বিয়ানীবাজারে নিত্যপণ্যের বাজারে কয়েকদফা অভিযান চালিয়েছে প্রশাসন। কেবলমাত্র ওই সময়ে পণ্যের দাম কিছুটা কমিয়ে দেন বিক্রেতারা। এরপর বাজারের অবস্থা হয়ে যায়, ‘যেই লাউ, সেই কদু’। প্রশাসনিক কর্মকর্তারা কিংবা ভ্রাম্যমান আদালত বাজার থেকে চলে যাওয়ার পর বিক্রেতারা আগের বাড়তি দামেই পণ্য বিক্রি শুরু করেন।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, বিয়ানীবাজারে প্রতিনিয়ত বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। সাধারণ মানুষের ধারণা ছিলো দেশের সরকার পরিবর্তন হলে নিত্যপণ্যের দাম কমবে। সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর থেকে বরং প্রতিনিয়ত বাড়ছে বাজার মূল্য। তবেই নিত্যপণ্যের অস্বস্তি আগের মতো রয়ে গেছে। পণ্যের দাম বাড়ছেই।ফলে স্বস্তি ফিরে আসেনি স্বল্প আয়ের মানুষের জীবনে। আলু-পেঁয়াজ-মরিচসহ অতি প্রয়োজনীয় জিনিসই এখন বছরের অন্য সময়ের চেয়ে বেশ চড়া। পেঁয়াজ-আলুর মতো অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমেনি। সবজি ও মুরগির দাম আগের তুলনায় বেড়েছে। বরং আরও অস্থিতিশীল হওয়ার কথা বলছেন খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতারা।
যা ২৬০ থেকে ২৭০ টাকা ছিল গেল সপ্তাহে। অন্যদিকে বাজারে বেশ কয়েক মাস ধরে চড়া রয়েছে আলু ও পেঁয়াজের দাম। বর্তমানে প্রতি কেজি আলু ৬০ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।আগের সপ্তাহের তুলনায় বেশ কিছু সবজির দাম কেজি প্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা করে বেড়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, টানা কয়েক দিন বৃষ্টির কারণে সবজির সরবরাহ কমেছে। এর প্রভাবে দাম বেড়েছে। পেঁপে ছাড়া বাজারে ৬০ টাকার নিচে কোনো সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। ৬০ থেকে ৭০ টাকায় শুধু পটোল মিলছে। ঢ্যাঁড়স, ধুন্দল, ঝিঙা, চিচিঙ্গা, কচুরমুখি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে। বরবটি, কাঁকরোল, করলা, বেগুন ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। এছাড়া বাজারে কাঁচামরিচের দাম বেশি। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া বাজারে আগাম শীতকালীন সবজি শিম বিক্রি হতে দেখা গেছে ২২০ থেকে ২৮০ টাকা ও ছোট ছোট ফুলকপি ৬০ থেকে ৮০ টাকা পিস।
বিয়ানীবাজার পৌরশহরের সবজি আড়তদার জিয়া উদ্দিন বলেন, ‘চাহিদার তুলনায় সবজির সরবরাহ কম। তার ওপর আমাদের ব্যাপারীরা বাড়তি দামে সবজি কিনে আনছে। তাই সহসাই পণ্যের দাম কমানো সম্ভব হবে না। পৌরশহরের মুদি ব্যবসায়ী শামীম আহমদ বলেন, বর্তমানে ভোজ্যতেল, চিনি ছাড়া অন্য সব পণ্যের দাম কমে এসেছে। তবে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বাড়তি দামে পণ্য বিক্রি করে।
সূত্র জানায়, নিত্যপণ্যের বাজার তদারকির জন্য গত ৭ অক্টোবর বিশেষ টাস্কফোর্স কমিটি গঠনের বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। এ ধারাবাহিকতায় বিয়ানীবাজার উপজেলাও কাজ শুরু করে প্রশাসন। খুচরা বাজার দিয়েই কমিটির সদস্যরা কাজ শুরু করেছে। পর্যায়ক্রমে সব বাজারে কার্যক্রম চলবে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক বিয়ানীবাজার উপজেলার সভাপতি এডভোকেট মো: আমান উদ্দিন বলেন, ‘সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ দুটি। প্রথমত, পুলিশ প্রশাসনকে পুরোদমে সচল করা, দ্বিতীয়ত ভোগ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আনা। ভোগ্যপণ্য কিনতে গেলে মানুষ হিমশিম খাচ্ছে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পণ্যসামগ্রী সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি করা, পণ্যের ক্রয় ও বিক্রয় রসিদ সংরক্ষণ ও সরবরাহের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অপরাধ প্রমাণিত হলে জরিমানা করা হচ্ছে। তা ছাড়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভাও করা হচ্ছে।
[youtube-feed feed=1]