শেয়ার বাজার : আমেরিকার বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক ও আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান মরগ্যান স্ট্যানলি বাজারে অ্যাপলের শেয়ারকে ‘টপ পিক’ ঘোষণা করার পর আরও একবার বাড়ল অ্যাপলের শেয়ার দর। উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (৯ জুলাই) বিশ্বের প্রথম কোম্পানি হিসেবে অ্যাপলের বাজার দর ৩.৫ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়।
অ্যাপলের এই অসাধারণ সাফল্যের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই-এর। গত মাসে (১০ জুন) অ্যাপল তাদের বহুল আলোচিত এআই প্ল্যাটফর্ম ‘অ্যাপল ইন্টেলিজেন্স’ উন্মুক্ত করে। এর পর থেকেই তাদের শেয়ারে ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা গেছে ধারাবাহিকভাবে। অথচ গত মাসেই এক পর্যায়ে মাইক্রোসফট, অ্যাপলকে ছাড়িয়ে শেয়ার বাজারে শীর্ষে অবস্থান করেছে চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এনভিডিয়া।
চলতি বছরে অ্যাপলের শেয়ার দর বৃদ্ধি পেয়েছে ২০ শতাংশ, যেটা নিঃসন্দেহে যেকোনো প্রতিষ্ঠানের জন্যই ঈর্শনীয়। মরগ্যান স্ট্যানলি’র বিশ্লেষকদের মতেও বিশ্বব্যাপী আইফোন ও আইপ্যাডের বিক্রি বৃদ্ধিতে অ্যাপল ইন্টেলিজেন্স ‘পরিষ্কার অনুঘটক’ হিসেবে কাজ করেছে।
মরগ্যান স্ট্যানলি’র বিশ্লেষকরা তাই ধারণা করছেন আগামী ২ বছরে অ্যাপল প্রায় ৫০০ মিলিয়ন নতুন আইফোন বিক্রি করতে সক্ষম হবে। বাজারে অ্যাপলের শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির বিষয়টি অনুধাবন করেই আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানটি অ্যাপল শেয়ারের ‘টার্গেট প্রাইস’ ২১৬ ডলার থেকে ২৭৩ ডলারে উন্নীত করেছে।
গতকাল (১৫ জুলাই) প্রকাশিত গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইডিসি-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, অ্যাপল চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুন- এই তিন মাসে (বছরের ২য় কোয়ার্টারে) মোট ৪২.২ মিলিয়ন স্মার্টফোন বিক্রি করেছে, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১.৫ শতাংশ বেশি। শিপমেন্টের দিক থেকে স্যামসাং-এর পর তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানেই রয়েছে অ্যাপল।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে স্যামসাং এবং অ্যাপলের নেতৃত্বেই বিশ্ববাজারে স্মার্টফোন বিক্রির প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে সামনের দিনগুলোতে এবং এক্ষেত্রে মূল চালিকাশক্তি হবে জেনারেটিভ এআই-ভিত্তিক স্মার্টফোন।
এআই-এর দাপট আসছে দিনগুলোতে আরও বাড়বে এটা সহজেই অনুমেয়। কিন্তু স্মার্টফোনের বাজারে স্যামসাং-অ্যাপলকে কেউ টেক্কা দিতে পারবে না- এটা কি এখনই হলফ করে বলা যায়? বিশেষ করে আইডিসি-এর রিপোর্টে স্পষ্টতই দেখা যাচ্ছে শাওমি ও ভিভো-এর মতো চাইনিজ ফোন নির্মাতারা স্যামসাং ও অ্যাপলের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। গত বছরের তুলনায় শাওমি ও ভিভো-এর স্মার্টফোন বিক্রি বেড়েছে যথাক্রমে ২৭.৪ শতাংশ ও ২১.৯ শতাংশ।
অ্যাপল ইন্টেলিজেন্স-এর হাত ধরে অ্যাপলের সাম্প্রতিক এই সাফল্য নিঃসন্দেহে অভূতপূর্ব। এখন দেখার বিষয় শাওমি ও ভিভো-এর মতো স্মার্টফোন নির্মাতারা এর থেকে কি বার্তা নেয়।
তথ্যসূত্রঃ রয়টার্স, আইডিসি
[embed]https://www.youtube.com/watch?v=Oob0xAmxdb0[/embed]