শুক্রবার, ৭ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২
শুক্রবার, ৭ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২

সমাজসেবা অধিদপ্তরের চোখের সামনে লক্ষ্মীপুর উদয়ন সংঘের কবরের জমি গোপনে বিক্রি!

গরুর গোয়ালঘর গড়ে উঠেছে পবিত্র স্থানে, ধর্মীয় অনুভূতি আঘাতপ্রাপ্ত, তদন্তেও ঢিলেমি

সুব্রত সরকার মহম্মদপুর, মাগুরা প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই, ২০২৫, ৮:৩৬ পিএম
গরুর গোয়ালঘর গড়ে উঠেছে পবিত্র স্থানে, ধর্মীয় অনুভূতি আঘাতপ্রাপ্ত, তদন্তেও ঢিলেমি

মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের নিবন্ধিত সমাজসেবা ক্লাব “লক্ষ্মীপুর উদয়ন সংঘ”-এর কবরস্থানের জমি গোপনে বিক্রি করে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে ক্লাবের সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি প্রশান্ত কুমার ঠাকুর ও সাধারণ সম্পাদক মো: টিপু সুলতানসহ একটি অসাধু চক্রের বিরুদ্ধে। বিক্রি করা জমির একাংশে এখনও শিশুদের কবর রয়েছে- এই তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর বিষয়টি শুধু আইন বা অনিয়ম নয়, একটি ধর্মীয় ও মানবিক অপরাধ হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে। স্থানীয় মুসলিম ও হিন্দু উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ ও শোকাহত। তাদের প্রশ্ন- একটি কবরস্থান কীভাবে গোয়ালঘরে পরিণত হলো? সেই প্রশ্নের উত্তর এখনো অজানা। সরকারি জমি, কিন্তু সমাজসেবা অধিদপ্তর ‘নীরব দর্শক’! সংগঠনটি সরকারের সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে নিবন্ধিত। তাই এই জমির মালিকানা ও ব্যবস্থাপনা সরকারি নীতিমালার আওতাধীন। অথচ অনুমতি ছাড়াই সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে ক্লাবের জমি বিক্রি করা হয়েছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন- সমাজসেবা অধিদপ্তরের নীরবতা এ ঘটনায় বড় প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। একাধিক অভিযোগ ও নথিপত্র জমা দেওয়ার পরেও মাসের পর মাস পেরিয়ে গেলেও কার্যকর কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বিভাগ। ফলে প্রশ্ন উঠেছে- তদন্ত প্রহসনে পরিণত হচ্ছে না তো? স্থানীয় সমাজকর্মী ও লক্ষীপুর গ্রামবাসীর পক্ষে অভিযোগকারী সৈয়দ আলমগীর হোসেন জানান, “জমি বিক্রির সময় কোনো সদস্যকে জানানো হয়নি। জাল রেজুলেশন বানিয়ে সভাপতি-সহসভাপতি, সাধারণ সম্পাদক নিজেরাই ‘আম মোক্তার’ হয়ে দলিলে স্বাক্ষর করেন। সরকারি কবরস্থানকে ধানি জমি বলে রেজিস্ট্রি করানো হয়েছে, যা ভয়ানক অপরাধ।” ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তদের বক্তব্য, জমির প্রকৃত ক্রেতা মোক্তার হোসেন বলেন, “আমি জমি কিনেছি ১৫ লক্ষ ৩০ হাজার টাকায়। সভাপতি,সহ- সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক টিপু সুলতান পুরো টাকা নিয়েছেন।” সহ-সভাপতি প্রশান্ত কুমার ঠাকুর বলেন, “আমি বুঝিনি সমাজকল্যাণ ক্লাবের জমি বিক্রি করা যায় না। আমি ভুল করেছি আমি একজন শিক্ষক মানুষ এই অপরাধে আমার পেনশন আটকে যায় কিনা চিন্তায় আছি।” সাধারণ সম্পাদক টিপু সুলতান বলেন, “জানি না এই অপরাধে কী শাস্তি হবে।”

কথিত রেজুলেশন ও টাকার গরমিল, আলোচিত রেজুলেশনটি তৈরি করা হয় ১৫ জানুয়ারি ২০২৫-এ, যেটি জাল বলেই সন্দেহ করা হচ্ছে। দলিলে ৫ লক্ষ টাকার বিক্রয়মূল্য দেখালেও আসল লেনদেন হয় ১৫ লক্ষ টাকার বেশি, যার মধ্যে ১০ লক্ষ টাকার কোনও বৈধ হদিস নেই। সমাজসেবা অফিস জানে, কিন্তু…….! মহম্মদপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো: আব্দুর রব স্বীকার করেন, “লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। জেলা উপ- পরিচালক কর্মকর্তার নির্দেশে তদন্ত করেছি এবং তদন্তের রিপোর্ট উপ- পরিচালক মহোদয় দপ্তরের জমা দেওয়া হয়েছে তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, এই তদন্ত ‘কচ্ছপগতির’ হয়ে গেছে। কার্যকর পদক্ষেপের কোনও লক্ষণ নেই। এলাকাবাসীর প্রশ্ন- সরকারি সম্পত্তি বিক্রির দায় কি সমাজসেবা অধিদপ্তরের ঘাড়েই বর্তাবে না? জনগণের দাবি: জড়িতদের দ্রুত বিচার ও জমি ফেরত, গ্রামবাসীরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, অবৈধ বিক্রয় বাতিল, ক্লাবের জমি পুনরুদ্ধার এবং জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে। তাদের ভাষায়, “এটি শুধু আর্থিক নয়, ধর্মীয় অনুভূতির চরম অবমাননা। সমাজসেবার নামে যে বিশ্বাস ভাঙা হয়েছে, তা ক্ষমার অযোগ্য।মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের নিবন্ধিত সমাজসেবা ক্লাব “লক্ষ্মীপুর উদয়ন সংঘ”-এর কবরস্থানের জমি গোপনে বিক্রি করে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে ক্লাবের সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি প্রশান্ত কুমার ঠাকুর ও সাধারণ সম্পাদক মো: টিপু সুলতানসহ একটি অসাধু চক্রের বিরুদ্ধে। বিক্রি করা জমির একাংশে এখনও শিশুদের কবর রয়েছে- এই তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর বিষয়টি শুধু আইন বা অনিয়ম নয়, একটি ধর্মীয় ও মানবিক অপরাধ হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে। স্থানীয় মুসলিম ও হিন্দু উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ ও শোকাহত। তাদের প্রশ্ন- একটি কবরস্থান কীভাবে গোয়ালঘরে পরিণত হলো? সেই প্রশ্নের উত্তর এখনো অজানা। সরকারি জমি, কিন্তু সমাজসেবা অধিদপ্তর ‘নীরব দর্শক’! সংগঠনটি সরকারের সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে নিবন্ধিত। তাই এই জমির মালিকানা ও ব্যবস্থাপনা সরকারি নীতিমালার আওতাধীন। অথচ অনুমতি ছাড়াই সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে ক্লাবের জমি বিক্রি করা হয়েছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন- সমাজসেবা অধিদপ্তরের নীরবতা এ ঘটনায় বড় প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। একাধিক অভিযোগ ও নথিপত্র জমা দেওয়ার পরেও মাসের পর মাস পেরিয়ে গেলেও কার্যকর কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বিভাগ। ফলে প্রশ্ন উঠেছে- তদন্ত প্রহসনে পরিণত হচ্ছে না তো? স্থানীয় সমাজকর্মী ও লক্ষীপুর গ্রামবাসীর পক্ষে অভিযোগকারী সৈয়দ আলমগীর হোসেন জানান, “জমি বিক্রির সময় কোনো সদস্যকে জানানো হয়নি। জাল রেজুলেশন বানিয়ে সভাপতি-সহসভাপতি, সাধারণ সম্পাদক নিজেরাই ‘আম মোক্তার’ হয়ে দলিলে স্বাক্ষর করেন। সরকারি কবরস্থানকে ধানি জমি বলে রেজিস্ট্রি করানো হয়েছে, যা ভয়ানক অপরাধ।” ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তদের বক্তব্য, জমির প্রকৃত ক্রেতা মোক্তার হোসেন বলেন, “আমি জমি কিনেছি ১৫ লক্ষ ৩০ হাজার টাকায়। সভাপতি,সহ- সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক টিপু সুলতান পুরো টাকা নিয়েছেন।” সহ-সভাপতি প্রশান্ত কুমার ঠাকুর বলেন, “আমি বুঝিনি সমাজকল্যাণ ক্লাবের জমি বিক্রি করা যায় না। আমি ভুল করেছি আমি একজন শিক্ষক মানুষ এই অপরাধে আমার পেনশন আটকে যায় কিনা চিন্তায় আছি।” সাধারণ সম্পাদক টিপু সুলতান বলেন, “জানি না এই অপরাধে কী শাস্তি হবে।”

কথিত রেজুলেশন ও টাকার গরমিল, আলোচিত রেজুলেশনটি তৈরি করা হয় ১৫ জানুয়ারি ২০২৫-এ, যেটি জাল বলেই সন্দেহ করা হচ্ছে। দলিলে ৫ লক্ষ টাকার বিক্রয়মূল্য দেখালেও আসল লেনদেন হয় ১৫ লক্ষ টাকার বেশি, যার মধ্যে ১০ লক্ষ টাকার কোনও বৈধ হদিস নেই। সমাজসেবা অফিস জানে, কিন্তু…….! মহম্মদপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো: আব্দুর রব স্বীকার করেন, “লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। জেলা উপ- পরিচালক কর্মকর্তার নির্দেশে তদন্ত করেছি এবং তদন্তের রিপোর্ট উপ- পরিচালক মহোদয় দপ্তরের জমা দেওয়া হয়েছে তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, এই তদন্ত ‘কচ্ছপগতির’ হয়ে গেছে। কার্যকর পদক্ষেপের কোনও লক্ষণ নেই। এলাকাবাসীর প্রশ্ন- সরকারি সম্পত্তি বিক্রির দায় কি সমাজসেবা অধিদপ্তরের ঘাড়েই বর্তাবে না? জনগণের দাবি: জড়িতদের দ্রুত বিচার ও জমি ফেরত, গ্রামবাসীরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, অবৈধ বিক্রয় বাতিল, ক্লাবের জমি পুনরুদ্ধার এবং জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে। তাদের ভাষায়, “এটি শুধু আর্থিক নয়, ধর্মীয় অনুভূতির চরম অবমাননা। সমাজসেবার নামে যে বিশ্বাস ভাঙা হয়েছে, তা ক্ষমার অযোগ্য।

নামাজে আসে না সভাপতি-সেক্রেটারি, সালাম না দেওয়ায় ইমামকে চাকরিচ্যুত

মশিউর রহমান রাজশাহী ব্যুরো: প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৫, ৯:৪২ পিএম
নামাজে আসে না সভাপতি-সেক্রেটারি, সালাম না দেওয়ায় ইমামকে চাকরিচ্যুত

রাজশাহীতে মসজিদ কমিটির সভাপতি ও সেক্রেটারিকে সালাম না দেওয়ার অভিযোগ তুলে ইমামকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে কমিটির সভাপতি, সেক্রেটারি এবং কোষাধ্যক্ষ ওই মসজিদে নামাজ পড়তেই যান না বলেও মুসল্লিদের অভিযোগ। এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে ইমামের পক্ষে রাজপথে বিক্ষোভ মানববন্ধন করেছেন এলাকার মুসল্লিরা।

বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় নগরীর রেলগেট এলাকায় গোরহাঙ্গা জামে মসজিদের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে মসজিদের মুসল্লি আবদুল ওয়াহিদ বলেন, আল্লাহর ঘর মসজিদ নিয়ে আধিপত্য বিস্তার করছে, প্রতিবদ্ধকতা সৃষ্টি করেছে। আমি মসজিদের নিয়মিত মুসল্লি। ৫ আগস্টের পর মসজিদে আমরা একটি আহবায়ক কমিটি করি। আমরা চেয়েছিলাম কমিটিতে নামাজিরা আসুক। ৩ মাস পর আহবায়ক কমিটির মেয়াদ শেষ হয়। তবে এরপর দখলবাজরা আসে, যারা নামাজ পড়ে না তাদের নিয়ে কমিটি করে ও আধিপত্য তৈরি করে।

তিনি আরও বলেন, হঠাৎ গত শুক্রবারে দেখি আরেকজন খতিব এনে বলে, আমাদের ইমামকে বাদ দেওয়া হয়েছে। অথচ ইমামের কোনো দোষই নাই। তিনি সবদিক থেকেই ভাল। অনেক ভাল খুতবা দেন। কিন্তু তার অপমান আমরা মেনে নেব না। আল্লাহর ঘর রক্ষার জন্য যা করা লাগে আমরা করবো।

মসজিদের স্থানীয় মুসল্লিরা বলেন, সভাপতি, সেক্রেটারি ও ক্যাশিয়ার শুধু শুক্রবার জুমার নামাজের পর আসে আর টাকা গুণে নিয়ে চলে যায়। হঠাৎ খতিব চেঞ্জ দেখতে পাই গত শুক্রবারে। মুসল্লিরা কারণ জানতে চাইলে গালাগালি করা হয় ও ধস্তাধস্তি হয়। ১৬ লক্ষ টাকা আমরা রেখেছিলাম, হিসাবও পাইনি। আয়-ব্যয়ের কিছু হিসাব দেখি না। কমিটির কয়েকজন আসে শুক্রবারে, তাও জুমার নামাজ অন্য জায়গায় পড়ে এসে টাকা নিয়ে চলে যায়। এছাড়াও ইমামের ঈমান আকিদা সব ভাল, তার কোনো দোষ নাই। শুধু শুনেছি, তিনি নাকি কমিটির কাকে সালাম দেন না, এজন্য তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। যা অন্যায়! কমিটির কয়েকজন তো ৫ ওয়াক্ত নামাজেই আসেন না। এমনকি শুক্রবার জুমার নামাজ অন্য মসজিদে পড়ে এখানে আসেন। তারা বলছে, ইমাম নাকি তাদের সালাম দেন না। এটা মিথ্যা ও অন্যায় অভিযোগ। আমাদের উচিত ইমামকে সালাম ও সম্মান দেওয়া। ইমাম আমাদের সালাম দিতে বাধ্য নন।

কমিটির সভাপতি দাবি করে ডা. এনামুল হক নামে এক মুসল্লি মানববন্ধনে বলেন, ওরা টাকা চুরি করত, ইমামকে টাকা দিত না। ঈদের নামাজ বিভিন্ন সময়ে ইমামকে টাকা দেওয়া হয় না। রমজানে সারা মাস নামাজ পড়িয়েছে ইমাম, কিন্তু টাকা দেয়নি। আমাদের হুমকি দেয় হিসাব চাইলে। ২৫-৩০ জন লোক এনে উল্টাপাল্টা বকে। এখনো আমি সভাপতি আছি। বিগত কমিটি ভেঙে দেওয়া হলো। নতুন কমিটি ৩ মাসের ভেতর নতুন দেওয়া হবে। আমরা ইমামের কোনো দোষ পাইনি

শরীরে ক্যানসারের ইঙ্গিত দেয় যেসব লক্ষণ

অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৫, ৮:৪৫ পিএম
শরীরে ক্যানসারের ইঙ্গিত দেয় যেসব লক্ষণ

ক্যানসারের সাধারণ কিছু লক্ষণ যা নারী-পুরুষ উভয়ের মধ্যেই দেখা যায়। এর মধ্যে রয়েছে ত্বকের পরিবর্তন। যেমন পিণ্ড বা ফোঁড়া যা সহজে রক্তপাত হয়, ক্ষত যা নিরাময় হয় না এবং তিলের আকার বা রঙে পরিবর্তন। এ ছাড়া অস্বাভাবিক ক্লান্তি, দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা, ওজন হ্রাস এবং খাবার বা পান চিবাতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর মরণব্যাধি ক্যানসার শরীরের এক কোষ থেকে অন্য কোষে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। প্রাথমিক অবস্থায় ক্যানসার শনাক্ত করা না গেলেও তা মৃত্যুঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। আর শরীরে ক্যানসার বাসা বাঁধলে নারী-পুরুষ সবার মধ্যেই সাধারণ কিছু পরিবর্তন দেখা যায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক, শরীরে ক্যানসারের বাসা বাঁধলে যে লক্ষণ দেখা যায়-

ওজন কম

ক্যানসারে আক্রান্তদের প্রধান লক্ষণ হচ্ছে-প্রাথমিক অবস্থায় ওজন কমতে শুরু করবে। তাই কায়িক পরিশ্রম বা শরীরচর্চা কিংবা ডায়েট না করেও যদি আপনার ক্রমাগত ওজন কমতে থাকে, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। আর আপনার শরীরে ক্লান্তি ভর করবে। বিভিন্ন কাজের পর ক্লান্তি আসতেই পারে। কিন্তু কাজ না করেও সবসময় ক্লান্তি অনুভব করেন, তাহলে বুঝে নিতে হবে আপনার জটিল সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। সে জন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। কারণ কোলন বা পেটের ক্যানসার থেকে রক্তক্ষয় হতে পারে। এর ফলে শরীর আরও দুর্বল হয়ে যায়।

শরীর ব্যথা

যদি হাড়ের ক্যানসার হয়, তাহলে প্রাথমিক উপসর্গ হিসেবে জয়েন্টে ব্যথা অনুভূত হতে থাকে। মস্তিষ্কে টিউমার হলে মাথাব্যথার কারণ হয়, যা কয়েক দিন ধরে স্থায়ী হতে থাকে এবং চিকিৎসার মাধ্যমেও মাথাব্যথা ভালো হয় না। তাই একই স্থানে দীর্ঘদিন ধরে পালাক্রমে ব্যথা অনুভব করলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। হাড়ের ব্যথার সঙ্গে আপনার জ্বরও দেখা দেয়। তিন দিনের বেশি জ্বর স্থায়ী হলে বড় বিপদ। লিম্ফোমার মতো কিছু রক্তের ক্যানসারের কারণে কয়েক দিন কিংবা সপ্তাহ পর্যন্ত জ্বর থাকতে পারে। এ জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

কাশি

ফুসফুস ক্যানসারের একটি বড় লক্ষণ হলো কাশি। দীর্ঘদিন ধরে কাশি থাকা মানে (ভয়েস বক্স বা থাইরয়েড গ্রন্থি) ক্যানসারেরও লক্ষণ হতে পারে।

রক্তক্ষরণ

যদি দেখেন, পায়খানার সঙ্গে আপনার নিয়মিত রক্ত পড়ছে, তাহলে কোলন বা মলদ্বার ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। এতে মূত্রনালিতে টিউমার হলে প্রস্রাবের সঙ্গেও রক্ত পড়তে পারে। এ ছাড়া যখন আপনার শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে রক্তকণিকা থাকে না, তখনই রক্তশূন্যতা হয়। অস্থিমজ্জাতে তৈরি হয় রক্তকণিকা। লিউকেমিয়া, লিম্ফোমা এবং একাধিক মেলোমার মতো ক্যানসারগুলো আপনার মজ্জার ক্ষতি করে থাকে। আর পুরুষের মধ্যে সর্বাধিক সাধারণ ক্যানসার হলো প্রোস্টেট, ফুসফুস এবং কলোরেক্টাল। প্রস্টেট ক্যানসারের ক্ষেত্রে প্রস্রাব করতে অসুবিধা হতে পারে। নিয়মিত যদি প্রস্রাবে অসুবিধা কিংবা মূত্রের সঙ্গে রক্ত দেখা যায় এবং ব্যথা অনুভব করলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

শরীরের ত্বকে ক্যানসার

আপনার চেহারা এমনকি ত্বকেও ক্যানসারের লক্ষণ প্রকাশ পায়। বিশেষ করে ত্বকের ক্যানসারে আক্রান্তদের শরীরে অস্বাভাবিকতা বা নতুন তিল, মোলস বা বাদামি, কালচে স্পট দেখা দিতে পারে। হলুদ বা লাল স্পটসহ চুলকানি দেখা দিলে বা ফুসকুড়ি থাকলে তা লিভার, ডিম্বাশয় বা কিডনি ক্যানসার বা লিম্ফোমার লক্ষণ হতে পারে। আর মুখে দীর্ঘদিন ধরে ঘা থাকলে তা ওরাল ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। ধূমপান, তামাক চিবানো বা প্রচুর পরিমাণে অ্যালকোহল পান করলেও ওরাল ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে।

এ ছাড়া অণ্ডকোষে ব্যথা হওয়ার লক্ষণ হতে পারে টেস্টিকুলার ক্যানসার। অন্যদিকে নারীরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন স্তন, ফুসফুস এবং কোলোরেক্টাল ক্যানসারে। জরায়ু, এন্ডোমেট্রিয়াম, যোনি বা ভলভা ক্যানসারেও আক্রান্ত হয়ে থাকেন। যোনি দিয়ে রক্তপাত বা স্রাব বের হওয়া, ক্ষুধামন্দা, পেটে ব্যথা বা ফোলাভাব, স্তনের পরিবর্তন বা ব্যথা ইত্যাদি লক্ষণ প্রকাশ পেলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

প্রতিদিন চিনি খেলে কী হয়?

অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৫, ৮:৪৩ পিএম
প্রতিদিন চিনি খেলে কী হয়?

চিনি যুক্ত মিষ্টি খাবারের প্রতি আকর্ষণ কম-বেশি আমাদের সবারই থাকে। এদিকে প্রতিদিন চিনি খাওয়ার অভ্যাস শরীরের কার্যকারিতার ওপর চুপচাপ প্রভাব ফেলতে শুরু করে। শক্তির পরিবর্তন থেকে শুরু করে হজম এবং ত্বকের পরিবর্তন পর্যন্ত, প্রতিদিন চিনি গ্রহণ ধীরে ধীরে ছোট কিন্তু লক্ষণীয় পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। তার মানে চিনি যে পুরোপুরি বাদ দিতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। বরং এটি নিয়মিত খেলে শরীরে কীভাবে তা প্রভাব ফেলে সে সম্পর্কে জেনে রাখা ভালো। আপনি যদি মিষ্টির প্রতি আগ্রহী হন এবং কখনো ভেবে দেখে থাকেন যে এক মাস ধরে প্রতিদিন চিনি খেলে কী হয়, তাহলে আপনার সে বিষয়ে সচেতন থাকা জরুরি। চলুন জেনে নেওয়া যাক এক মাস ধরে প্রতিদিন চিনি খেলে শরীরে কী ঘটে-

শক্তির স্তর ওঠানামা করতে শুরু করে

চিনি দ্রুত শক্তি দেয়, কিন্তু তা দীর্ঘস্থায়ী হয় না। প্রতিদিন খাওয়ার হলে এটি হঠাৎ উচ্চ মাত্রার দিকে নিয়ে যেতে পারে এবং তারপর শক্তির ক্র্যাশ হতে পারে, যার ফলে আপনি ক্লান্ত বা খিটখিটে বোধ করতে পারেন। ২০১৯ সালে প্রকাশিত মেজাজের ওপর চিনির প্রভাব পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে, কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ, বিশেষ করে চিনি, খাওয়ার ৬০ মিনিটের মধ্যে মনোযোগ কমিয়ে দেয় এবং গ্রহণের ৩০ মিনিটের মধ্যে ক্লান্তি বৃদ্ধি করে। এই উত্থান-পতন ঘটে, কারণ চিনি রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি এবং হ্রাস করে।

মিষ্টি খাবারের প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধি

প্রতিদিন চিনি খাওয়ার ফলে আপনার শরীর আরও বেশি চিনি খেতে চাইতে পারে। ২০১৬ সালের একটি গবেষণাপত্র অনুসারে, মিষ্টি স্বাদ মস্তিষ্কে ডোপামিন নিঃসরণকে ট্রিগার করে যা আনন্দ এবং পুরষ্কারের সঙ্গেও সম্পর্কিত রাসায়নিক। এটি এমন একটি চক্র তৈরি করতে পারে যেখানে প্রতিবেলা খাবারের পরে বা চাপের সময় মিষ্টি কিছু খেতে তীব্র ইচ্ছা হতে পারে। এক মাস ধরে চিনি খাওয়ার অভ্যাস হলে আপনার জিহ্বা অতিরিক্ত মিষ্টি খেতে অভ্যস্ত হয়ে যেতে পারে।

ত্বকের উজ্জ্বলতা হারাতে শুরু করতে পারে

প্রতিদিন চিনি খাওয়ার অভ্যাস ধীরে ধীরে ত্বকের গঠন এবং উজ্জ্বলতাকে প্রভাবিত করে। ২০২২ সালের একটি গবেষণা অনুসারে, অতিরিক্ত চিনি ত্বকের প্রোটিনের সঙ্গে আবদ্ধ হয়ে স্থিতিস্থাপকতা এবং হাইড্রেশন হ্রাস করে, যার ফলে অ্যাডভান্সড গ্লাইকেশন এন্ড-প্রোডাক্টস (অএঊং) গঠনের কারণে ত্বককে নিস্তেজ বা ক্লান্ত দেখায়। যদি আপনার চিনির পরিমাণ ধারাবাহিকভাবে বেশি থাকে তবে আপনি মাঝে মাঝে ব্রেকআউটও অনুভব করতে পারেন।

পেট ফুলে যেতে পারে

অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার ফলে অন্ত্রে গাঁজন হতে থাকে, যা ফোলাভাব বা অস্বস্তির কারণ হতে পারে। অতিরিক্ত চিনিযুক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবারেও ফাইবারের অভাব থাকে, যা হজমকে ধীর করে দেয়। আপনি যদি এক মাস ধরে প্রতিদিন চিনিযুক্ত খাবার খান, তাহলে লক্ষ্য করবেন যে পেট ভারী হয়ে যাচ্ছে বা হজম অনিয়মিত হচ্ছে। হাইড্রেটেড থাকা এবং দই বা গাঁজানো শাক-সবজির মতো প্রোবায়োটিক খাবার খেলে এই প্রভাবগুলো মোকাবিলা করা এবং অন্ত্রে সুস্থ ভারসাম্য বজায় রাখা সহজ হতে পারে।

ক্ষুধা এবং মেজাজে পরিবর্তন ঘটে

২০১৯ সালের একটি গবেষণা অনুসারে, প্রতিদিন চিনি খেলে তা ক্ষুধা বা মেজাজকে সূক্ষ্মভাবে প্রভাবিত করতে পারে। চিনি থেকে দ্রুত শক্তির উত্থানের পরে বেশিরভাগ সময়েই হঠাৎ করে হ্রাস পায়, যা আপনাকে খিটখিটে, অস্থির বা তাড়াতাড়ি ক্ষুধার্ত বোধ করাতে পারে। এক মাস ধরে চিনি খেলে তা আপনার খাদ্যাভ্যাস এবং মেজাজের ভারসাম্যকে প্রভাবিত করতে পারে।

error: এই ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট কপি করা যাবে না।