ঢাকাবৃহস্পতিবার , ৩০শে নভেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. এক্সক্লুসিভ
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. ক্যাম্পাস
  7. খেলা
  8. চাকরি খবর
  9. জাতীয়
  10. টপ নিউজ
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. ধর্ম
  13. প্রবাস
  14. ফিচার
  15. বিনোদন

অর্শ বা পাইলস নিরাময়ে আধুনিক হোমিও চিকিৎসা

পঞ্চবাণী অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ডিসেম্বর ৫, ২০২২
Link Copied!

অর্শ বা পাইলস নিরাময়ে আধুনিক হোমিও চিকিৎসা

অর্শ বা পাইলস মলদ্বারের একটি জটিল রোগ। এ রোগে মলদ্বারের বাইরে বা ভেতরে, একপাশে বা চারপাশে, একটি বা একাধিক, গোলাকৃতি বা সুচাল গুটিকা দেখা দেয়। এ গুটিকাগুলোকে আমরা আঞ্চলিক ভাষায় ‘বলি’ বা ‘গেজ’ বলি। পায়খানা করার সময় এ বলিগুলো থেকে অভ্যন্তরীণ সমস্যার অনুপাতে কারো অধিক পরিমাণে, কারো স্বল্প পরিমাণে রক্ত যায়। আবার অনেকের রক্ত যায়ই না। অনেকের ব্যাথা থাকে অনেকের থাকেনা।

পাইলস বলতে আমরা বুঝি মলদ্বারের ভেতরে ফুলে ওঠা রক্তের শিরার একটি মাংসপিণ্ড। এরূপ রক্তের শিরার মাংসপিণ্ড বা ‘কুশন’ সব মানুষেরই রয়েছে। তাই প্রকৃত অর্থে পাইলস বা ‘হেমোরয়েড’ আমরা তখনই বলি যখন এটি কোনোরূপ উপসর্গ সৃষ্টি করছে। যেমন মলদ্বারের বাইরে ঝুলে পড়া মাংসপিণ্ড অথবা রক্ত যাওয়া।

অর্শের কারণ :-

ক. দীর্ঘমেয়াদী কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া।

খ. শরীরের অতিরিক্ত ওজন।

গ. মহিলাদের গর্ভাবস্থায় জরায়ুর ওপর চাপ পড়লে।

ঙ. লিভার সিরোসিস।

চ. মল ত্যাগে বেশী চাপ দেয়া

ছ. শাকসব্জী ও অন্যান্য আঁশযুক্ত খাবার এবং পানি কম খাওয়া।।

জ. পরিবারে কারও পাইলস থাকা মানে বংশগত।

ঝ. ভার উত্তোলন, দীর্ঘ সময় বসে থাকা ইত্যাদি কারনে হয়ে থাকে। তাছাড়া যাদের প্রায় চিকেন ফ্রাই, ড্রাই, ফাস্টফুড, সব ধরনের কাবাব যেমন- বাটি কাবাব, টিক্কা কাবাব, গ্রিল কাবাব, বিবিধ খাবারের অভ্যাস আছে।

লক্ষণসমূহ :-

  • পায়খানা করার সময় অত্যধিক বা অল্প পরিমাণে রক্ত যেতে পারে।
  • গুহ্য দ্বারে জ্বালাপোড়া এবং ফুলে যায়।
  • টাটানি ও যন্ত্রণা।
  • কাঁটাবিদ্ধ অনুভূতি।
  • মাথা ধরা ও মাথা ভার বোধ।
  • উরুদেশ, বক্ষ, নাভির চারপাশে ব্যথা ও মলদ্বারে ভার বোধ। • কোমর ধরা ও কোষ্ঠবদ্ধতা।

অর্শ বা পাইলস রোগে আক্রান্তদের করণীয় :-

১. কোষ্ঠকাঠিন্য যেন না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকা এবং নিয়মিত মলত্যাগ করা।

২. বেশী পরিমাণে শাকসবজী ও অন্যান্য আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া এবং পানি (প্রতিদিন ১২-১৮ গ্লাস) পান করা

৩. সহনীয় মাত্রার অধিক পরিশ্রম না করা

৪. প্রতিদিন ৬-৮ ঘন্টা ঘুমানো

৫. শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ করা

৬. টয়লেটে অধিক সময় ব্যয় না করা

৭. সহজে হজম হয় এমন খাবার গ্রহণ করা

৮. ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন চিকিৎসা গ্রহণ না করা।

৯. মল ত্যাগে বেশী চাপ না দেয়া

১০. দীর্ঘমেয়াদী ডায়রিয়া ও কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে তার চিকিৎসা নেয়া।

১১. চিকিৎসকের পরামর্শমতো বিশ্রাম নেয়া।

১৩. পেটে হজম হতে চায় না এমন খাদ্য বর্জন করা।

১৪. হাতুরে ডাক্তার বা কবিরাজ দিয়েচিকিৎসা না করা।

১৫. অধিক মশলা জাতীয় খাদ্য পরিহার করা।

কি খাব: শাকসবজি, ফলমূল, সব ধরণের ডাল, সালাদ, দধি, পনির, গাজর, মিষ্টি কুমড়া, লেবু ও এ জাতীয় টক ফল, পাকা পেপে, বেল, আপেল, কমলা, খেজুর, ডিম, মাছ, মুরগীর মাংস, ভূসিযুক্ত (ঢেঁকি ছাঁটা) চাল ও আটা ইত্যাদি খাবারের কিছুটা অভ্যাস গড়ে তুলতে পারি তাহলে কিছুটা প্রতিকার পেতে পারি। আর যাদের অর্শ হয়ে গেছে তারা এই খাবারগুলি অবশ্যই খাবারের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

কি খাবনা: গরু, খাসি ও অন্যান্য চর্বিযুক্ত খাবার, বিশেষ করে শুটকির ভুনা, চা, কফি, চীজ, মাখন, চকোলেট, আইসক্রীম, কোমল।

পানীয়, সব ধরণের ভাজা খাবার যেমনঃ পরোটা, লুচি, পুরি, পিঁয়াজি, সিঙ্গারা, চিপস ইত্যাদি এই খাবার গুলি বর্জন করতে হবে। চিকেন ফ্রাই, ড্রাই, ফাস্টফুড, সব ধরনের কাবাব যেমন- বাটি কাবাব, টিক্কা কাবাব, গ্রিল কাবাব, অতিরিক্ত ঝাল, ভুনা খাবার, কাঁচা লবণ, দেশী বিদেশী হরেক রকমের বাহারি নামের অস্বাস্থ্যকর খাবার গুলি বর্জন করতে হবে।

অর্শ বা পাইলস রোগের চিকিৎসাঃ এই অর্শ রোগীদের নিয়ে আছে অনেক কবিরাজি, হেকিমি, তাবিজ, মানে চিকিৎসা নামে অনেক অপচিকিৎসা। এই বিষয়ে একটু সচেতন হয়ে আমাদের চলতে হবে। বিজ্ঞান ও বাস্তব সম্মত চিকিৎসা বিধান হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় রয়েছে এর সুন্দর ও স্বাস্থ্য সম্মত চিকিৎসা। যা কোন অপারেশনের প্রয়োজন হয়না। আমার চিকিৎসা জীবনে দেখেছি অনেকেই অপারেশন করেছে কিন্তু কিছুদিন পর আবার দেখা দিয়েছে। আবার অনেকের দেখেছি জটিল আকার ধারণ করতে।

তাই বলব একটু চোখ কান খোলা রেখে একজন অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের পরামর্শ নিন সুস্থ থাকবেন। মনে ররাখবেন, অর্শ এমন একটি রোগ যা বারবার অপারেশন করা যায়না। কিছু অভ্যাস চেঞ্জ ও কিছু নিয়ম পালন করলে অবশ্যই এ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।

অর্শ রোগের হোমিও ঔষধ :

আপনারা নিশ্চই জানেন হোমিও প্যাথি কোন রোগের চিকিৎসা করে না, রোগীর চিকিৎসা করে। সুতরাং লক্ষন অনুয়ায়ী চিকিৎসা নিলে রোগীর আরোগ্য লাভ করবে এটা নিশ্চিত। জার্মানী হোমিও রিচার্স সেন্টার এবং জার্মানীর হোমিও রিচার্স  ইনস্টিটিউট থেকে পরীক্ষিত একটি আদর্শ ১০০% গ্যারাস্টি দিয়ে ঔষদটি ব্যবহৃত হচ্ছে। যাহা ১০০% মুক্তি দিবে। Aesculas Pentarkan ptk.3, Bioplasgen no 17 অবশ্যই জার্মানী ঔষদ ব্যবহার করতে হবে। অর্শ বা পাইলস

যে কোন হোমিও ফার্মেসী থেকে ঔষদটি সংগ্রহ করে ব্যবহার করুন আশানুরুপ ফল পাবেন। এই ঔষদ দিয়ে আমি অনেক অর্শ রোগী ভালো করেছি। এমনকি ২/৩ বার অপারেশন করা রোগীও এই ঔষদে ভালো হয়েছে। খাওয়ার নিয়ম: এস্কুলাস- ১০ ফুটা করে রোজ ৩ বার এক কাপ পানির  সাথে সেবন করবেন। বায়োপ্লাজেন ১৭ ৪ টা করে বড়ি রোজ ৩ বার সেবন করবেন।

তাছাড়াও লক্ষন ভেদে নিচের ঔষদ গুলো  ব্যাবহার করতে পারেন: আরো পড়ুন: চিয়া সিড এর উপকারিতা ও অপকারীতা

নাক্স ভম (Nux vom)– নাক্স ভম কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে সহায়তা করে। খাওয়ার এক ঘন্টা পরে পেটের ভারী ভারী অবস্থা দেখা দেয়। মল জন্য অকার্যকর বাসনা সঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্য। গলায় খাদ্যদ্রব্য জমে যাওয়ার অনুভূতি সহ বুক জ্বলন। ব্যক্তিটি নার্ভাস ইরিটেটেবল হাইপোকন্ড্রিয়াক এবং রোষাক্রান্ত প্রকৃতির। তৈলাক্ত সমৃদ্ধ খাবার বা জাঙ্ক ফাস্ট ফুড খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে যা তাদের সমস্ত লক্ষণ বিকাশের কারণ হয়।

অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস বা ত্রুটিযুক্ত জীবনযাত্রার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য বা অনিয়মিত অন্ত্র অভ্যাস নিরাময়ের জন্য পাইলস বা অর্শ এর  মধ্যে এটি অন্যতম কার্যকর ওষুধ।

ব্রায়োনিয়া (Bryonia) – কোষ্ঠকাঠিন্যে পরামর্শ দেওয়া হয় যদি মল খুব শক্ত হয় এবং মল পাস করার সময় ব্যক্তি আরও স্ট্রেন দেয়। মল কঠোর পাশাপাশি কালো রঙ এবং পাস করা শক্ত। বেশি জল নেওয়ার প্রবণতা রয়েছে কারণ ব্যক্তিটি সর্বদা তৃষ্ণার্ত বোধ করে।

লাইকোপোডিয়াম (Lycopodium) – অতিরিক্ত পেট ফাঁপা সমস্যাযুক্ত ব্যক্তি। পেটে গুড়গুড় বা কাঁপুনি দিয়ে শব্দে পেটে ফুলে উঠা সংবেদন রয়েছে। পেটের ভারী ভারী অবস্থা সাধারণত বিকেলে হয়। ভাল খিদে আছে তবে অল্প খাবারই তাকে পেট ভরে দেয়। মুখের মধ্যে একটি টক স্বাদ সহ বুক এবং টক জাতীয় জ্বলন রয়েছে

কার্বো ভেজি (Carboveg) – পেটের ফোলা সংবেদন সহ পেট ফাঁপা আছে। আরও অনেক বেশি বিড়বিড় হয় এবং তার পরে ব্যক্তি স্বস্তি বোধ করে। এত বেশি পেট ফাঁপা হওয়ার প্রবণতা যে সে খায় তা সবকিছুই গ্যাসে রূপান্তরিত করে। সাধারণত পেটের উপরের পেটের ভারী ভারী অবস্থা থাকে।

অ্যানাকার্ডিয়াম (Anacardium) – খালি পেটে ব্যথার সাথে কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রবণতা রয়েছে। যখন ব্যক্তি খালি পেটে থাকে তখন মাথাব্যথার অনুভূতি হয়। খাবার গ্রহণ মাথা ব্যথা এবং পেটের ব্যথা থেকে মুক্তি দেয়। ব্যক্তির ভুলে যাওয়া এবং স্বল্প আত্মবিশ্বাসের প্রবণতা রয়েছে। এই লক্ষণগুলি যদি কোনও ব্যক্তির মধ্যে উপস্থিত থাকে তবে অ্যানাকার্ডিয়াম একটি উপযুক্ত প্রতিকার

সালফার (Sulphur) – মলের পরে মলদ্বারের জ্বলন সংবেদন হয়। সবসময় মলদ্বার চুলকানি থাকে। বিছানা থেকে উঠার ঠিক পরে লোকটির খুব ভোরে মলের ঝোঁক থাকে। অল্প আওয়াজে ঘুম ভাঙার অভ্যাস রয়েছে। অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন নিয়ে ব্যক্তি প্রকৃতি সম্পর্কে ঘাবড়ে যায়।

এস্কুলাস (Aesculus) – মলদ্বারে জ্বলন এবং সেলাইয়ের মতো ব্যথা মল পরে দীর্ঘ ঘন্টা অবধি থাকে। মলদ্বার চুলকানি আছে। পাইলস বা অর্শ এর  প্রদাহের কারণে মলদ্বারের ভিতরে কিছু আটকে যাওয়ার অনুভূতি। কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রবণতা রয়েছে। স্তূপের সমস্যাটি একটি ব্যাক ব্যথার সাথে জড়িত।

চেম্বার: জনসেবা হোমিও ফার্মেসী,

সোনালী ব্যাংকের নিচে, বৈরাগীবাজার

,বিয়ানীবাজার, সিলেট।

ডা: স্বপন চন্দ্র দাস, ডিএইচএমএস(ঢাকা),

ডা: গোপাল চন্দ্র দাস(ডিএইচএমএস(ঢাকা),

মোবাইল: ০১৭১৩৮০০৭৭৩, ০১৭১২৩৩০৭০৯।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল পঞ্চবানী.কম এ  লিখতে পারেন আপনিও। খবর, ফিচার, ভ্রমন, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি, খেলা-ধুলা। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন   newsdeskpb@gmail.com   ঠিকানায়।