০১:০২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশে থাকার ঘোষণা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের

print news -

স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাজমুল হাসান।

সোমবার (১৯ আগস্ট) শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে আন্দোলনরত স্বাস্থ্যকর্মীদের সমাবেশে তিনি এ ঘোষণা দেন।

স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশে থাকার ঘোষণা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাজমুল বলেন, বৈষম্য সেখানেই ছাত্র সমাজ লড়াই করে। কমিউনিটি ক্লিনিকের যেসব স্বাস্থ্যকর্মী ভাইবোনেরা প্রান্তিক পর্যায় চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন তারা আজ ১৩ বছর ধরে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। ২০১১ সালে নিয়োগ হওয়ার পর থেকে তাদের ওপর একের পর এক বৈষম্য চলছে। যেখানে পুরো দেশের প্রতিটা সেক্টরে বেতন ভাতা বাড়ছে, সব সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেখানে আমাদের এই ভাই-বোনেরা একই বেতনে আজ ১৩ বছর কাজ করে যাচ্ছেন। আজ আন্দোলনে আপনারা দাবি জানিয়েছেন চাকরি স্থায়ীকরণের। কিন্তু আমি বলব এটা আপনাদের দাবি না‌, এটা আপনাদের অধিকার।

তিনি বলেন, যারা গত ১৩ বছর আপনাদের এই অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে তাদের জবাব দিতে হবে। কমিউনিটি ক্লিনিকের যে ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মোদাচ্ছের, তিনি স্বৈরাচার হাসিনার স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন। আমরা এই দুর্নীতিবাজকে ছেড়ে দেব না। তার জন্য হাজার হাজার স্বাস্থ্যকর্মী নিরাশ হয়েছে। অনতিবিলম্বে তাকে আইনের আওতায় এনে বিচারের সম্মুখীন করতে হবে।IMG 20240824 WA0002 -

নাজমুল বলেন, আমরা প্রতিশ্রুতি দিতে চাই, আপনাদের প্রতি যে বৈষম্য করা হয়েছে অবশ্যই তা নিরসন করা হবে। আপনারা যারা কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্যকর্মী আছেন তাদের অবশ্যই রাজস্ব করা হবে। আপনাদের আহ্বান জানাচ্ছি আপনারা শান্তিপূর্ণভাবে আপনাদের দাবি আদায়ে কর্মসূচি চালিয়ে যান। আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাজ সব বৈষম্যের বিরুদ্ধে আছি, আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি। আপনারা একা নন, আপনাদের পাশে ছাত্রসমাজ রয়েছে। আপনাদের এই যৌক্তিক দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আপনাদের সঙ্গে লড়াই করব।

প্রসঙ্গত, চাকরি রাজস্বকরণসহ তিন দফা দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে বিক্ষোভ করছেন কমিনিটি ক্লিনিকে কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীরা।

এর আগে, চতুর্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচির (এইচপিএনএসডিপি) (২০১৭-২০২২) অধীন অপারেশনাল প্ল্যানে (ওপিতে) সিএইচসিপিদের ইনক্রিমেন্ট ও ধাপে ধাপে রাজস্ব খাতে চাকরি স্থানান্তরের নির্দেশনাও রয়েছে। কিন্তু অদ্যাবধি কোনো কিছুর বাস্তবায়ন হয়নি। বারবার আশ্বাসেই থেমে আছে সিএইচসিপিদের জীবন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে গত ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৩ সালে সিএইচসিপিদের চাকরি স্থায়ীকরণের নীতিগত সিদ্ধান্তের কথা চিঠির মাধ্যমে সিভিল সার্জনদের জানান তৎকালীন পরিচালক প্রশাসন ডা. মো. শাহনেওয়াজ। আবার ২২ এপ্রিল ২০১৪ সালে তৎকালীন প্রকল্প পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব ডা. মাখদুমা নার্গিস চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের নিমিত্তে সিএইচসিপিদের সার্ভিস বুক খোলা ও বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন পাঠানোর কথা বলে চিঠি পাঠান সিভিল সার্জনদের কাছে। ফলে সিএইচসিপিরা চাকরি রাজস্বের স্বপ্ন দেখেছিলেন।

১৩ বছরে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্প অফিস স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সিএইচসিপিদের চাকরি রাজস্বকরণের বিষয়ের আলোকে কয়েক দফা চিঠি চালাচালি করে। এরই অংশ হিসেবে গত ১৬ জুন ২০১৩ সালে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রকল্প বাস্তবায়ন ৩ অধিশাখা, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা স্মারক নং- ৪৫.১৭৪.০১৫.০১০০.০০১.২০১১-২১৬ এ রিভাইটালাইজেসন অব কমিউনিটি হেলথ কেয়ার ইনশিয়েটিভস ইন বাংলাদেশ (আরসিএইচসিআইবি) শীর্ষক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারদের (সিএইচসিপি) রাজস্ব খাতে স্থানান্তর সম্পর্কিত প্রস্তাব প্রেরণ করে।

গত ২০১৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মহাখালী ঢাকা, স্মারক নং স্বা:অধি:/প্রশা-৩/বিবিধ-৩/২০০৮/৪৬৬৮ এ উল্লেখ করা হয় যে, সিএইচসিপিদের চাকরি স্থায়ীকরণের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং তা প্রক্রিয়াধীন আছে। এর পর গত ১৭/০৪/২০১৪ ইং তারিখে স্মারক নং-আরসিএইচসিআইবি/প্রশা-১৩২/২০১২/৬৫৪ এ সিএইচসিপিদের চাকরি বই খুলতে বলা হয় এবং গত ২২/০৪/২০১৪ ইং তারিখে স্মারক নং-আরসিএইচসিআইবি/সিসি/সার্কুলার-১২৪/৬৭১ এ সিএইচসিপিদের হাল নাগাদ বার্ষিক/বিশেষ গোপনীয় প্রতিবেদন (এসিআর) চাওয়া হয়।

এর ধারাবাহিকতায় গত ১৯/০৬/২০১৪ স্মারক নং-আরসিএইচসিআইবি/কন:/শৃঙ্খলা-৯৭/২০১২/৯২৭ এ উল্লেখ করা হয়, কোনো সিএইচসিপি অপরাধের দায়ে বা কোনো মোকাদ্দমায় চার্জশিটভুক্ত হলে তা সার্ভিস বইতে লিপিবদ্ধকরণ এবং তার চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তর না হওয়া প্রসঙ্গে নোটিশ প্রদান করা হয়।

বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার মূলধারার সঙ্গে সম্পৃক্তকরণের লক্ষ্যে জুলাই ২০১১ থেকে আরসিএইচসিআইবি প্রকল্পের পাশাপাশি ৩য় স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর উন্নয়ন কর্মসূচি (এইচপিএনএসডিপি)-এর কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ার (সিবিএইচসি) অপারেশনাল প্ল্যানের মাধ্যমে কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়েছে, যা ডিসেম্বর ২০১৬ তে সমাপ্ত হয়েছে।

বর্তমানে কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে ৪র্থ সেক্টর কর্মসূচিতে কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ার (সিবিএইচসি) অপারেশনাল প্ল্যান জানুয়ারি ২০১৭ থেকে জুন ২০২২ মেয়াদে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জুন ২০১৭ সাল থেকে অপারেশন প্ল্যানভুক্ত করে কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ার প্রকল্পের মাধ্যমে কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম চালু রাখা হয়। কিন্তু নতুন প্রকল্প চালুর আগেই অদ্যাবধি চাকরি রাজস্ব না হওয়ায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন সিএইচসিপিদের অনেকে।

ইতোপূর্বে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সাড়ে ১৩ হাজার সিএইচসিপিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ‘চতুর্থ স্বাস্থ্য জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি (এইচপিএনএসপি)’ প্রকল্পে স্থানান্তর করা হয়। তাদের ২০২২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত এ প্রকল্পে স্থানান্তর করে গত ১৫ মে ২০১৭ সালে চিঠি দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য বিভাগ। কিন্তু তাদের নতুন প্রকল্পে স্থানান্তরের আগেই রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়।

আবেদনের প্রেক্ষিতে কমিউনিটি ক্লিনিকে কমিউনিটি হেল্থ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্তদের চাকরি প্রকল্প থেকে রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের অনুলিপি ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে, যা বাস্তবায়ন করার জন্য গত ১৮/০১/২০১৮ তারিখে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএইচসিপিএ), দাবি আদায় বাস্তবায়ন কমিটি ২০/০১/২০১৮ থেকে কর্মসূচি ঘোষণা করে। ঘোষিত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে রিক্তহস্তে কমিউনিটি বেইজ হেলথ কেয়ার সিবিএইচসি স্মারক নং- স্বা:অধি/সিবিএইচসি/প্রশাসন-২২/২০১৮/৩১৭ তারিখ ২৭/০২/২০১৮ ইং মোতাবেক ০৩/০৩/২০১৮ খ্রি. সিএইচসিপিরা কর্মে ফিরে আসতে বাধ্য হন। সূত্র -কালবেলা

ট্যাগঃ
জনপ্রিয় সংবাদ

সিলেট বিভাগীয় অনলাইন প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন: সভাপতি-লুৎফুর, সম্পাদক-জহুরুল

স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশে থাকার ঘোষণা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের

প্রকাশিত হয়েছেঃ ১১:৫৯:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৪
print news -

স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাজমুল হাসান।

সোমবার (১৯ আগস্ট) শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে আন্দোলনরত স্বাস্থ্যকর্মীদের সমাবেশে তিনি এ ঘোষণা দেন।

স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশে থাকার ঘোষণা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাজমুল বলেন, বৈষম্য সেখানেই ছাত্র সমাজ লড়াই করে। কমিউনিটি ক্লিনিকের যেসব স্বাস্থ্যকর্মী ভাইবোনেরা প্রান্তিক পর্যায় চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন তারা আজ ১৩ বছর ধরে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। ২০১১ সালে নিয়োগ হওয়ার পর থেকে তাদের ওপর একের পর এক বৈষম্য চলছে। যেখানে পুরো দেশের প্রতিটা সেক্টরে বেতন ভাতা বাড়ছে, সব সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেখানে আমাদের এই ভাই-বোনেরা একই বেতনে আজ ১৩ বছর কাজ করে যাচ্ছেন। আজ আন্দোলনে আপনারা দাবি জানিয়েছেন চাকরি স্থায়ীকরণের। কিন্তু আমি বলব এটা আপনাদের দাবি না‌, এটা আপনাদের অধিকার।

তিনি বলেন, যারা গত ১৩ বছর আপনাদের এই অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে তাদের জবাব দিতে হবে। কমিউনিটি ক্লিনিকের যে ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মোদাচ্ছের, তিনি স্বৈরাচার হাসিনার স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন। আমরা এই দুর্নীতিবাজকে ছেড়ে দেব না। তার জন্য হাজার হাজার স্বাস্থ্যকর্মী নিরাশ হয়েছে। অনতিবিলম্বে তাকে আইনের আওতায় এনে বিচারের সম্মুখীন করতে হবে।IMG 20240824 WA0002 -

নাজমুল বলেন, আমরা প্রতিশ্রুতি দিতে চাই, আপনাদের প্রতি যে বৈষম্য করা হয়েছে অবশ্যই তা নিরসন করা হবে। আপনারা যারা কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্যকর্মী আছেন তাদের অবশ্যই রাজস্ব করা হবে। আপনাদের আহ্বান জানাচ্ছি আপনারা শান্তিপূর্ণভাবে আপনাদের দাবি আদায়ে কর্মসূচি চালিয়ে যান। আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাজ সব বৈষম্যের বিরুদ্ধে আছি, আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি। আপনারা একা নন, আপনাদের পাশে ছাত্রসমাজ রয়েছে। আপনাদের এই যৌক্তিক দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আপনাদের সঙ্গে লড়াই করব।

প্রসঙ্গত, চাকরি রাজস্বকরণসহ তিন দফা দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে বিক্ষোভ করছেন কমিনিটি ক্লিনিকে কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীরা।

এর আগে, চতুর্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচির (এইচপিএনএসডিপি) (২০১৭-২০২২) অধীন অপারেশনাল প্ল্যানে (ওপিতে) সিএইচসিপিদের ইনক্রিমেন্ট ও ধাপে ধাপে রাজস্ব খাতে চাকরি স্থানান্তরের নির্দেশনাও রয়েছে। কিন্তু অদ্যাবধি কোনো কিছুর বাস্তবায়ন হয়নি। বারবার আশ্বাসেই থেমে আছে সিএইচসিপিদের জীবন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে গত ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৩ সালে সিএইচসিপিদের চাকরি স্থায়ীকরণের নীতিগত সিদ্ধান্তের কথা চিঠির মাধ্যমে সিভিল সার্জনদের জানান তৎকালীন পরিচালক প্রশাসন ডা. মো. শাহনেওয়াজ। আবার ২২ এপ্রিল ২০১৪ সালে তৎকালীন প্রকল্প পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব ডা. মাখদুমা নার্গিস চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের নিমিত্তে সিএইচসিপিদের সার্ভিস বুক খোলা ও বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন পাঠানোর কথা বলে চিঠি পাঠান সিভিল সার্জনদের কাছে। ফলে সিএইচসিপিরা চাকরি রাজস্বের স্বপ্ন দেখেছিলেন।

১৩ বছরে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্প অফিস স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সিএইচসিপিদের চাকরি রাজস্বকরণের বিষয়ের আলোকে কয়েক দফা চিঠি চালাচালি করে। এরই অংশ হিসেবে গত ১৬ জুন ২০১৩ সালে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রকল্প বাস্তবায়ন ৩ অধিশাখা, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা স্মারক নং- ৪৫.১৭৪.০১৫.০১০০.০০১.২০১১-২১৬ এ রিভাইটালাইজেসন অব কমিউনিটি হেলথ কেয়ার ইনশিয়েটিভস ইন বাংলাদেশ (আরসিএইচসিআইবি) শীর্ষক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারদের (সিএইচসিপি) রাজস্ব খাতে স্থানান্তর সম্পর্কিত প্রস্তাব প্রেরণ করে।

গত ২০১৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মহাখালী ঢাকা, স্মারক নং স্বা:অধি:/প্রশা-৩/বিবিধ-৩/২০০৮/৪৬৬৮ এ উল্লেখ করা হয় যে, সিএইচসিপিদের চাকরি স্থায়ীকরণের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং তা প্রক্রিয়াধীন আছে। এর পর গত ১৭/০৪/২০১৪ ইং তারিখে স্মারক নং-আরসিএইচসিআইবি/প্রশা-১৩২/২০১২/৬৫৪ এ সিএইচসিপিদের চাকরি বই খুলতে বলা হয় এবং গত ২২/০৪/২০১৪ ইং তারিখে স্মারক নং-আরসিএইচসিআইবি/সিসি/সার্কুলার-১২৪/৬৭১ এ সিএইচসিপিদের হাল নাগাদ বার্ষিক/বিশেষ গোপনীয় প্রতিবেদন (এসিআর) চাওয়া হয়।

এর ধারাবাহিকতায় গত ১৯/০৬/২০১৪ স্মারক নং-আরসিএইচসিআইবি/কন:/শৃঙ্খলা-৯৭/২০১২/৯২৭ এ উল্লেখ করা হয়, কোনো সিএইচসিপি অপরাধের দায়ে বা কোনো মোকাদ্দমায় চার্জশিটভুক্ত হলে তা সার্ভিস বইতে লিপিবদ্ধকরণ এবং তার চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তর না হওয়া প্রসঙ্গে নোটিশ প্রদান করা হয়।

বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার মূলধারার সঙ্গে সম্পৃক্তকরণের লক্ষ্যে জুলাই ২০১১ থেকে আরসিএইচসিআইবি প্রকল্পের পাশাপাশি ৩য় স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর উন্নয়ন কর্মসূচি (এইচপিএনএসডিপি)-এর কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ার (সিবিএইচসি) অপারেশনাল প্ল্যানের মাধ্যমে কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়েছে, যা ডিসেম্বর ২০১৬ তে সমাপ্ত হয়েছে।

বর্তমানে কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে ৪র্থ সেক্টর কর্মসূচিতে কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ার (সিবিএইচসি) অপারেশনাল প্ল্যান জানুয়ারি ২০১৭ থেকে জুন ২০২২ মেয়াদে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জুন ২০১৭ সাল থেকে অপারেশন প্ল্যানভুক্ত করে কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ার প্রকল্পের মাধ্যমে কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম চালু রাখা হয়। কিন্তু নতুন প্রকল্প চালুর আগেই অদ্যাবধি চাকরি রাজস্ব না হওয়ায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন সিএইচসিপিদের অনেকে।

ইতোপূর্বে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সাড়ে ১৩ হাজার সিএইচসিপিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ‘চতুর্থ স্বাস্থ্য জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি (এইচপিএনএসপি)’ প্রকল্পে স্থানান্তর করা হয়। তাদের ২০২২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত এ প্রকল্পে স্থানান্তর করে গত ১৫ মে ২০১৭ সালে চিঠি দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য বিভাগ। কিন্তু তাদের নতুন প্রকল্পে স্থানান্তরের আগেই রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়।

আবেদনের প্রেক্ষিতে কমিউনিটি ক্লিনিকে কমিউনিটি হেল্থ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্তদের চাকরি প্রকল্প থেকে রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের অনুলিপি ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে, যা বাস্তবায়ন করার জন্য গত ১৮/০১/২০১৮ তারিখে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএইচসিপিএ), দাবি আদায় বাস্তবায়ন কমিটি ২০/০১/২০১৮ থেকে কর্মসূচি ঘোষণা করে। ঘোষিত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে রিক্তহস্তে কমিউনিটি বেইজ হেলথ কেয়ার সিবিএইচসি স্মারক নং- স্বা:অধি/সিবিএইচসি/প্রশাসন-২২/২০১৮/৩১৭ তারিখ ২৭/০২/২০১৮ ইং মোতাবেক ০৩/০৩/২০১৮ খ্রি. সিএইচসিপিরা কর্মে ফিরে আসতে বাধ্য হন। সূত্র -কালবেলা