১১:৪৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইতালি যাওয়ার পথে মাদারীপুরের ২ যুবকের মৃত্যু, পরিবারে শোকের মাতম

ইতালি যাওয়ার পথে মাদারীপুরের ২ যুবকের মৃত্যু, পরিবারে শোকের মাতম

print news -

নিউজ ডেস্ক:  সমুদ্রপথে অবৈধভাবে ইতালি যাওয়ার পথে মাদারীপুরের দুই যুবক মারা গেছেন । বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে মামুন ও সজলের মৃত্যুর সংবাদে তাদের পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ।

নিহতরা হলেন, রাজৈর উপজেলার খালিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম স্বরমঙ্গল গ্রামের ইউসুফ আলী শেখের ছেলে মামুন শেখ( ২১) ও সেন্দিয়া গ্রামের সুনীল বৈরাগীর ছেলে সজল বৈরাগী( ২০) ।

স্থানীয়রা জানান, গত ১৪ জানুয়ারি মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার খালিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম স্বরমঙ্গল গ্রামের ইউসুফ আলী শেখের ছেলে মামুন শেখ ও সেন্দিয়া গ্রামের সুনীল বৈরাগীর ছেলে সজল বৈরাগী ইতালির উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হন । এরপর বুধবার তারা মোটরচালিত নৌকায় করে লিবিয়া ত্যাগ করেন । ৩২ জনের ধারণক্ষমতার একটি নৌকায় ৫২ জন অভিবাসী নিয়ে ছেড়ে আসে নৌকাটি । ইঞ্জিন বোটটি পরে তিউনিসিয়ার কাছে ভূমধ্যসাগরে বিস্ফোরিত হয় । এতে মামুন ও সজলসহ বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয় ।

খবর পেয়ে স্থানীয় কোস্টগার্ড কয়েকজনকে জীবিত উদ্ধার করে । এছাড়া গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার গোয়ালা ইউনিয়নের পান্নু শেখের ছেলে আপন শেখ এখনো নিখোঁজ রয়েছেন । ব্যাংক ঋণ ও সুদসহ দালালদের দেওয়া টাকা পরিশোধের চিন্তায় রয়েছেন স্বজনরা ।
নিহত মামুন শেখের বড় ভাই সজিব শেখ জানান, মোশারফ কাজী গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার রাঘাদী ইউনিয়নের সুন্দরদী গ্রামের বাদশা কাজীর ছেলে, সে মানবপাচারচক্রের সক্রিয় সদস্য । সেই তাকে প্রলুব্ধ করে । প্রত্যেকের কাছ থেকে ১৩- ১৫ লাখ টাকা নেয় । পরে তাদের ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী বোঝাই ইঞ্জিনচালিত নৌকায় লিবিয়া থেকে ইতালিতে পাঠানোর সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে ।

সজিব আরও বলেন, আমি আনুষ্ঠানিকভাবে আমার ভাইয়ের লাশ দেশে ফেরত এবং দালাল মোশাররফ কাজীর বিচার দাবি করছি ।
সজল বৈরাগীর বাবা সুনীল বৈরাগী বলেন, নৌকা থেকে বেঁচে ফেরা একজন ফোন করে জানিয়েছেন, মামুন ও আমার ছেলে সজল মারা গেছেন ।

সুনীল আরও বলেন, “ আমি জমি, গরু বিক্রি করে, ঋণ নিয়ে আমার ছেলেকে ১৫ লাখ টাকা দিয়ে ইতালি পাঠিয়েছিলাম । কিন্তু আমাদের স্বপ্ন পূরণ হলো না । সব স্বপ্ন সাগরেই শেষ হয়ে গেছে । আমরা পথে এসে গেছি । এখন আমার ছেলে চলে গেছে, আমাদের সব শেষ । এই ঘটনায় দালাল মোশাররফ কাজীর কঠোর বিচার চাই । ”

অভিযুক্ত দালাল মোশাররফ কাজী লিবিয়ায় থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি । তার ছেলে যুবরাজ কাজীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া গেছে ।

মাদারীপুরের রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা( ওসি) মো. আসাদুজ্জামান হাওলাদার আসাদ জানান, নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে । না । সব স্বপ্ন সাগরেই শেষ হয়ে গেছে । আমরা পথে এসে গেছি । এখন আমার ছেলে চলে গেছে, আমাদের সব শেষ । এই ঘটনায় দালাল মোশাররফ কাজীর কঠোর বিচার চাই । ”

অভিযুক্ত দালাল মোশাররফ কাজী লিবিয়ায় থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি । তার ছেলে যুবরাজ কাজীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া গেছে ।

মাদারীপুরের রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা( ওসি) মো. আসাদুজ্জামান হাওলাদার আসাদ জানান, নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।

ট্যাগঃ
জনপ্রিয় সংবাদ

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন : ২০৪ নেতাকে বহিষ্কার করল বি.এন.পি

ইতালি যাওয়ার পথে মাদারীপুরের ২ যুবকের মৃত্যু, পরিবারে শোকের মাতম

প্রকাশিত হয়েছেঃ ০৪:৩৪:৪৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
print news -

নিউজ ডেস্ক:  সমুদ্রপথে অবৈধভাবে ইতালি যাওয়ার পথে মাদারীপুরের দুই যুবক মারা গেছেন । বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে মামুন ও সজলের মৃত্যুর সংবাদে তাদের পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ।

নিহতরা হলেন, রাজৈর উপজেলার খালিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম স্বরমঙ্গল গ্রামের ইউসুফ আলী শেখের ছেলে মামুন শেখ( ২১) ও সেন্দিয়া গ্রামের সুনীল বৈরাগীর ছেলে সজল বৈরাগী( ২০) ।

স্থানীয়রা জানান, গত ১৪ জানুয়ারি মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার খালিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম স্বরমঙ্গল গ্রামের ইউসুফ আলী শেখের ছেলে মামুন শেখ ও সেন্দিয়া গ্রামের সুনীল বৈরাগীর ছেলে সজল বৈরাগী ইতালির উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হন । এরপর বুধবার তারা মোটরচালিত নৌকায় করে লিবিয়া ত্যাগ করেন । ৩২ জনের ধারণক্ষমতার একটি নৌকায় ৫২ জন অভিবাসী নিয়ে ছেড়ে আসে নৌকাটি । ইঞ্জিন বোটটি পরে তিউনিসিয়ার কাছে ভূমধ্যসাগরে বিস্ফোরিত হয় । এতে মামুন ও সজলসহ বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয় ।

খবর পেয়ে স্থানীয় কোস্টগার্ড কয়েকজনকে জীবিত উদ্ধার করে । এছাড়া গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার গোয়ালা ইউনিয়নের পান্নু শেখের ছেলে আপন শেখ এখনো নিখোঁজ রয়েছেন । ব্যাংক ঋণ ও সুদসহ দালালদের দেওয়া টাকা পরিশোধের চিন্তায় রয়েছেন স্বজনরা ।
নিহত মামুন শেখের বড় ভাই সজিব শেখ জানান, মোশারফ কাজী গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার রাঘাদী ইউনিয়নের সুন্দরদী গ্রামের বাদশা কাজীর ছেলে, সে মানবপাচারচক্রের সক্রিয় সদস্য । সেই তাকে প্রলুব্ধ করে । প্রত্যেকের কাছ থেকে ১৩- ১৫ লাখ টাকা নেয় । পরে তাদের ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী বোঝাই ইঞ্জিনচালিত নৌকায় লিবিয়া থেকে ইতালিতে পাঠানোর সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে ।

সজিব আরও বলেন, আমি আনুষ্ঠানিকভাবে আমার ভাইয়ের লাশ দেশে ফেরত এবং দালাল মোশাররফ কাজীর বিচার দাবি করছি ।
সজল বৈরাগীর বাবা সুনীল বৈরাগী বলেন, নৌকা থেকে বেঁচে ফেরা একজন ফোন করে জানিয়েছেন, মামুন ও আমার ছেলে সজল মারা গেছেন ।

সুনীল আরও বলেন, “ আমি জমি, গরু বিক্রি করে, ঋণ নিয়ে আমার ছেলেকে ১৫ লাখ টাকা দিয়ে ইতালি পাঠিয়েছিলাম । কিন্তু আমাদের স্বপ্ন পূরণ হলো না । সব স্বপ্ন সাগরেই শেষ হয়ে গেছে । আমরা পথে এসে গেছি । এখন আমার ছেলে চলে গেছে, আমাদের সব শেষ । এই ঘটনায় দালাল মোশাররফ কাজীর কঠোর বিচার চাই । ”

অভিযুক্ত দালাল মোশাররফ কাজী লিবিয়ায় থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি । তার ছেলে যুবরাজ কাজীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া গেছে ।

মাদারীপুরের রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা( ওসি) মো. আসাদুজ্জামান হাওলাদার আসাদ জানান, নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে । না । সব স্বপ্ন সাগরেই শেষ হয়ে গেছে । আমরা পথে এসে গেছি । এখন আমার ছেলে চলে গেছে, আমাদের সব শেষ । এই ঘটনায় দালাল মোশাররফ কাজীর কঠোর বিচার চাই । ”

অভিযুক্ত দালাল মোশাররফ কাজী লিবিয়ায় থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি । তার ছেলে যুবরাজ কাজীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া গেছে ।

মাদারীপুরের রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা( ওসি) মো. আসাদুজ্জামান হাওলাদার আসাদ জানান, নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।