বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ২৮ কার্তিক ১৪৩২
বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ২৮ কার্তিক ১৪৩২

লক্ষ্মীপুর কমলনগরে ব্যাক্তির বায়নাচুক্তি মালিকানা সম্পত্তি দখলের অভযোগ

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৭ জুন, ২০২৫, ৩:৩০ পিএম
লক্ষ্মীপুর কমলনগরে ব্যাক্তির বায়নাচুক্তি মালিকানা সম্পত্তি দখলের অভযোগ

লক্ষ্মীপুরে নদী ভাঙ্গা আব্দুর রাজ্জাক নামে এক ব্যক্তির বায়না চুক্তিতে মালিকানা ২৪ শতাংশের একটি সম্পত্তি জোর করে দখল করার অভযোগ এনেছেন হাজিরাহাট ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল দেলোয়ার হোসেন ও স্থানীয় সুলতান আহম্ম টিপুর বিরুদ্ধে । ভুক্তভোগী এবং বাংলার মুকুল পত্রিকার নিউজের তথ্য অনুযায়ী জানা যায় লক্ষীপুর কমলনগর হাজিরাট হামিদিয়া ফাজিল

মাদ্রাসার মালিকানাধীন ৮০ শতাংশ জমিন রয়েছে তোরাবগঞ্জ এলাকায় চর লরেঞ্চ মৌজায়। মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল দেলোয়ার হোসেন উক্ত জমিটি বেশ কয়েকজনের কাছে একাধিকবার বায়না চুক্তি করেছেন বলে অভযোগ ওঠে । সম্প্রতি ওই জমির একটি অংশে ভরাট করে নির্মাণ কাজ শুরু করেছে একটি পক্ষ। তবে একটি পক্ষ কাজ করলেও মাওলানা দেলোয়ার হোসেন কাজটি মাদ্রাসার বলে দাবি করেন । ঘটনাটি কমলনগর উপজেলার তোরাবগঞ্জ ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের তোরাবগঞ্জ গ্রামে । তবে জমিটি পড়েছে চর লরেঞ্চ মৌজাতে। বায়না চুক্তির স্টাম্প এবং ভুক্তভোগীর বক্তব্য অনুযায়ী ২০২০ সালের ১ মে স্থানীয় সুলতান আহম্মদ টিপুর মাধ্যমে, আজাদ এবং মোহাম্মদ শাহজাহানের কাছ থেকে ২৪ শতাংশ জমির বায়না চুক্তি করে রাজ্জসক। দুই ধপায় সুলতান আহম্মদ টিপুকে ৮ লাখ টাকা ( ১ম স্টাম্প ৬লাখ এবং ২য় স্টাম্প ২ লাখ) দেয়া হয়। বাকি টাকা রেজিস্ট্রেশন সময় দেয়া হবে বলে চুক্তি করা হয়। সেই মোতাবেক আব্দুর রাজ্জাক এই জমিতে বিভিন্ন গাছপালা রোপন করে একটি বাড়ির পরিবেশ তৈরি করেন।

কিন্তু হঠাৎ করে ১৫ জুন (রবিবার) ২০২৫ আব্দুর রাজ্জাকের সেই বায়না চুক্তির মালিকানা জমিতে হাজিরহাট ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার বরাত দিয়ে উক্ত জায়গায় ইট বালু ফেলে জোরপূর্বক দখল করার অভিযোগ ওঠেছে মাওলানা দেলোয়ার ও টিপুর বিরুদ্ধে। এমন পরিস্থিতিতে আব্দুর রাজ্জাক হাজীর হাট ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল দেলোয়ার হোসেন এবং সুলতান আহমদ টিপুর বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। সেই সাথে তিনি প্রশাসনের কাছে সুন্দর সমাধান এবং সুষ্ঠু বিচার প্রার্থনা করেন। ভুক্তভোগী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমি একজন নদী ভাঙ্গা মানুষ ২০২০ সালে আমি ২৪ শতাংশ জমি কিনেছি স্থানীয় সুলতান আহমদ টিপুর কাছ থেকে। আমাকে বায়না চুক্তি স্ট্যাম্প দেয়া হয় দুই ধপায় সুলতান আহমদ টিপুকে আমি ৮ লাখ টাকা দিয়ে প্রথম স্ট্যাম্পে ৬ লক্ষ টাকা এবং দ্বিতীয় স্টাম্পে ২ লক্ষ টাকা। যেখানে সাক্ষী ছিলেন হাজিরাট হামিদিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা দেলোয়ার হোসেন। ৫ বছর পর্যন্ত জমিনটি আমার দখলে ছিল।

এই জমিন বায়না চুক্তিতে মালিক আব্দুর রাজ্জাক নামে একটি সাইনবোর্ড রয়েছে জমিতে । পাঁচ বছর পর জমির দাম যখন বেড়ে যায়, প্রিন্সিপাল মাওলানা দেলোয়ার হোসেন এবং সুলতান আহম্মদ টিপু যুক্তি করে আমাকে জমিন থেকে উচ্ছেদ করে সেখানে তৃতীয় পক্ষ ইসমাইল নামে এক ব্যক্তির কাছে জমিনটি পুণরায় বিক্রি করে। বর্তমানে ইসমাইল সেই জমিন দখল করে ঘর তুলছে। সেখান থেকে আমাকে সরানোর জন্য হাজিরহাট ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার একটি সাইনবোর্ড দিয়ে রেখেছে। যাতে সবাই মনে করে এই জায়গায় মাদ্রাসার কাজ চলছে। এমন পরিস্থিতিতে আমি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্তের হাত থেকে বাঁচতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করি। বিষয়টি জানতে হাজীর হাট ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল দেলোয়ার হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সম্পত্তিটি মাদ্রাসার সম্পত্তি মাদ্রাসার প্রয়োজনে এখানে মাদ্রাসার জন্য ঘর করা হয়। আব্দুর রাজ্জাকের কাছে জমি বিক্রির বিষয়টি তিনি সম্পূর্ণ এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, লক্ষ্মীপুর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিকের নির্দেশনা অনুযায়ী মাদ্রাসার জমিতে কাজ চলছে। আমাদের মাদ্রাসার জমিতে আমরা ঘর তুলছি। আব্দুর রাজ্জাক নামে আমি কাউকে চিনি না। তাকে জিজ্ঞেস করেন তার কাছে কি আছে? আমাদের মাদ্রাসার দলিল আছে ।

বিষয়টি জানতে স্থানীয় সুলতান আহমদ টিপুর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আপনার আগেও দুজন সাংবাদিক এসেছে আপনি তিন নম্বর। রাজ্জাক সাহেব এখন আবার আপনার কাছে গিয়েছে। আমি তাকে বলেছি তার টাকাটা ফেরত নেয়ার জন্য কারণ আমি অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু অবশেষে ব্যর্থ হলাম কারণ সরকারি সম্পত্তি কখনো রেজিস্ট্রেশন করা যায় না। তিনি বলেন আমি এডিসিকে নিয়ে কয়েকবার মাদ্রাসাতে মিটিং করেছি কিন্তু সরকারি সম্পত্তি হস্তান্তর করা না যাওয়ার কারণে আমি তাকে ৬ লক্ষ টাকার স্ট্যাম্প দেয়া তার টাকাটা ফেরত নিতে বলছি। কিন্তু তিনি ছয় লক্ষ টাকা মানেন না। পরবর্তীতে চিন্তা করলাম তিনি জমিতে মাটি ফেলেছেন এবং জমিনটা সাজিয়েছেন সেই দিক থেকে যদি ২০-৩০ হাজার ৫০ হাজার বেশি লাগে তারপরও আমি দিতে রাজি কিন্তু তিনি তা মানেন না। তবে ২ লক্ষ টাকা এবং ১ টি স্টাম্পের কথা তিনি অস্বীকার করেন।

মাদ্রাসার সম্পত্তি হস্তান্তর করা কতটুকু যৌক্তিক লক্ষ্মীপুর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক জে পি দেওয়ানের সাথে কথা বললে তিনি জানান, মাদ্রাসার সম্পত্তি কখনো হস্তান্তরযোগ্য নয় এবং কখনো বিক্রিযোগ্য নয়। বিশেষ প্রয়োজনে মন্ত্রণালয়ের থেকে অনুমোদন নিতে হয় তবে অনেক ঝামেলা। হাজিরহাট হামিদিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার জমিন বিক্রয় সম্পর্কে তিনি অবগত নন বলে জানান। তবে তিনি বিষয়টির সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন। এমন পরিস্থিতিতে উক্ত সম্পত্তিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা জরুরি হয়ে পড়েছে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।

শাহবাগে শিক্ষকদের পুলিশের বাধা, জলকামান-সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ

অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: শনিবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৫, ৮:৪০ পিএম
শাহবাগে শিক্ষকদের পুলিশের বাধা, জলকামান-সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ

প্রাথমিক শিক্ষকদের শাহবাগ অভিমুখী পদযাত্রা করতে গেলে বাধা দেয় পুলিশ। এসময় জলকামান, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। 

শনিবার (৮ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শাহবাগে এই ঘটনা ঘটে।

এদিকে সকালে দশম গ্রেডে বেতনসহ ৩ দফা দাবি আদায়ে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা হাজারো শিক্ষক সেখানে জড়ো হয়ে অবস্থান নেন। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’-এর ব্যানারে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির বিভিন্ন অংশসহ চারটি সংগঠন এ কর্মসূচি পরিচালনা করছে।

সংগঠনগুলো হলো- বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (কাশেম-শাহিন), বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (শাহিন-লিপি) এবং সহকারী শিক্ষক দশম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ। এ ছাড়াও ঢাকা-চট্টগ্রাম বিভাগের তৃতীয় ধাপে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকরাও আন্দোলনে যোগ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

শিক্ষকদের তিন দফা দাবি হলো-

১️। সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেডে বেতন প্রদান,

২️। চাকরির ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার জটিলতা দূর করা,

৩️। শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির নিশ্চয়তা প্রদান।

অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি

অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: শনিবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৫, ৮:৩৭ পিএম
অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি

১০ম গ্রেডে বেতনসহ ৩ দফা দাবিতে রোববার (৯ নভেম্বর) থেকে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা।

শনিবার সন্ধ্যায় শিক্ষকদের ৪টি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত সংগঠন ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’ এ কর্মসূচির ঘোষণা দেয়।

বিকালে দাবি আদায়ে শাহবাগে আন্দোলনরতরা পথযাত্রা করলে মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। ওই সময় পুলিশের লাঠিপেটায় বেশ কয়েকজন শিক্ষক আহত হন।

একইসঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান থেকে গরম পানিও ছোড়া হয়।

প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ গণমাধ্যমকে বলেন, “আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ হামলা চালিয়েছে। হামলায় অর্ধশতাধিক শিক্ষক রক্তাক্ত হয়েছেন। দু’জনকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে।”

সকাল থেকেই দাবি আদায়ে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। পরবর্তীতে বিকেলের দিকে মিছিল নিয়ে তারা শাহবাগে এলে ব্যারিকেড দিয়ে মিছিল আটকে দেয় পুলিশ। ওই সময় ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যেতে চাইলে শিক্ষকদের ওপর চড়াও হয় পুলিশ।

শিক্ষকদের অভিযোগ, বিনা উসকানিতে পুলিশ তাদের ওপর হামলা চালায়। যদিও পুলিশের দাবি, মিছিল নিয়ে শিক্ষকরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে এগিয়ে যেতে চাইলে তাদের বাধা দেয়া হয়।

পদযাত্রায় বাঁধা দেওয়ার বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর গণমাধ্যমকে বলেন, “মিছিল নিয়ে শিক্ষকরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে যাওয়ার চেষ্টা করলে শাহবাগে ব্যারিকেড দেয় পুলিশ। ওই সময় ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করলে শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ।”

সরকারি প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের ৩ দফা দাবি হলো-

১) ১০ম গ্রেডে সহকারী শিক্ষকদের বেতন দেয়া।

২) শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি।

৩) চাকরির ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রদান।

সংবাদ প্রকাশের জেরে প্রতারক চক্রের হুমকি

সাংবাদিককে হত্যা ও মিথ্য মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা

অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: শনিবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৫, ৬:৫০ পিএম
সাংবাদিককে হত্যা ও মিথ্য মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা

রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় সংবাদ প্রকাশের জেরে এক সাংবাদিককে হত্যার হুমকি ও বিভিন্নভাবে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে গত ৩ নভেম্বর পুঠিয়া থানায় এবং মিথ্যা অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে ৬ নভেম্বর রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানায় দুটি পৃথক সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক।

হুমকি ও অপপ্রচারের শিকার ওই সাংবাদিকের নাম রকিবুল হাসান রকি (২৪)। তিনি পুঠিয়া উপজেলার পালোপাড়া গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে। বর্তমানে তিনি জাতীয় দৈনিক ‘সময়ের আলো’ ও স্থানীয় দৈনিক ‘সানশাইন’ পত্রিকায় দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও তিনি রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক জানান, গত ২৫ অক্টোবর তিনি জাতীয় দৈনিক সময়ের আলো ও স্থানীয় দৈনিক সানশাইন পত্রিকায় “হঠাৎ ধনী রিকশা চালক আবুল” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। প্রতিবেদনে পুঠিয়া উপজেলার পালোপাড়া সমাজের মোড় এলাকার বাসিন্দা আবুল হোসেনের সম্পদের উৎস নিয়ে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করা হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, আবুল প্রতারণার মাধ্যমে রাজশাহী নগরীর তালাইমারী এলাকার মৃত ছোলায়মান আলীর ছেলে মোল্লা সাইফ উল মোবারকের কাছ থেকে বিভিন্ন কৌশলে প্রায় অর্ধকোটি টাকারও বেশি অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সংবাদ প্রকাশের পর অভিযুক্ত আবুল হোসেন ও ভুক্তভোগী মোল্লা সাইফ উল মোবারক উভয় পক্ষের মধ্যে গত ৫ নভেম্বর স্থানীয় বিএনপি নেতা হান্নানের মুরগির দোকানে এক সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রায় ১৪ লক্ষ টাকায় আপস-মীমাংসা হয় বলে জানা গেছে।

তবে প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকেই অভিযুক্ত পক্ষ সাংবাদিক রকিবুল হাসান রকিকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে এবং বিভিন্নভাবে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা চালাচ্ছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

এ ছাড়া, দুই পক্ষের আপসনামায় মনগড়া তথ্য সংযোজন করে সাংবাদিকের নাম জড়িয়ে মিথ্যা বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, যার কোনো প্রমাণ তাদের কাছে নেই। স্থানীয় সূত্র আরও জানায়, শুধুমাত্র সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিককে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রতারক আবুল হোসেন ও মোল্লা সাইফ উল মোবারকের এ ঘটনার বিস্তর তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। দুজনের এ লেনদেনের পিছনে বড় কোনো অপরাধ লুকিয়ে আছে।

সাংবাদিকের করা সাধারণ ডায়েরি (জিডি) সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর থেকেই আবুল হোসেন ও তাঁর সহযোগীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এরপর থেকে তারা সাংবাদিক রকিবুল হাসান রকিকে সরাসরি ভয়ভীতি প্রদর্শন ও নানা উপায়ে হুমকি প্রদান করতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁকে হত্যার হুমকি এবং মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো হয়।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক রকিবুল হাসান রকি বলেন, “সংবাদ প্রকাশের পর থেকে আমি নিয়মিত হুমকি পাচ্ছি। আমি ও আবুল একই গ্রামের বাসিন্দা হওয়ায় বাড়ির আশপাশে অপরিচিত লোকজন নিয়ে আবুল প্রায়ই ঘোরাঘুরি করছে। এতে আমি জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এ ঘটনায় আমি গত ৩ নভেম্বর পুঠিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছি। পেশাগত দায়িত্ববোধ থেকেই সংবাদটি করেছি- এতে কারও ব্যক্তিগত ক্ষতি করার উদ্দেশ্য ছিল না। কিন্তু সংবাদ প্রকাশের পর যেভাবে আমাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, তা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত। আমি প্রশাসনের কাছে আমার ও আমার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।”

উল্লেখ্য, একটি সংবাদভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেলে রাজশাহী অফিসে কর্মরত ক্যামেরাপার্সন জানান, নগরীর তালাইমার এলাকার মৃত ছোলায়মান আলীর ছেলে মোল্লা সাইফ উল মোবারক তাঁর আত্মীয়। তাঁর সাথে প্রতারণা করে প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন পুঠিয়ার আবুল হোসেন নামের ওই ব্যক্তি।
স্থানীয় ওই ক্যামেরাপার্সনের দেওয়া তথ্য এবং বিভিন্ন ঘটনার প্রমাণের ভিত্তিতে সাংবাদিক রকিবুল হাসান রকি বিষয়টি অনুসন্ধান করে সংবাদ প্রকাশ করেন। প্রতিবেদন প্রকাশের পর আবুল ও মোল্লা সাইফ উল মোবারক উভয় পক্ষ আপস-মীমাংসায় বসেন এবং লিখিত মীমাংসাপত্রে তারা বিষয়টিকে ব্যবসায়িক লেনদেন হিসেবে উল্লেখ করেন।

এর আগে, সাংবাদিককের আত্মীয় পরিচয়দানকারী ব্যক্তি অভিযোগ করেন, দুটি হত্যা মামলায় ভয় দেখিয়ে আবুল তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করেছিলেন। ওই ক্যামেরাপার্সন এ প্রতারণা চক্রের সদস্য কি না তাও খতিয়ে দেখা দরকার। এছাড়াও প্রতারক আবুল সামাজিক মাধ্যম ফেইসবুকে যে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ওই ভিডিও ফুটেজে অসংলগ্ন কথা বার্তা বলেছে। তার কথায় পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে তিনি মিথ্যা বলছেন। এখানে ওই ক্যামেরাপারসন ১৪ লাখ টাকা আপোষ মিমাংসায় গিয়ে প্রমাণ করেন তিনি পূর্ব থেকে এদের সাথে জড়িত।
এ ঘটনায় রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবের সভাপতি রেজাউল করিম বলেন, সংবাদ প্রকাশের পর সাংবাদিককে ফাঁসানোর বৃথা চেষ্টা করে লাভ নাই। সব হুমকি ধামকি প্রতিহত করা হবে। তবে প্রকাশিত সংবাদটিসহ ভুক্তভোগী মোল্লা সাইফ উল মোবারকসহ ওই ক্যামেরাপার্সনের তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। আবুলকে কেন অর্ধ কোটি টাকা মোল্লা সাইফ দিলো? পরে কেন উভয় পক্ষ ১৪ লাখ টাকায় আপোষ মিমাংসা হলো? এ টাকা কিসের লেনদেন, এসব অ-মিমাংসীত প্রশ্নের উত্তর খোঁজা প্রয়োজন। সেই সাথে তাদের উভয়ের আয়ের উৎস খোঁজার জন্য দুদকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

এঘটনার বিষয়ে পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন বলেন, অভিযোগসহ বিষয়গুলো পুলিশ তদন্ত করছে। তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে

error: এই ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট কপি করা যাবে না।