০১:০১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বন্যা দুর্গতদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপিরা

print news -

বন্যা পরিস্থিতি তীব্র আকার ধারণ করেছে বাংলাদেশের ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লা অঞ্চলে। সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা দাড়িয়েছে ফেনীর ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া উপজেলায়। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, ফসলি জমি। এখনো হাজারো মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে।FB IMG 1724521357605 -

বন্যা ভারি বৃষ্টি ও ভারত থেকে আসা পানিতে ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পানি বিপৎসীমার অনেক ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।এমন পরিস্থিতিতে ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লার বেশ কয়েকটি অঞ্চলে পুরোপুরি বিদ্যুতহীন হয়ে পড়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে মোবাইল নেটওয়ার্কও। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে।IMG 20240824 WA0002 -

২৩ আগস্ট (শুক্রবার) দেশের বিভিন্ন উপজেলায় গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র ভরসাস্থল কমিউনিটি ক্লিনিক এর কর্মীরা কমিউনিটি ক্লিনিক, বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রসহ বন্যার্তদের মাঝে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছে।

সেবা গ্রহণকারি এক শিক্ষক বলেন বন্যার্থদের মাঝে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান একটি অত্যন্ত প্রশংসনীয় উদ্যোগ। কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মীরা যেভাবে মানবিক সেবায় নিজেদের নিয়োজিত করেছেন, তা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। তারা বন্যার্তদের সেবা প্রদান করে তাদের জীবন রক্ষা এবং স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছেন।FB IMG 1724521535826 -

কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মীদের এই উদ্যোগ স্থানীয় জনগণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তাদের এই কাজ স্থানীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

জানা গেছে, বন্যায় ১১ জেলার ৭৭ উপজেলার ৪৪ লাখ ৯৭ হাজার ৫৩৫ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলাগুলো হলো, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, সিলেট, লক্ষীপুর ও কক্সবাজার। আকষ্মিক এই বন্যায় ২ জন নারীসহ ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।FB IMG 1724521550521 -

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান বলেন, বন্যায় দেশের ৫৮৪টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৮ লাখ ৮৭ হাজার ৬২৯ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত ৪৪ লাখ ৯৭ হাজার ৫৩৫ জন। ১৩ জন বন্যায় মারা গেছেন। এর মধ্যে কুমিল্লায় ৪ জন, ফেনীতে ১ জন, চট্টগ্রামে ২ জন, নোয়াখালীতে ১ জন, ব্রাহ্মণবাড়ীয়ায় ১ জন, লক্ষীপুরে ১ জন ও কক্সবাজারে ৩ জন রয়েছেন।

বর্তমান বন্যা পরিস্থিতিতে মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে সার্বক্ষণিক নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু, মেডিকেল টিম গঠনসহ আটটি নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

১. বন্যাকবলিত এলাকার সব সিভিল সার্জন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কার্যালয়ে সার্বক্ষণিক নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু রাখতে হবে।
২. প্রাথমিক চিকিৎসা সরঞ্জাম ও মেডিকেল টিম গঠন করে দুর্যোগ মোকাবিলায় সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখতে হবে।
৩. বন্যাকবলিত এলাকায় প্রতিটি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে সম্ভাব্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি ডায়রিয়া, সর্প দংশনসহ বন্যা সংক্রান্ত অন্যান্য রোগের চিকিৎসার জন্য যথোপযুক্ত প্রস্তুতি রাখতে হবে। প্রচুর পরিমাণে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, খাবার স্যালাইন, অ্যান্টিভেনম মজুত রাখতে হবে।WhatsApp Image 2024 08 25 at 22.09.52 8ca69af1 -
৪. বন্যাদুর্গত এলাকার হাসপাতালে যন্ত্রপাতিগুলো যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য উঁচু স্থানে সংরক্ষণ করতে হবে।
৫. জরুরি ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসামগ্রী মজুত এবং প্রাথমিক চিকিৎসা সামগ্রীসহ অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখতে হবে।
৬. বন্যাদুর্গত জেলাগুলোর সব চিকিৎসক, নার্সসহ কর্মকর্তা-কর্মচারী বিভাগীয় পরিচালকের (স্বাস্থ্য) অনুমতি ছাড়া কর্মস্থল ত্যাগ করতে পারবেন না।
৭. স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের জন্য বন্যাদুর্গত এলাকার সিভিল সার্জন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে অনুরোধ করা হয়েছে।
৮. বন্যা মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসনের এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ গঠিত নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক সমন্বয় ও যোগাযোগ রাখতে হবে।WhatsApp Image 2024 08 25 at 22.09.52 f62ac2c6 -

এদিকে, বন্যাকবলিত এলাকায় চিকিৎসক-নার্সসহ সব স্বাস্থ্যকর্মীদের ছুটি বাতিল করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

ট্যাগঃ
জনপ্রিয় সংবাদ

সিলেট বিভাগীয় অনলাইন প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন: সভাপতি-লুৎফুর, সম্পাদক-জহুরুল

বন্যা দুর্গতদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপিরা

প্রকাশিত হয়েছেঃ ০৪:৪৮:১৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৪
print news -

বন্যা পরিস্থিতি তীব্র আকার ধারণ করেছে বাংলাদেশের ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লা অঞ্চলে। সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা দাড়িয়েছে ফেনীর ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া উপজেলায়। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, ফসলি জমি। এখনো হাজারো মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে।FB IMG 1724521357605 -

বন্যা ভারি বৃষ্টি ও ভারত থেকে আসা পানিতে ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পানি বিপৎসীমার অনেক ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।এমন পরিস্থিতিতে ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লার বেশ কয়েকটি অঞ্চলে পুরোপুরি বিদ্যুতহীন হয়ে পড়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে মোবাইল নেটওয়ার্কও। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে।IMG 20240824 WA0002 -

২৩ আগস্ট (শুক্রবার) দেশের বিভিন্ন উপজেলায় গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র ভরসাস্থল কমিউনিটি ক্লিনিক এর কর্মীরা কমিউনিটি ক্লিনিক, বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রসহ বন্যার্তদের মাঝে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছে।

সেবা গ্রহণকারি এক শিক্ষক বলেন বন্যার্থদের মাঝে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান একটি অত্যন্ত প্রশংসনীয় উদ্যোগ। কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মীরা যেভাবে মানবিক সেবায় নিজেদের নিয়োজিত করেছেন, তা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। তারা বন্যার্তদের সেবা প্রদান করে তাদের জীবন রক্ষা এবং স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছেন।FB IMG 1724521535826 -

কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মীদের এই উদ্যোগ স্থানীয় জনগণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তাদের এই কাজ স্থানীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

জানা গেছে, বন্যায় ১১ জেলার ৭৭ উপজেলার ৪৪ লাখ ৯৭ হাজার ৫৩৫ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলাগুলো হলো, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, সিলেট, লক্ষীপুর ও কক্সবাজার। আকষ্মিক এই বন্যায় ২ জন নারীসহ ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।FB IMG 1724521550521 -

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান বলেন, বন্যায় দেশের ৫৮৪টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৮ লাখ ৮৭ হাজার ৬২৯ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত ৪৪ লাখ ৯৭ হাজার ৫৩৫ জন। ১৩ জন বন্যায় মারা গেছেন। এর মধ্যে কুমিল্লায় ৪ জন, ফেনীতে ১ জন, চট্টগ্রামে ২ জন, নোয়াখালীতে ১ জন, ব্রাহ্মণবাড়ীয়ায় ১ জন, লক্ষীপুরে ১ জন ও কক্সবাজারে ৩ জন রয়েছেন।

বর্তমান বন্যা পরিস্থিতিতে মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে সার্বক্ষণিক নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু, মেডিকেল টিম গঠনসহ আটটি নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

১. বন্যাকবলিত এলাকার সব সিভিল সার্জন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কার্যালয়ে সার্বক্ষণিক নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু রাখতে হবে।
২. প্রাথমিক চিকিৎসা সরঞ্জাম ও মেডিকেল টিম গঠন করে দুর্যোগ মোকাবিলায় সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখতে হবে।
৩. বন্যাকবলিত এলাকায় প্রতিটি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে সম্ভাব্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি ডায়রিয়া, সর্প দংশনসহ বন্যা সংক্রান্ত অন্যান্য রোগের চিকিৎসার জন্য যথোপযুক্ত প্রস্তুতি রাখতে হবে। প্রচুর পরিমাণে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, খাবার স্যালাইন, অ্যান্টিভেনম মজুত রাখতে হবে।WhatsApp Image 2024 08 25 at 22.09.52 8ca69af1 -
৪. বন্যাদুর্গত এলাকার হাসপাতালে যন্ত্রপাতিগুলো যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য উঁচু স্থানে সংরক্ষণ করতে হবে।
৫. জরুরি ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসামগ্রী মজুত এবং প্রাথমিক চিকিৎসা সামগ্রীসহ অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখতে হবে।
৬. বন্যাদুর্গত জেলাগুলোর সব চিকিৎসক, নার্সসহ কর্মকর্তা-কর্মচারী বিভাগীয় পরিচালকের (স্বাস্থ্য) অনুমতি ছাড়া কর্মস্থল ত্যাগ করতে পারবেন না।
৭. স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের জন্য বন্যাদুর্গত এলাকার সিভিল সার্জন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে অনুরোধ করা হয়েছে।
৮. বন্যা মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসনের এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ গঠিত নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক সমন্বয় ও যোগাযোগ রাখতে হবে।WhatsApp Image 2024 08 25 at 22.09.52 f62ac2c6 -

এদিকে, বন্যাকবলিত এলাকায় চিকিৎসক-নার্সসহ সব স্বাস্থ্যকর্মীদের ছুটি বাতিল করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।