ময়মনসিংহের ভালুকায় মাত্র ৫০০ টাকার জন্য স্ত্রীকে খুন!
মাত্র ৫০০ টাকার জন্য স্ত্রীকে পাষণ্ড স্বামীর হাতে প্রাণ দিতে হয়েছে—এমন হৃদয়বিদারক ও নির্মম ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহের ভালুকায়। উপজেলার সীডস্টোর উত্তর বাজার এলাকার একটি ভাড়া বাসায় স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনকে নৃশংসভাবে খুন করে পালিয়ে যান স্বামী স্বপন মিয়া। হত্যাকাণ্ডের তিনদিন পর উদ্ধার করা হয় নিহতের অর্ধগলিত মরদেহ।
ভালুকা মডেল থানা সূত্রে জানা গেছে, ঈদের আগের দিন অর্থাৎ ৬ জুন সকালে স্বপন মিয়া তার স্ত্রী সাবিনার কাছে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার জন্য ৫০০ টাকা দাবি করেন। কিন্তু সাবিনা টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় স্বপন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এরপর তিনি ঘরের ফ্রিজের পাশে থাকা শিল দিয়ে স্ত্রীর মাথায় আঘাত করেন এবং ধারালো বটি দিয়ে উপর্যুপরি কোপাতে থাকেন। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সাবিনার।
ঘাতক স্বামী পরে ঘরের দরজায় তালা লাগিয়ে মোবাইল ফোন ও কিছু নগদ টাকা নিয়ে পালিয়ে যান। তিনদিন ধরে কোনো সাড়া-সংবাদ না পেয়ে আত্মীয়স্বজনরা বাসায় গিয়ে তালাবদ্ধ ঘরের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। তখন খাটের নিচ থেকে উদ্ধার করা হয় সাবিনার অর্ধগলিত মরদেহ।
খবর পেয়ে ভালুকা মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে। ঘটনার পরপরই তদন্তে নামে পুলিশ। অবশেষে শুক্রবার (১৩ জুন) গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার ভাংনাহাটি এলাকার একটি মেস থেকে স্বপন মিয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বপন স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী হত্যায় ব্যবহৃত শিল ও বটি উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও তার পরনের পাঞ্জাবির পকেট থেকে নিহতের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও উদ্ধার করে পুলিশ।
ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবির জানান, “এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মূল আসামিকে তিনদিনের অভিযানে গ্রেফতার করা হয়েছে। হত্যার আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার (১৪ জুন) দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।”
এলাকাবাসীর মধ্যে এই ঘটনা ব্যাপক চাঞ্চল্য ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। স্থানীয়রা ঘাতক স্বপনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।











