আইনি সুবিধা নিতে এনআইডিতে ২৫ বছর বয়স বাড়ানোর অপচেষ্টায় পাখি মৃধা!
মাগুরা জেলার মোহাম্মদপুর উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামের গোলাম সারোয়ার ওরফে পাখি মৃধার বিরুদ্ধে জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) তথ্য জালিয়াতির মাধ্যমে বয়স ২৫ বছর বাড়িয়ে একটি সম্পত্তি-সংক্রান্ত মামলায় সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, পাখি মৃধা তার এনআইডি-তে বয়স পরিবর্তনের জন্য মোহাম্মদপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসে একাধিকবার যোগাযোগ করেন এবং বিষয়টি ত্বরান্বিত করতে রাজনৈতিক ও প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেন। অভিযোগ রয়েছে, এ কাজে তাকে সহায়তা করছেন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ (এনআইডি)-এর একজন কর্মকর্তার বড় ভাই, যিনি সরাসরি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার ওপর চাপ সৃষ্টি করছেন। এই অনৈতিক তদবির ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন স্তরে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, পাখি মৃধা তার মৃত বড় ভাই ফুল মিয়া মৃধার স্ত্রী ও সন্তানদের জমি আত্মসাতের জন্য দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ধরনের অপকৌশল ও হয়রানিমূলক মামলা করে আসছেন। তারা আরও জানান, বয়স বাড়িয়ে তিনি মামলায় নিজের পক্ষে জোরালো অবস্থান তৈরির অপচেষ্টা করছেন, যাতে আদালতে জমির মালিকানা দাবিকে বিশ্বাসযোগ্যভাবে প্রতিষ্ঠা করা যায়।
নির্বাচন কমিশনের মহাপরিচালক বরাবর পাখি মৃধার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। অভিযোগে বলা হয়েছে, বর্তমান বয়সে এসে এমন ধরনের তথ্য জালিয়াতি পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়ার প্রতি চরম অবমাননা, যা বন্ধ করা জরুরি।
মোহাম্মদপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, অভিযোগটি গ্রহণ করা হয়েছে এবং তা তদন্তাধীন রয়েছে। কোনো ধরনের অনিয়ম প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পাখি মৃধার মৃত ভাইয়ের স্ত্রী বলেন, “আমরা পরিবার নিয়ে নিরীহভাবে বসবাস করছি। হঠাৎ করেই পাখি মৃধা আমাদের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি শুরু করেন। এখন তিনি এনআইডিতে বয়স বাড়িয়ে আমাদের বসতভিটা ও চাষী জমির মালিকানা দাবি করছেন, যা সম্পূর্ণ বেআইনি ও অন্যায়।”
এলাকাবাসীর অভিযোগ, পাখি মৃধা দীর্ঘদিন ধরেই নানা অপকৌশল ও প্রভাব খাটিয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে চলেছেন। তার বিরুদ্ধে জমি দখল, জালিয়াতি, মিথ্যা মামলা ও হুমকির একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তারা বলেন, “জাতীয় পরিচয়পত্রের মতো একটি রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ নথিতে বয়স পরিবর্তনের অপচেষ্টা শুধু প্রতারণা নয়, এটি আইনের অপব্যবহার ও সমাজে অনৈতিকতার জঘন্য দৃষ্টান্ত।” সচেতন মহল এবং এলাকাবাসী অবিলম্বে পাখি মৃধার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন, যাতে এই ধরনের প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড দমন করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়।











