আশুগঞ্জে ছাত্রলীগ নেতার পরিবারের উপর হামলা

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের খিলক্ষেত থানা কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি ও ছাত্রলীগ নেতা মোঃ নাদিম(২৯) এর পরিবারের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন তার ভাই মোঃ আজিম মিয়া (৩৩) ও তার বাবা আশুগঞ্জের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ আলমগীর মিয়া (৫৬)।
গত রবিবার(৫ই অক্টোবর) সকাল ১১ ঘটিকার দিকে আশুগঞ্জ উপজেলার ২নং চরচারতলা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ উঠেছে, আওয়ামীলীগের শাসনামলে বিভিন্নসময় ঐ ছাত্রলীগ নেতা দলীয় মিছিল ও সভায় গিয়ে জামাত-শিবিরের লোকজনকে হুমকি দিয়ে স্লোগান দিতো এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থীর পক্ষে ভোট কারচুপির সাথে জড়িত ছিল। তাছাড়া সে ছাত্রলীগের বড় প্রভাবশালী নেতা হওয়ার কারণে ব্যপক প্রভাব বিস্তার করতো। তাই বিএনপি ও জামাত-শিবিরের টার্গেট ছিলো। বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক ক্ষোভ থাকায় মোঃ নাদিম এর পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা হয়েছে।
এ ঘটনার পর আশপাশের লোকজন ছাত্রলীগ নেতার বাবা ও ভাইকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা দ্রুত পালিয়ে যায়। আহত অবস্থায় ছাত্রলীগ নেতার বাবা মোঃ আলমগীর মিয়া ও তার ভাই মোঃ আজিম কে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, তার বাবা ও ভাই সকাল ১১ ঘটিকা দিকে ২নং চরচারতলা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বের হওয়ার পর হঠাৎ করে একদল লোক এসে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা যুক্তরাজ্য প্রবাসী মোঃ নাদিম এর বাবা ও ভাইকে দা-চাপাতি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এ ঘটনার পর হতে এলাকায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
প্রবাসীর পিতা মোঃ আলমগীর মিয়া জানান, তার পরিবার রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক প্রতিহিংসার শিকার। তার ছেলে মোঃ নাদিম ছাত্রলীগের রাজনীতি ও তারা পারিবারিক ভাবে আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার অপরাধে তাদের উপর হামলা হয়েছে। তিনি বলেন গত ৮ মাস যাবৎ তিনি ও তাঁর পরিবার বাড়ি ছাড়া। তিনি ও তার বড় ছেলে এসেছিলেন ২নং চরচারতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা ফাইজুর রহমানের মধ্যস্থতায় তারা কিভাবে বাড়িতে ফিরতে পারবেন সে ব্যাপারে কথা বলতে কিন্তু তিনি কোনো সহযোগিতা করতে অপারগতা পোষণ করেন। এই ঘটনার পর তিনি আশুগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে পুলিশ কোনো ধরনের অভিযোগ না নিয়ে উল্টো তাদের ৬ ঘন্টা ধরে থানায় আটকে রাখে ।তিনি আরও জানান গত ৫ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫, রাতের বেলা তাঁর বাড়িতে হামলা পর থেকে তার পরিবার বাড়ি ছাড়া এবং তার সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে।
তাছাড়া তিনি এর সুষ্ঠ বিচার ও নিরাপত্তার দাবী জানান।
মোঃ আলমগীর মিয়ার স্ত্রী জানান, ৫ই আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর থেকে তার পরিবারের উপর অত্যাচার শুরু হয়েছে। তাদের বিভিন্নভাবে হুমকি ও মোটা অংকের অর্থ দাবি করা হচ্ছে। তিনি আরোও জানান ২০০৬ সালে তার স্বামীর ব্যবসায়িক অংশীদার রফিকুল ইসলামের পরিবারের ৫ জনকে হত্যা করা হয়েছিল শুধু মাত্র এই ব্যবসায়িক ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে।
তিনি ও তাঁর পরিবার এখন এই আতঙ্কের মধ্যে দিন পার করছেন।
এ বিষয়ে জানতে আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি নাহিদ আহমেদের এর মোবাইল ফোনে বার বার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
উল্লেখ্য যে, ৫ই আগস্ট ২০২৪ দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তন এর পরে তার বাড়ীতে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের কতিপয় ছাত্র ও বিএনপি এবং জামায়াত-শিবিরের কতিপয় লোক তার বাড়ীতে হামলা চালিয়েছিলো। এ ছাড়াও ঐ এলাকার একাধিক ছাত্রলীগ-আওয়ামীলীগ নেতাদের বাড়ীতে হামলা হয়েছে ৫ই আগস্টের পর থেকে।











