বাজারে সবজির ঝাঁজ, ক্রেতাদের হাঁসফাঁস
রাজধানীর বাজারে টানা কয়েক সপ্তাহ ধরে সব ধরনের সবজির দাম চড়া। মৌসুম ফুরিয়ে যাওয়া, টানা বৃষ্টি ও সরবরাহ কমে যাওয়াকে কেন্দ্র করে বাজারে তৈরি হয়েছে অস্থিরতা। এর প্রভাব পড়েছে কাঁচা মরিচ, বেগুন, করলা, পটোল, ঝিঙা, চিচিঙ্গা থেকে শুরু করে প্রায় সবজির দামেই। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ব্রয়লার মুরগি ও পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) রাজধানীর রামপুরা, মালিবাগ, মহাখালী ও কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রায় সব পণ্যেরই দাম স্বাভাবিকের চেয়ে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেশি। সবচেয়ে বেশি চড়া দাম দেখা গেছে কাঁচা মরিচে। মানভেদে এই পণ্য বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২৪০ থেকে ৩২০ টাকা পর্যন্ত।
রামপুরা বাজারে বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী সাজেদুর রহমান বলেন,
“সবজির দাম হঠাৎ করে কয়েক সপ্তাহ আগে বাড়ে। তারপর আর কমেনি। মনিটরিংয়ের অভাবে যা খুশি তা-ই দাম নিচ্ছে বিক্রেতারা। আজ এক পোয়া কাঁচা মরিচ কিনলাম ৮০ টাকায়।”
কারওয়ানবাজারের বিক্রেতা আলমগীর হোসেন বলছেন,
“বৃষ্টি হলে কাঁচা মরিচের দাম বাড়ে। সরবরাহে সমস্যা হলে দাম এমনিই বাড়ে। গতকালও বৃষ্টি হয়েছে, তাই আজ মরিচের বাজার আবার চড়া।”
সবজির বর্তমান বাজারদর কিছুটা এরকম—
• বেগুন: ৬০–১০০ টাকা/কেজি
• করলা, বরবটি, কাঁকরোল: ৭০–৮০ টাকা/কেজি
• ঝিঙা, চিচিঙ্গা: ৬০–৭০ টাকা/কেজি
• কচুর লতি, ঢেঁড়স, জালি: ৫০–৮০ টাকা/কেজি
• পেঁপে: ৪০ টাকা/কেজি
• ছোট পটোল: ৫০ টাকা/কেজি
• আলু: ৩০ টাকা/কেজি
• শসা: ৮০ টাকা/কেজি
• কাঁচা কলা (হালি): ৪০ টাকা
• লাউ (পিস): ৬০ টাকা
সবজির পাশাপাশি পেঁয়াজ ও মুরগির বাজারেও দেখা গেছে অস্থিরতা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৫–৭০ টাকা/কেজি, যা আগে ৫০–৬০ টাকার মধ্যে ছিল। পাইকারিতে দাম এখন ৫৬–৫৮ টাকা।
রামপুরা বাজারের বিক্রেতা আনিসুল হক বলেন, “পাইকারি বাজারে দাম বেড়েছে, সে কারণে আমাদের খুচরাতেও বাড়াতে হয়েছে। গত কোরবানির ঈদেও দাম এতটা বাড়েনি।”
ব্রয়লার মুরগির দামও বেড়েছে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। বর্তমানে বাজারভেদে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকায়। তবে ডিমের বাজারে কিছুটা স্বস্তি মিলেছে। ডজনপ্রতি দাম ৫ থেকে ১০ টাকা কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকায়।
সবজি ব্যবসায়ী আব্দুল মালেক মিয়া বলেন, “অনেক সবজির মৌসুম শেষ হয়ে গেছে। আবার কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির কারণে অনেক অঞ্চল থেকে সরবরাহ ঠিকমতো আসছে না। ফলে বাজারে দাম বেশি।”
মূলত আবহাওয়াজনিত কারণে সরবরাহ ব্যবস্থায় বাধা ও মৌসুমি কারণে উৎপাদন হ্রাস—এই দুইয়ের মিলিত প্রভাবে সাধারণ ভোক্তাদের বাজারে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে।











