নির্বাচন স্থগিত, ফ্যাসিবাদমুক্ত দিরাই প্রেসক্লাব গঠনের দাবি সাংবাদিকদের
দিরাই প্রেসক্লাব নির্বাচনকে ঘিরে প্রার্থীদের মুখোমুখি অবস্থান ও উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যেই শান্তিপূর্ণ সমাধানে উদ্যোগ নিয়েছেন স্থানীয় রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।
প্রার্থীদের প্রচারণা ও অবস্থান গ্রহণ নিয়ে সম্প্রতি প্রেসক্লাবের সদস্যদের মধ্যে বিভাজন স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এতে নির্বাচনকে ঘিরে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা সৃষ্টি হয়, যা ক্লাবের সুস্থ পরিবেশ ও ঐক্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে আসেন দিরাই প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাইয়ূম বিষয়টি নিয়ে মধ্যস্থতার চেষ্টা করলেও কোনো সমাধান হয়নি। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে সংঘাত এড়াতে বিএনপি ও জামায়াতের স্থানীয় নেতারা নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচন স্থগিত করার আহ্বান জানান। পরে প্রধান নির্বাচন কমিশন লিখিত ভাবে নির্বাচন স্থগিত করেন। লিখিত নোটিশে বলা হয়
“একটি সুষ্ঠু-সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। আমরা চাই একটি ঐক্যবদ্ধ প্রেসক্লাব। আমরা চাই সকলের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্প্রীতির সম্পর্ক বজায় থাকুক। সবকিছু বিবেচনায় আপাতত দিরাই প্রেসক্লাবের নির্বাচন স্থগিত করা হলো। পরবর্তীতে সুবিধাজনক যে কোনো সময়ে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।”
সভাপতি পদপ্রার্থী সামছুল ইসলাম সরদার বলেন, “আমরা একটি ফ্যাসিবাদ মুক্ত ও গণতান্ত্রিক প্রেসক্লাব গঠনের লক্ষ্যে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। কিন্তু, নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতমূলক আচরণের কারণে আমরা নিরাশ হয়েছি।”
তার অভিযোগ, আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত তিনজন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেন। তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার না করায় এবং দুর্নীতির অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কমিশন তাদের মনোনয়ন বাতিল না করায় বিরোধ সৃষ্টি হয়।
সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ইমরান হোসাইন বলেন, “আমরা চাই একটি নিরপেক্ষ ও স্বাধীন প্রেসক্লাব। কিন্তু, কমিশনের পক্ষপাত আমাদের মাঝে বিভক্তি সৃষ্টি করেছে।”তিনি আরও দাবি করেন, জিয়াউর রহমান লিটন নামের এক প্রার্থী মনোনয়ন ফরম না কিনেও সাধারণ সম্পাদক পদের প্রার্থী হয়েছেন, যা নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
অবশেষে, সামছুল ইসলাম সরদার, ইমরান হোসাইন, সামছুল আলম, দিপংকর বনিক, উবাইদুল হক, নির্বাচন বয়কট করেন এবং কমিশনের পদত্যাগ দাবি করেন।
এই ঘটনাকে ঘিরে দিরাইয়ে রাজনৈতিক ও সাংবাদিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। সাধারণ মানুষ এবং সচেতন মহল আশা করছেন, সব পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে দিরাই প্রেসক্লাব শিগগিরই গণতান্ত্রিক ও নিরপেক্ষ নেতৃত্ব পাবে।
স্থানীয়, প্রবীণ সাংবাদিক ও বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ প্রার্থীদের সঙ্গে পৃথক বৈঠকে বসেন। তাদের আহ্বানে শান্তিপূর্ণ আলোচনা শুরু হয়েছে এবং একটি সমঝোতার পথ খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
দিরাই প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাইয়ুম বলেন,“প্রেসক্লাব হলো মত প্রকাশের স্বাধীনতার প্রতীক, এখানে বিভাজন বা দ্বন্দ্ব কাম্য নয়। আমরা চাই নির্বাচন হোক অংশগ্রহণমূলক ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে।”
মধ্যস্থতাকারীরা উভয় পক্ষকে নির্বাচনকে ঘিরে উত্তেজনাকর বক্তব্য ও কর্মসূচি থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন এবং ক্লাবের ভাবমূর্তি রক্ষায় প্রধান নির্বাচন কমিশনকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। স্থগিত নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে একটি গ্রহণযোগ্য ভোট গঠনের লক্ষ্যে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে বলে জানা গেছে











