১০:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বছরে বার লাখ নরমাল ডেলিভারি সম্ভব: জাহিদ মালেক

ইউনিয়ন মডেল কেন্দ্রে বছরে ১২ লাখ ডেলিভারি সম্ভব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

print news -

দেশে নবনির্মিত ৫০০ মডেল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের অধীনস্থ মডেল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রতিবছর বার লাখ প্রতিষ্ঠানিক ডেলিভারি করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন,স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এর মাধ্যমে মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার হ্রাস পাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।

মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে শেখ রাসেলের জম্মদিন উপলক্ষে পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরাধীন ৫০০টি মডেল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন, জাহিদ মালেক।

তিনি বলেন,জন্মের সময় অনেক শিশু মৃত্যুবরণ করে এবং অনেকে অসুস্থ অবস্থায় জন্মগ্রহণ করে। এটি যেনো না হয় সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের দেশে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব এখনও অনেক কম এটি বাড়াতে হবে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মাতৃসেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানগুলো আট ঘণ্টা কাজ করে। এভাবে সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব না। তাই আমারা সপ্তাহে সাতদিন ২৪ ঘণ্টা সেবা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যেন মায়েরা এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসে এবং সার্বক্ষণিক সেবা পায়। আমরা মোট ৫০০টি সেবা কেন্দ্রে এই সেবা চালু করেছি। এখানে পর্যাপ্ত জনবল, যন্ত্রপাতি দেওয়া হয়েছে।‍‍

এ উদ্যোগের লক্ষ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‍প্রতিবছর ১ লাখ শিশুর মৃত্যু হয়। মোট ডেলিভারির ৬০ শতাংশ সিজারিয়ান হয়, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে ১৫ শতাংশের বেশি হওয়ার কথা না। আমরা সিজারিয়ান কমিয়ে আনতে চাই। এর লক্ষ্যে আমরা এসব স্বাস্থ্য কেন্দ্র উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছি। এখন ৫০০ করেছি, সামনে আরও ৫০০ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এসব কেন্দ্রে বছরে ১২ লাখ সাধারণ ডেলিভারি করা সম্ভব। মোট ডেলিভারর ৫০ শতাংশ হাসপাতালে হয়, বাকিটা বাড়িতে। এটি প্রাতিষ্ঠানিক করতে হবে। এতে মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার কমবে। আমাদের যে পরিকল্পনা তা বাস্তবায়ন করতে পারলে ৯০ থেকে শতভাগ ডেলিভারি প্রাতিষ্ঠানিক হয়ে যাবে।‍‍ এ সময় বর্তমান সরকার শিশুদের স্বাস্থ্য ও অধিকারের বিষয়ে সোচ্চার বলে জানান জাহিদ মালেক।

তিনি আরও বলেন,মায়ের স্বাস্থ্যে নজর দিতে হবে। মা সুস্থ না থাকলে শিশু সুস্থ থাকবে না। আমাদের ব্রেস্টফিডিংয়ের হার বেড়েছে। এতে মা ও শিশু উভয়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। তাই এটি বৃদ্ধিতে সকলে ভূমিকা রাখতে হবে।‍‍

ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন,প্রত্যেক জেলায় ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যাচ্ছে। হাসপাতলে তিন হাজারের অধিক রোগী ভর্তি আছে। আমরা চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু রোগীর সংখ্যা না কমালে মৃত্যুর সংখ্যা কমানো কঠিন। তাই মানুষকে সচেতন হতে হবে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সিটি করপোরেশনের সাথে যৌথভাবে কাজ করছি। যেনো খুব শিগগিরই এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। এর বিকল্প নেই। যেসব এলাকায় মাশা বেশি সেসব এলাকায় স্থানীয় প্রশাসনকে একটিভ হতে হবে। যেনো মশা কমে আসে, আক্রান্তের সংখ্যা কমে আসে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যতটা সম্ভব সহযোগিতা করে যাবো।‍‍`

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন,নিরাপদ মাতৃত্ব আমাদের লক্ষ্য। শুধুমাত্র এসডিজি বাস্তবায়ন নয়, বাচ্চা জন্মদিতে গিয়ে একজন মা কেন মারা যাবে? মানবিক দিক থেকেই আমরা এটি বন্ধ করতে চাই। আমাদের অবকাঠামো আছে। এখন তা সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে।‍‍

উল্লেখ্য, দেশে প্রতিটি ইউনিয়নে প্রায় ২৫ হাজার থেকে ৩৫ হাজার জনসাধারণ বসবাস করে। বিশেষ করে সুবিধা বঞ্চিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠিই এখানে বাস করে। এ সব জনগোষ্ঠির মধ্যে মা নবজাতক ও শিশু মৃত্যু হার তুলনামূলক ভাবে বেশী। এ প্রেক্ষিতে, জনগণের দোর গোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে এবং সেবাকেন্দ্র হতে ২৪/৭ স্বাভাবিক প্রসবসেবা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরাধীন ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রতিটি উপজেলা হতে একটি করে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রকে মডেল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহন করেছে।

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরাধীন ৩৩৬৪ টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র হতে ৫০০ টি কেন্দ্রকে প্রাথমিক পর্যায়ে মডেল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে রুপান্তর করা হচ্ছে। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে সকল কেন্দ্রকে মডেল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে রুপান্তর করা হবে।

ট্যাগঃ
জনপ্রিয় সংবাদ

গাজীপুরে গ্যাস অগ্নিকাণ্ডে আরও তিনজনের মৃ ত্যু

স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বছরে বার লাখ নরমাল ডেলিভারি সম্ভব: জাহিদ মালেক

প্রকাশিত হয়েছেঃ ০১:৫১:৩৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ অক্টোবর ২০২২
print news -

দেশে নবনির্মিত ৫০০ মডেল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের অধীনস্থ মডেল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রতিবছর বার লাখ প্রতিষ্ঠানিক ডেলিভারি করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন,স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এর মাধ্যমে মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার হ্রাস পাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।

মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে শেখ রাসেলের জম্মদিন উপলক্ষে পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরাধীন ৫০০টি মডেল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন, জাহিদ মালেক।

তিনি বলেন,জন্মের সময় অনেক শিশু মৃত্যুবরণ করে এবং অনেকে অসুস্থ অবস্থায় জন্মগ্রহণ করে। এটি যেনো না হয় সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের দেশে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব এখনও অনেক কম এটি বাড়াতে হবে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মাতৃসেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানগুলো আট ঘণ্টা কাজ করে। এভাবে সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব না। তাই আমারা সপ্তাহে সাতদিন ২৪ ঘণ্টা সেবা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যেন মায়েরা এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসে এবং সার্বক্ষণিক সেবা পায়। আমরা মোট ৫০০টি সেবা কেন্দ্রে এই সেবা চালু করেছি। এখানে পর্যাপ্ত জনবল, যন্ত্রপাতি দেওয়া হয়েছে।‍‍

এ উদ্যোগের লক্ষ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‍প্রতিবছর ১ লাখ শিশুর মৃত্যু হয়। মোট ডেলিভারির ৬০ শতাংশ সিজারিয়ান হয়, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে ১৫ শতাংশের বেশি হওয়ার কথা না। আমরা সিজারিয়ান কমিয়ে আনতে চাই। এর লক্ষ্যে আমরা এসব স্বাস্থ্য কেন্দ্র উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছি। এখন ৫০০ করেছি, সামনে আরও ৫০০ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এসব কেন্দ্রে বছরে ১২ লাখ সাধারণ ডেলিভারি করা সম্ভব। মোট ডেলিভারর ৫০ শতাংশ হাসপাতালে হয়, বাকিটা বাড়িতে। এটি প্রাতিষ্ঠানিক করতে হবে। এতে মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার কমবে। আমাদের যে পরিকল্পনা তা বাস্তবায়ন করতে পারলে ৯০ থেকে শতভাগ ডেলিভারি প্রাতিষ্ঠানিক হয়ে যাবে।‍‍ এ সময় বর্তমান সরকার শিশুদের স্বাস্থ্য ও অধিকারের বিষয়ে সোচ্চার বলে জানান জাহিদ মালেক।

তিনি আরও বলেন,মায়ের স্বাস্থ্যে নজর দিতে হবে। মা সুস্থ না থাকলে শিশু সুস্থ থাকবে না। আমাদের ব্রেস্টফিডিংয়ের হার বেড়েছে। এতে মা ও শিশু উভয়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। তাই এটি বৃদ্ধিতে সকলে ভূমিকা রাখতে হবে।‍‍

ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন,প্রত্যেক জেলায় ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যাচ্ছে। হাসপাতলে তিন হাজারের অধিক রোগী ভর্তি আছে। আমরা চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু রোগীর সংখ্যা না কমালে মৃত্যুর সংখ্যা কমানো কঠিন। তাই মানুষকে সচেতন হতে হবে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সিটি করপোরেশনের সাথে যৌথভাবে কাজ করছি। যেনো খুব শিগগিরই এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। এর বিকল্প নেই। যেসব এলাকায় মাশা বেশি সেসব এলাকায় স্থানীয় প্রশাসনকে একটিভ হতে হবে। যেনো মশা কমে আসে, আক্রান্তের সংখ্যা কমে আসে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যতটা সম্ভব সহযোগিতা করে যাবো।‍‍`

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন,নিরাপদ মাতৃত্ব আমাদের লক্ষ্য। শুধুমাত্র এসডিজি বাস্তবায়ন নয়, বাচ্চা জন্মদিতে গিয়ে একজন মা কেন মারা যাবে? মানবিক দিক থেকেই আমরা এটি বন্ধ করতে চাই। আমাদের অবকাঠামো আছে। এখন তা সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে।‍‍

উল্লেখ্য, দেশে প্রতিটি ইউনিয়নে প্রায় ২৫ হাজার থেকে ৩৫ হাজার জনসাধারণ বসবাস করে। বিশেষ করে সুবিধা বঞ্চিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠিই এখানে বাস করে। এ সব জনগোষ্ঠির মধ্যে মা নবজাতক ও শিশু মৃত্যু হার তুলনামূলক ভাবে বেশী। এ প্রেক্ষিতে, জনগণের দোর গোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে এবং সেবাকেন্দ্র হতে ২৪/৭ স্বাভাবিক প্রসবসেবা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরাধীন ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রতিটি উপজেলা হতে একটি করে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রকে মডেল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহন করেছে।

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরাধীন ৩৩৬৪ টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র হতে ৫০০ টি কেন্দ্রকে প্রাথমিক পর্যায়ে মডেল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে রুপান্তর করা হচ্ছে। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে সকল কেন্দ্রকে মডেল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে রুপান্তর করা হবে।