শুক্রবার, ৭ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২
শুক্রবার, ৭ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২

৮ দফা দাবীতে খুলনা বিভাগের সিএইচসিপিদের মানববন্ধন

অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: বুধবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৫, ১০:১৬ পিএম
৮ দফা দাবীতে খুলনা বিভাগের সিএইচসিপিদের মানববন্ধন

বকেয়া বেতন পরিশোধ, ১২তম গ্রেডে উন্নীতকরণ, চাকুরী প্রবিধানমালা প্রণয়নসহ ৮ দফা দাবীতে ঝিনাইদহে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে খুলনা বিভাগের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রভাইডাররা।

বুধবার বিকেলে শহরের পুরাতন হাসপাতালের সামনে এ কর্মসূচীর আয়োজন করে বাংলাদেশ সিএইচসিপি এসোসিয়েশন খুলনা বিভাগীয় শাখা।

এতে ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে খুলনা বিভাগীয় নেতৃবৃন্দ ছাড়াও বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা নেতৃবৃন্দরা অংশ নেয়। সেসময় সংগঠনটির খুলনা বিভাগীয় সভাপতি তারিকুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক খায়রুল হাসান খানসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।

সেসময় বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তারা মাঠপর্যায়ে নিরলসভাবে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসলেও এখনো প্রাপ্য বেতন ও পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অবিলম্বে ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নের আহ্নবান জানিয়ে তারা বলেন, দাবি পূরণে বিলম্ব হলে আরও কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

বাংলাদেশ কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারদের বৈষম্য নিরসনে দাবীসমূহ:

১) অবিলম্বে ২০২৩ সালে নিয়োগকৃত কর্মীদের বেতন ভাতা চালু করতে হবে।

২) সকল কর্মচারীদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করতে হবে। (২০২৩ সালে নিয়োগকৃত কর্মীদের ১৫ মাস এবং ২০২৩ সালে নিয়োগকৃত ব্যতীত অন্যান্য সকল কর্মচারীর ৫.৫ মাসের বেতন বকেয়া)

৩) কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার পদের গ্রেড পরিবর্তন করে ১২তম গ্রেডে উন্নীত করতে হবে।

৪) সকল কর্মচারীদের পে-ফিক্সেশন করতে হবে এবং চাকুরিতে প্রথম যোগদানের তারিখ থেকে বছর গণনা করে ইনক্রিমেন্টসহ বর্তমান বেতন নির্ধারণ করতে হবে।

৫) কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মীদের চাকুরি প্রবিধানমালা প্রণয়ন করতে হবে।

৬) অবিলম্বে সকল কর্মচারীদের সাধারণ ভবিষ্যৎ তহবিল চালু করতে হবে।

৭) রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের জন্য অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ন্যায় প্রতি বছর নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রত্যেকটি কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্য বরাদ্ধ করতে হবে।

৮) কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারদের ন্যূনতম ১ বছর মেয়াদী ইন সার্ভিস ট্রেনিং চালু করতে হবে।

দাবিগুলোর পক্ষে যুক্তিসমূহ:

১) কমিউনিটি ক্লিনিকে ২০২৩ সালের নিয়োগকৃত সিএইচসিপিরা দীর্ঘ ১৫ মাস ধরে বেতন পাচ্ছে না। তাদের জন্য ট্রাস্টের কোডে বেতন ভাতা বরাদ্ধ থাকলেও কোন কারণে তারা বেতন পাচ্ছে না তার সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যাখ্যা নেই। এত দীর্ঘসময় ধরে বিনা করাণে বেতন ভাতা বন্ধ রাখা অমানবিক। তাদেরও পরিবার আছে।

২) ২০২৪ সালের জুন মাসে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অপারেশনাল প্লানের মেয়াদ শেষ হয় এবং আমরা ১৫ ডিসেম্বর ট্রাস্টে যোগদান করি। পরবর্তীতে ১৫ই ডিসেম্বর থেকে আমাদের বেতন পরিশোধ করা হলেও অন্তর্বতীকালীন ওই ৫.৫ মাসের বেতন বকেয়া থেকে যায়। কর্তৃপক্ষ বকেয়া বেতন পরিশোধের আশ্বাস দিলেও আজও সেই বেতন আমরা পাইনি।

৩) ২০১১ সালে আমাদের ১৪ তম গ্রেডে নিয়োগ করা হয়েছিল। ২০১১ সালের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার পদটির নিয়োগবিধিতে যোগ্যতা ছিল উচ্চমাধ্যমিক/সমমান এবং গ্রেড-১৪তম ছিল কিন্তু ২০২৪ সালে নিয়োগবিধি পরিবর্তন করে নিয়োগ যোগ্যতা উচ্চমাধ্যমিক/সমমানের পরিবর্তে স্নাতক/সমমান করা হয় এবং এই মোতাবেক আমাদের ১২তম গ্রেডে উন্নীত করার কথা থাকলেও গ্রেড উন্নয়ন না করে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আরও ২ স্তর নিচে ১৬ তম গ্রেডে অবনমিত করা হয়। এর সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ বা ব্যাখ্যা আমরা পাচ্ছি না। দীর্ঘ ১৪ বছর যাবৎ আমরা ১৪ তম গ্রেডে বেতন পেয়েছি কিন্তু ২০২৪ সালের জুলাই থেকে আমরা ১৬ তম স্কেলে বেতন পাচ্ছি। এটি আমাদের সাথে কর্তৃপক্ষের অমানবিক আচরণ।

৪) ১৬ তম গ্রেডটি সকল মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও দপ্তরগুলোর অফিস সহকারী, কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক, নিম্নমান সহকারী, হিসাব সহকারী, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর, সহকারী স্টোর কিপার ইত্যাদি পদগুলোর জন্য নির্ধারিত। অপরদিকে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারগণের কার্য পরিধি উপর্যুক্ত পদের চেয়ে বিস্তর এবং একজন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারই একটি কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রধান বলে বিবেচিত। বাংলাদেশের আর কোনো প্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্ঠান প্রধানের গ্রেড-১৬ তম নেই। বর্তমানে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের মধ্যে সর্বনিম্ন গ্রেড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের। ২০১১ সালে আমাদের এবং তাদের উভয়েরই বেতন গ্রেড-১৪তম ছিল। অতপর ২০১৪ সালে তাদের ১২ তম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছিল এবং ইতোঃমধ্যেই তাদেরকে ১০ গ্রেডে উন্নীতকরণের প্রস্তাব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহীত হয়েছে।

৫) ২০১১ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আমরা একই বেসিকে ও একই বেতনে চাকুরি করেছি, একটি ইনক্রিমেন্টও পাইনি। ২০২৫ সালে জুলাই মাসে আমরা সর্বপ্রথম ইনক্রিমেন্ট পাই এবং পিছনের ১৪ বছরের ইনক্রিমেন্টগুলোর জন্য কোনো রকম পে-ফিক্সেশন না করেই চলতি বছরের একটি মাত্র ইনক্রিমেন্ট যুক্ত হয়। ১৫ বছর চাকুরি করে একটি মাত্র ইনক্রিমেন্ট প্রদান করে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারদের সাথে চরম বৈষম্য করা হয়েছে।

৬) গত ফেব্রুয়ারি মাসে কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মীদের চাকুরির প্রবিধানমালার খসড়া করা হলেও কোনো এক অদৃশ্য কারণে চাকুরির প্রবিধানমালা প্রণয়ন করা সম্ভব হয়নি। আমরা অবিলম্বে চাকুরির প্রবিধানমালা চাই।

৭) ২০১৮ সালের কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইন অনুযায়ী কমিউনিটি ক্লিনিকের সকল কর্মচারী সাধারণ ভবিষ্যৎ তহবিল ও পেনশন পাওয়ার যোগ্য হলেও অদ্যাবধি আমাদেরকে সাধারণ ভবিষ্যৎ তহবিলের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

৮) উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের জন্য রক্ষনাবেক্ষণ ও মেরামত বাবদ একটি নির্দিষ্ট বাজেট থাকে কিন্তু কমিউনিটি ক্লিনিকে এমন বাজেট নেই। একটি লাইট বা ফ্যান অচল হয়ে গেলেও আমাদের নিজ অর্থায়নে তা মেরামত অথবা কিনতে হয়। আমরা এই বৈষম্যের অবসান চাই।

৯) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রায় সকল মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীর পদ এবং চিকিৎসকদের পদ সহ বিভিন্ন পদে ইন-সার্ভিস ট্রেনিং হয়। স্বাস্থ্যসেবার মান নিশ্চিত করতে এবং কর্মীদের দক্ষতা বাড়াতে এই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়, যা স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ এবং স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে পরিচালিত হয়। বর্তমানে সিএইচসিপিদের জন্য ৩ মাস মেয়াদী বেসিক ট্রেনিং-এর ব্যবস্থা রয়েছে। আমরা ন্যূনতম ১ বছর মেয়াদী ইন সার্ভিস ট্রেনিং চাই। যেমন: পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের FWV-দের ১৮ মাসের ট্রেনিং ব্যবস্থা রয়েছে।

বক্তারা বলেন, ‘কমিউনিটি ক্লিনিক দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কিন্তু নিয়মিত বেতন-ভাতা না পেয়ে মাঠপর্যায়ের কর্মীদের মধ্যে চরম হতাশা দেখা দিয়েছে। সরকারের ইতিবাচক পদক্ষেপেই এই সংকটের দ্রুত সমাধান সম্ভব।’

 

 

নামাজে আসে না সভাপতি-সেক্রেটারি, সালাম না দেওয়ায় ইমামকে চাকরিচ্যুত

মশিউর রহমান রাজশাহী ব্যুরো: প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৫, ৯:৪২ পিএম
নামাজে আসে না সভাপতি-সেক্রেটারি, সালাম না দেওয়ায় ইমামকে চাকরিচ্যুত

রাজশাহীতে মসজিদ কমিটির সভাপতি ও সেক্রেটারিকে সালাম না দেওয়ার অভিযোগ তুলে ইমামকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে কমিটির সভাপতি, সেক্রেটারি এবং কোষাধ্যক্ষ ওই মসজিদে নামাজ পড়তেই যান না বলেও মুসল্লিদের অভিযোগ। এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে ইমামের পক্ষে রাজপথে বিক্ষোভ মানববন্ধন করেছেন এলাকার মুসল্লিরা।

বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় নগরীর রেলগেট এলাকায় গোরহাঙ্গা জামে মসজিদের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে মসজিদের মুসল্লি আবদুল ওয়াহিদ বলেন, আল্লাহর ঘর মসজিদ নিয়ে আধিপত্য বিস্তার করছে, প্রতিবদ্ধকতা সৃষ্টি করেছে। আমি মসজিদের নিয়মিত মুসল্লি। ৫ আগস্টের পর মসজিদে আমরা একটি আহবায়ক কমিটি করি। আমরা চেয়েছিলাম কমিটিতে নামাজিরা আসুক। ৩ মাস পর আহবায়ক কমিটির মেয়াদ শেষ হয়। তবে এরপর দখলবাজরা আসে, যারা নামাজ পড়ে না তাদের নিয়ে কমিটি করে ও আধিপত্য তৈরি করে।

তিনি আরও বলেন, হঠাৎ গত শুক্রবারে দেখি আরেকজন খতিব এনে বলে, আমাদের ইমামকে বাদ দেওয়া হয়েছে। অথচ ইমামের কোনো দোষই নাই। তিনি সবদিক থেকেই ভাল। অনেক ভাল খুতবা দেন। কিন্তু তার অপমান আমরা মেনে নেব না। আল্লাহর ঘর রক্ষার জন্য যা করা লাগে আমরা করবো।

মসজিদের স্থানীয় মুসল্লিরা বলেন, সভাপতি, সেক্রেটারি ও ক্যাশিয়ার শুধু শুক্রবার জুমার নামাজের পর আসে আর টাকা গুণে নিয়ে চলে যায়। হঠাৎ খতিব চেঞ্জ দেখতে পাই গত শুক্রবারে। মুসল্লিরা কারণ জানতে চাইলে গালাগালি করা হয় ও ধস্তাধস্তি হয়। ১৬ লক্ষ টাকা আমরা রেখেছিলাম, হিসাবও পাইনি। আয়-ব্যয়ের কিছু হিসাব দেখি না। কমিটির কয়েকজন আসে শুক্রবারে, তাও জুমার নামাজ অন্য জায়গায় পড়ে এসে টাকা নিয়ে চলে যায়। এছাড়াও ইমামের ঈমান আকিদা সব ভাল, তার কোনো দোষ নাই। শুধু শুনেছি, তিনি নাকি কমিটির কাকে সালাম দেন না, এজন্য তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। যা অন্যায়! কমিটির কয়েকজন তো ৫ ওয়াক্ত নামাজেই আসেন না। এমনকি শুক্রবার জুমার নামাজ অন্য মসজিদে পড়ে এখানে আসেন। তারা বলছে, ইমাম নাকি তাদের সালাম দেন না। এটা মিথ্যা ও অন্যায় অভিযোগ। আমাদের উচিত ইমামকে সালাম ও সম্মান দেওয়া। ইমাম আমাদের সালাম দিতে বাধ্য নন।

কমিটির সভাপতি দাবি করে ডা. এনামুল হক নামে এক মুসল্লি মানববন্ধনে বলেন, ওরা টাকা চুরি করত, ইমামকে টাকা দিত না। ঈদের নামাজ বিভিন্ন সময়ে ইমামকে টাকা দেওয়া হয় না। রমজানে সারা মাস নামাজ পড়িয়েছে ইমাম, কিন্তু টাকা দেয়নি। আমাদের হুমকি দেয় হিসাব চাইলে। ২৫-৩০ জন লোক এনে উল্টাপাল্টা বকে। এখনো আমি সভাপতি আছি। বিগত কমিটি ভেঙে দেওয়া হলো। নতুন কমিটি ৩ মাসের ভেতর নতুন দেওয়া হবে। আমরা ইমামের কোনো দোষ পাইনি

শরীরে ক্যানসারের ইঙ্গিত দেয় যেসব লক্ষণ

অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৫, ৮:৪৫ পিএম
শরীরে ক্যানসারের ইঙ্গিত দেয় যেসব লক্ষণ

ক্যানসারের সাধারণ কিছু লক্ষণ যা নারী-পুরুষ উভয়ের মধ্যেই দেখা যায়। এর মধ্যে রয়েছে ত্বকের পরিবর্তন। যেমন পিণ্ড বা ফোঁড়া যা সহজে রক্তপাত হয়, ক্ষত যা নিরাময় হয় না এবং তিলের আকার বা রঙে পরিবর্তন। এ ছাড়া অস্বাভাবিক ক্লান্তি, দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা, ওজন হ্রাস এবং খাবার বা পান চিবাতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর মরণব্যাধি ক্যানসার শরীরের এক কোষ থেকে অন্য কোষে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। প্রাথমিক অবস্থায় ক্যানসার শনাক্ত করা না গেলেও তা মৃত্যুঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। আর শরীরে ক্যানসার বাসা বাঁধলে নারী-পুরুষ সবার মধ্যেই সাধারণ কিছু পরিবর্তন দেখা যায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক, শরীরে ক্যানসারের বাসা বাঁধলে যে লক্ষণ দেখা যায়-

ওজন কম

ক্যানসারে আক্রান্তদের প্রধান লক্ষণ হচ্ছে-প্রাথমিক অবস্থায় ওজন কমতে শুরু করবে। তাই কায়িক পরিশ্রম বা শরীরচর্চা কিংবা ডায়েট না করেও যদি আপনার ক্রমাগত ওজন কমতে থাকে, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। আর আপনার শরীরে ক্লান্তি ভর করবে। বিভিন্ন কাজের পর ক্লান্তি আসতেই পারে। কিন্তু কাজ না করেও সবসময় ক্লান্তি অনুভব করেন, তাহলে বুঝে নিতে হবে আপনার জটিল সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। সে জন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। কারণ কোলন বা পেটের ক্যানসার থেকে রক্তক্ষয় হতে পারে। এর ফলে শরীর আরও দুর্বল হয়ে যায়।

শরীর ব্যথা

যদি হাড়ের ক্যানসার হয়, তাহলে প্রাথমিক উপসর্গ হিসেবে জয়েন্টে ব্যথা অনুভূত হতে থাকে। মস্তিষ্কে টিউমার হলে মাথাব্যথার কারণ হয়, যা কয়েক দিন ধরে স্থায়ী হতে থাকে এবং চিকিৎসার মাধ্যমেও মাথাব্যথা ভালো হয় না। তাই একই স্থানে দীর্ঘদিন ধরে পালাক্রমে ব্যথা অনুভব করলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। হাড়ের ব্যথার সঙ্গে আপনার জ্বরও দেখা দেয়। তিন দিনের বেশি জ্বর স্থায়ী হলে বড় বিপদ। লিম্ফোমার মতো কিছু রক্তের ক্যানসারের কারণে কয়েক দিন কিংবা সপ্তাহ পর্যন্ত জ্বর থাকতে পারে। এ জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

কাশি

ফুসফুস ক্যানসারের একটি বড় লক্ষণ হলো কাশি। দীর্ঘদিন ধরে কাশি থাকা মানে (ভয়েস বক্স বা থাইরয়েড গ্রন্থি) ক্যানসারেরও লক্ষণ হতে পারে।

রক্তক্ষরণ

যদি দেখেন, পায়খানার সঙ্গে আপনার নিয়মিত রক্ত পড়ছে, তাহলে কোলন বা মলদ্বার ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। এতে মূত্রনালিতে টিউমার হলে প্রস্রাবের সঙ্গেও রক্ত পড়তে পারে। এ ছাড়া যখন আপনার শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে রক্তকণিকা থাকে না, তখনই রক্তশূন্যতা হয়। অস্থিমজ্জাতে তৈরি হয় রক্তকণিকা। লিউকেমিয়া, লিম্ফোমা এবং একাধিক মেলোমার মতো ক্যানসারগুলো আপনার মজ্জার ক্ষতি করে থাকে। আর পুরুষের মধ্যে সর্বাধিক সাধারণ ক্যানসার হলো প্রোস্টেট, ফুসফুস এবং কলোরেক্টাল। প্রস্টেট ক্যানসারের ক্ষেত্রে প্রস্রাব করতে অসুবিধা হতে পারে। নিয়মিত যদি প্রস্রাবে অসুবিধা কিংবা মূত্রের সঙ্গে রক্ত দেখা যায় এবং ব্যথা অনুভব করলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

শরীরের ত্বকে ক্যানসার

আপনার চেহারা এমনকি ত্বকেও ক্যানসারের লক্ষণ প্রকাশ পায়। বিশেষ করে ত্বকের ক্যানসারে আক্রান্তদের শরীরে অস্বাভাবিকতা বা নতুন তিল, মোলস বা বাদামি, কালচে স্পট দেখা দিতে পারে। হলুদ বা লাল স্পটসহ চুলকানি দেখা দিলে বা ফুসকুড়ি থাকলে তা লিভার, ডিম্বাশয় বা কিডনি ক্যানসার বা লিম্ফোমার লক্ষণ হতে পারে। আর মুখে দীর্ঘদিন ধরে ঘা থাকলে তা ওরাল ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। ধূমপান, তামাক চিবানো বা প্রচুর পরিমাণে অ্যালকোহল পান করলেও ওরাল ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে।

এ ছাড়া অণ্ডকোষে ব্যথা হওয়ার লক্ষণ হতে পারে টেস্টিকুলার ক্যানসার। অন্যদিকে নারীরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন স্তন, ফুসফুস এবং কোলোরেক্টাল ক্যানসারে। জরায়ু, এন্ডোমেট্রিয়াম, যোনি বা ভলভা ক্যানসারেও আক্রান্ত হয়ে থাকেন। যোনি দিয়ে রক্তপাত বা স্রাব বের হওয়া, ক্ষুধামন্দা, পেটে ব্যথা বা ফোলাভাব, স্তনের পরিবর্তন বা ব্যথা ইত্যাদি লক্ষণ প্রকাশ পেলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

প্রতিদিন চিনি খেলে কী হয়?

অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৫, ৮:৪৩ পিএম
প্রতিদিন চিনি খেলে কী হয়?

চিনি যুক্ত মিষ্টি খাবারের প্রতি আকর্ষণ কম-বেশি আমাদের সবারই থাকে। এদিকে প্রতিদিন চিনি খাওয়ার অভ্যাস শরীরের কার্যকারিতার ওপর চুপচাপ প্রভাব ফেলতে শুরু করে। শক্তির পরিবর্তন থেকে শুরু করে হজম এবং ত্বকের পরিবর্তন পর্যন্ত, প্রতিদিন চিনি গ্রহণ ধীরে ধীরে ছোট কিন্তু লক্ষণীয় পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। তার মানে চিনি যে পুরোপুরি বাদ দিতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। বরং এটি নিয়মিত খেলে শরীরে কীভাবে তা প্রভাব ফেলে সে সম্পর্কে জেনে রাখা ভালো। আপনি যদি মিষ্টির প্রতি আগ্রহী হন এবং কখনো ভেবে দেখে থাকেন যে এক মাস ধরে প্রতিদিন চিনি খেলে কী হয়, তাহলে আপনার সে বিষয়ে সচেতন থাকা জরুরি। চলুন জেনে নেওয়া যাক এক মাস ধরে প্রতিদিন চিনি খেলে শরীরে কী ঘটে-

শক্তির স্তর ওঠানামা করতে শুরু করে

চিনি দ্রুত শক্তি দেয়, কিন্তু তা দীর্ঘস্থায়ী হয় না। প্রতিদিন খাওয়ার হলে এটি হঠাৎ উচ্চ মাত্রার দিকে নিয়ে যেতে পারে এবং তারপর শক্তির ক্র্যাশ হতে পারে, যার ফলে আপনি ক্লান্ত বা খিটখিটে বোধ করতে পারেন। ২০১৯ সালে প্রকাশিত মেজাজের ওপর চিনির প্রভাব পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে, কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ, বিশেষ করে চিনি, খাওয়ার ৬০ মিনিটের মধ্যে মনোযোগ কমিয়ে দেয় এবং গ্রহণের ৩০ মিনিটের মধ্যে ক্লান্তি বৃদ্ধি করে। এই উত্থান-পতন ঘটে, কারণ চিনি রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি এবং হ্রাস করে।

মিষ্টি খাবারের প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধি

প্রতিদিন চিনি খাওয়ার ফলে আপনার শরীর আরও বেশি চিনি খেতে চাইতে পারে। ২০১৬ সালের একটি গবেষণাপত্র অনুসারে, মিষ্টি স্বাদ মস্তিষ্কে ডোপামিন নিঃসরণকে ট্রিগার করে যা আনন্দ এবং পুরষ্কারের সঙ্গেও সম্পর্কিত রাসায়নিক। এটি এমন একটি চক্র তৈরি করতে পারে যেখানে প্রতিবেলা খাবারের পরে বা চাপের সময় মিষ্টি কিছু খেতে তীব্র ইচ্ছা হতে পারে। এক মাস ধরে চিনি খাওয়ার অভ্যাস হলে আপনার জিহ্বা অতিরিক্ত মিষ্টি খেতে অভ্যস্ত হয়ে যেতে পারে।

ত্বকের উজ্জ্বলতা হারাতে শুরু করতে পারে

প্রতিদিন চিনি খাওয়ার অভ্যাস ধীরে ধীরে ত্বকের গঠন এবং উজ্জ্বলতাকে প্রভাবিত করে। ২০২২ সালের একটি গবেষণা অনুসারে, অতিরিক্ত চিনি ত্বকের প্রোটিনের সঙ্গে আবদ্ধ হয়ে স্থিতিস্থাপকতা এবং হাইড্রেশন হ্রাস করে, যার ফলে অ্যাডভান্সড গ্লাইকেশন এন্ড-প্রোডাক্টস (অএঊং) গঠনের কারণে ত্বককে নিস্তেজ বা ক্লান্ত দেখায়। যদি আপনার চিনির পরিমাণ ধারাবাহিকভাবে বেশি থাকে তবে আপনি মাঝে মাঝে ব্রেকআউটও অনুভব করতে পারেন।

পেট ফুলে যেতে পারে

অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার ফলে অন্ত্রে গাঁজন হতে থাকে, যা ফোলাভাব বা অস্বস্তির কারণ হতে পারে। অতিরিক্ত চিনিযুক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবারেও ফাইবারের অভাব থাকে, যা হজমকে ধীর করে দেয়। আপনি যদি এক মাস ধরে প্রতিদিন চিনিযুক্ত খাবার খান, তাহলে লক্ষ্য করবেন যে পেট ভারী হয়ে যাচ্ছে বা হজম অনিয়মিত হচ্ছে। হাইড্রেটেড থাকা এবং দই বা গাঁজানো শাক-সবজির মতো প্রোবায়োটিক খাবার খেলে এই প্রভাবগুলো মোকাবিলা করা এবং অন্ত্রে সুস্থ ভারসাম্য বজায় রাখা সহজ হতে পারে।

ক্ষুধা এবং মেজাজে পরিবর্তন ঘটে

২০১৯ সালের একটি গবেষণা অনুসারে, প্রতিদিন চিনি খেলে তা ক্ষুধা বা মেজাজকে সূক্ষ্মভাবে প্রভাবিত করতে পারে। চিনি থেকে দ্রুত শক্তির উত্থানের পরে বেশিরভাগ সময়েই হঠাৎ করে হ্রাস পায়, যা আপনাকে খিটখিটে, অস্থির বা তাড়াতাড়ি ক্ষুধার্ত বোধ করাতে পারে। এক মাস ধরে চিনি খেলে তা আপনার খাদ্যাভ্যাস এবং মেজাজের ভারসাম্যকে প্রভাবিত করতে পারে।

error: এই ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট কপি করা যাবে না।