। অন্যদিকে পানিবন্দি এলাকায় কাজ না থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন দিনমজুররা। সব মিলিয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন উপজেলার ভানভাসি মানুষ। বৈরাগী বাজার সিনিয়র মাদ্রাসার আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা বাবুল আহমেদ বলেন, বন্যায় ঈদ আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে। নতুন কাপড় কেনা তো দূরের কথা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস জোগানো সম্ভব হচ্ছে না।
বিয়ানীবাজার উপজেলার কুড়ার বাজার ইউনিয়ন এর কয়েকটি আশ্রয় কেন্দ্র পরিদর্শনকালে দেখা যায় একটি পরিবারও বাড়িতে ঈদ করতে পারবেনা কারণ প্রত্যেকটা বাড়ি এখনো পানিবন্দি ঈদ কাটবে আশ্রয় কেন্দ্রে। বন্যা কবলিতরা বলেন, বন্যার শুরু থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক সংগঠন আমাদের ত্রাণ সামগ্রী দিয়ে সহযোগিতা করেছে আমরা সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। এসব সংগঠন এগিয়ে না আসলে আমরা না খেয়ে থাকতে হতো।