সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিমের হত্যায় জড়িত সন্দেহে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। বকশীগঞ্জ থানার ওসি সোহেল রানা বলেন, “সিসি ক্যামেরার ভিডিও দেখে ঘটনায় জড়িত তিনজনকে আমরা চিহ্নিত করে আটক করেছি। বাকিদের খুব দ্রুত চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হব আশা করি।”
বুধবার রাত ১০টার দিকে বকশিগঞ্জের পাথাটিয়ায় ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের বুথের সামনে নাদিমের ওপর হামলা চালায় একদল অস্ত্রধারী। বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ৩টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মাথায় গুরুতর আঘাতে তার মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
গোলাম রাব্বানী নাদিম জামালপুরের বকশিগঞ্জ উপজেলার নিলাখিয়া ইউনিয়নের গোমের চর গ্রামের আবদুল করিমের ছেলে। তিনি বাংলা নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জালামপুর জেলা প্রতিনিধি ছিলেন।
পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে রাতে বাড়িতে ফেরার সময় ১০-১২ জন দুর্বৃত্ত গোলাম রব্বানীর ওপর হামলা করে। পরে স্থানীয় সাংবাদিক এবং পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। সেখান থেকে রাতেই তাকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেও অবস্থার অবনতি হওয়ায় বৃহস্পতিবার সকালে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক শফিকুল ইসলাম জানান, নাদিমের মাথার আঘাত খুব গুরুতর ছিল। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে। নিহতের স্ত্রী মনিরা বেগম বলেন, সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর সঙ্গে সংবাদ প্রকাশ নিয়ে ঝামেলা চলছিল নাদিমের। সেই ঘটনার জের ধরে আমার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।
নাদিমের ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন রিফাতের অভিযোগ, সংবাদ প্রকাশের জেরে বকশীগঞ্জ উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর লোকজন তার বাবার ওপর এ হামলা চালিয়েছে।
বকশীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহীন আল আমিন বলেন, সংবাদ প্রকাশের কারণে সাংবাদিক নাদিমকে প্রাণ দিতে হলো দুর্বৃত্তের কাছে। আমি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। অবিলম্বে দোষিদের উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।
ময়মনসিংহ সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আতাউল করিম খোকন বলেন, সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিক হত্যার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। বিষয়টি নিয়ে জেলার সাংবাদিকদের সঙ্গে বসে দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
জামালপুর জেলা পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ঘটনার পরপরেই সিসিটিভি দেখে আমরা তিনজনকে আটক করেছি। বাকিদের ধরতে পুলিশের পাঁচটি টিম আভিযান পরিচালনা শুরু করেছে। আশা করছি খুব শিগগিরই বাকি অন্যদেরকেও আটক করতে পারব।
এদিকে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু। তিনি বলেন, তার সঙ্গে সাংবাদিক গোলাম রব্বানি নাদিমের কোনো শত্রুতা নেই। এ হামলায় তার কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই।
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল পঞ্চবানী.কম এ লিখতে পারেন আপনিও। খবর, ফিচার, ভ্রমন, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি, খেলা-ধুলা। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন newsdeskpb@gmail.com ঠিকানায়।